রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ , ৪ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আনারসে ফিরছে সুদিন

আনারসে ফিরছে সুদিন

ভাসমান বাজারে আনারস


এক সময় পাহাড়ের টিলা ভূমিতে জুম চাষ করতেন চাষিরা। জুম নিয়েই থাকতেন ব্যস্ত। তবে সেই টিলাতে এখন চাষ হচ্ছে আগাম আনারস। এতে অধিক লাভের মুখ দেখছেন তারা। টিলা ভূমিতে চাষ করা আনারস রসাল ও সুমিষ্ট হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে সমতলে। শহরের মানুষের কাছেও আগাম আনারস বেশ জনপ্রিয়।

জানা গেছে, পাহাড়ি জেলাগুলোতে আনারসের মৌসুম ছাড়াই কয়েক বছর ধরে আগাম ফলনের আনারস চাষ হচ্ছে। এতে মৌসুমে উৎপাদিত আনারসের থেকে আগাম আনারসে বাড়তি লাভ করছেন চাষিরা। তবে মৌসুমে চাষ করলে অনেকেরই লোকসান হয়। তাই চাষিরা আগাম আনারস চাষে ঝুঁকছেন।

মহালছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয়ভাবে খুচরা বাজারে প্রতি জোড়া মাঝারি আকারের আনারস ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের আনারসের জোড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

মহালছড়ির মধ্য আদাম গ্রামের চাষি সুলক্ষণ চাকমা বলেন, আগাম ১৬ হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছি। এর মধ্যে প্রায় ১৪ হাজারের বেশি ফল পেয়েছি। এ আনারসগুলো রসাল এবং সুস্বাদু হওয়ায় বাগান থেকেই ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। তারা এসব আনারস ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে নেন।

তিনি বলেন, আগাম আনারস চাষে খরচ অনেক বেশি। প্রতিটি আনারস ১৪-২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।

আনারস চাষি রিপন চাকমা বলেন, এ এলাকায় এখন অনেকেই আগাম আনারসের চাষ শুরু করেছেন। আগাম ফল এলে ভালো লাভে বিক্রি করা যায়। সমতলের বিভিন্ন হাট-বাজারে এ আনারসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে কিনে নিয়ে যান। এতে চাষিদের কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয় না।

 

ট্রাকে আনারস লোড করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয়

 

নোয়াখালী থেকে আসা পাইকারি তাজুল ইসলাম বলেন, আমি মহালছড়িতে এসে মৌসুমি ফল নিয়ে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। বাগান থেকে কেনার কারণে একটু কম দামে কিনতে পারি। মৌসুমে প্রতিটি আনারস ৪-৫ টাকায় কিনলেও এখন কিনতে হচ্ছে ১৪-২০ টাকায়।

শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, পাইকাররা কিনে নেয়ার সময় আমরা বাগানের আনারসগুলো ট্রাকে উঠানোর কাজ করি। এরপর ট্রাকে করে আনারসগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেয়া হয়। শুধু আনারসই নয়, পাহাড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন মৌসুমি ফল লোড-আনলোডের কাজে আমরা জড়িত।

শ্রমিক মো. রশিদ বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ কাজ করি। ১০০টি আনারস গাড়িতে লোড করে ৪০ টাকা পাই। সারাদিনে ১০ থেকে ১২ গাড়ি লোড করতে পারি। প্রতি গাড়িতে চার-সাত হাজার আনারস লোড করা যায়।

আনারস বাগানে কাজ করা মো. শফিকুল বলেন, পাহাড়ে আগাম আনারসের চাষ বেড়ে গেছে। ফলে আমাদের কাজের তেমন বেশি সমস্যা হয় না। প্রায় প্রতিদিনই বাগানে কাজ থাকে। এতে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভালোভাবে দিন কাটাতে পারছি।

মহালছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল জব্বার বলেন, আগাম আনারস চাষে ভালো লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। পাইকারদের কাছে তারা এখন ১৪-২০ টাকা দরে আনারস বিক্রি করছেন। পাইকাররা বাইরে নিয়ে সেই আনারস ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এখানকার আনারস এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে।

আলোকিত রাঙামাটি