রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:০৩, ৮ এপ্রিল ২০২০

আমাদের সচেতনতাবোধ জাগ্রত হোক

আমাদের সচেতনতাবোধ জাগ্রত হোক

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশটাও বর্তমানে অতিক্রান্তিকালের মধ্য দিয়েই চলছে। দেশে হাট-বাজার, রাস্তাঘাট, যানবাহন, শিল্পকারখানা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়—সবই রয়েছে বন্ধ। মানুষের জীবনযাত্রা চলছে এক ভিন্নধর্মী বাঁকে। সবাইকেই হতে হচ্ছে গৃহবন্দি। দেশের এই বিপর্যয়কালে সমাজের উচ্চবিত্তরা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারলেও মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির অবস্থাটা খুবই করুণ। রোজগারের আশায় ঘরের বাইরে বের হওয়ার সুযোগ নেই তাদের কারোরই। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে। অন্যদিকে দেশের এই সংকটকালীন অবস্থাকে কেন্দ্র করে চলছে বিভিন্ন ধরনের গুজবের ছড়াছড়ি। জনসাধারণের মধ্যে বিরাজ করছে একটা অনুচ্চার্য ভয়। সব মিলিয়ে সারাদেশে চলছে মোটামোটি একটা অসহনীয় অবস্থা। ক্রান্তিকালের এই পরিসমাপ্তিটাই যেন আজ আমাদের সবার একমাত্র প্রত্যাশা!

বিধ্বংসী এই ক্ষুদ্র ভাইরাসের বাস যেহেতু আমাদের মানবশরীরটাকেই কেন্দ্র করে, সেহেতু ভাইরাসটির বিনাশ হতে পারে কেবল আমাদের মধ্য দিয়েই। আমরা যদি আমাদের সচেতনতাবোধের মধ্য দিয়ে নিজেদের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রামণ টেকাতে পারি, রাখতে পারি নিজেদের সংক্রামণ থেকে শতভাগ নিরাপদ; তবেই হয়তো ভাইরাসটি দেহশূন্য হয়ে হতে পারে অঙ্কুরে বিনষ্ট! ভাইরাসটির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য যেহেতু হচ্ছে অতিদ্রুত সংক্রমিত হওয়া, সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যক্তিচিত্তের সচেতনতাবোধটাই পারে দেশে ভাইরাসটির ব্যাপক সংক্রমণ টেকাতে। আমাদের সবার বিষয়টা মাথায় রাখা প্রয়োজন যে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যাবহুল একটি দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ বয়ে আনতে পারে করুণ ট্র্যাজেডি। একবার যদি দুর্ভাগ্যবশত দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর ভেতরে ভাইরাসটির ব্যাপক সংক্রমণ ঘটে, তাহলে শিগিগরই গোটা জাতির অপ্রত্যাশিত ভাগ্য বিপর্যয় নিশ্চিত!

কিন্তু আমরা কি আমাদের দুঃস্বপ্নেও চাই এই সোনার বাংলা হোক মৃত্যুপুরী! ঘরে ঘরে চলুক প্রাণনাশের বিরামহীন ক্রন্দন? না, আমাদের সচেতনতাবোধটাই পারে আমাদের বাঁচাতে, রাখতে পারে এই দেশকে করোনা থেকে নিরাপদ।

আজ আমাদের সবার সব থেকে বড়ো চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে ভাইরাসটির বিধ্বংসী লীলা পর্যুদস্ত করে আবারও জনজীবনে স্বাভাবিকতা আনয়ন করা। অতিদ্রুত এই ক্রান্তিলগ্নের পরিসমাপ্তি হোক, সেই তো সবার প্রতীক্ষা! আর প্রতীক্ষার সেই প্রহরের অবসান ঘটিয়ে একটা নতুন সকালের উন্মোচন হতে পারে কেবল আমাদের সবার সামগ্রিক সচেতনতাবোধে ও শুভ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই। সেজন্য আমাদের জীবনযাত্রায় নিয়ে আসা দরকার কঠোরও শৃঙ্খলা। নিয়ম মাফিক চলাটা জরুরি এখন আমাদের সবারই। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আমাদের চিকিত্সকেরা মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। হাঁচি-কাশিতে টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার অথবা এর অবর্তমানে পোশাকের অংশবিশেষ ব্যবহার করারও নির্দেশ রয়েছে চিকিত্সকদের। যেহেতু রোগীর সংস্পর্শ ও সংসর্গ থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে, তাই অভিবাদনের জন্য সাধারণ হাত মেলানো ও কোলাকুলি থেকে দূরে থাকার কথাও এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে। পাশাপাশি ভিড় বা গণজমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে এবং জনসাধারণের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ও লকডাউন বিধি স্বেচ্ছায় পালন করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, আপনার ভাইরাস সংক্রমণ অন্যদের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সুতরাং নিজে সুস্থ থাকুন এবং অন্যদের সুস্থ রাখতে সচেষ্ট হোন!

লেখক :শিক্ষার্থী :শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক

আলোকিত রাঙামাটি