রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৪ মে ২০২০

খোঁজ রাখছেন শেখ হাসিনা

এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ

এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ

দেশের এই করোনাভাইরাসের দুর্যোগের সময় এগিয়ে চলছে বহুল প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। একদিনের জন্য বন্ধ হয়নি এই সেতুর নির্মাণ কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিনই খোঁজ খবর নিচ্ছেন এই সেতুর কাজ কতটুকু এগিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ২৯তম স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ৪৫০ মিটার। সকালে মাওয়া অংশের ১৯ ও ২০তম খুঁটির উপর বসিয়ে দেয় হয় ‘৪এ’ নম্বর স্প্যানটি। ১৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ৩১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি বসিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের এই সেতু অগ্রগতির আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।

স্বপ্নের পথে বাংলাদেশ
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, সকাল থেকেই স্প্যানটি পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এরপর খুটির উপর তুলে দেয়া হয়। যখন খুঁটিতে পুরো পুরে স্প্যানটি সেট হয়ে যায়, তখন ঘড়ির কাটায় পৌনে ১১টা।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এর আগে রবিবার সকাল ৮টার দিকে স্প্যানটিকে মাওয়ার কাছে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনে করে নিয়ে আসা হয়। রাখা হয় খঁটির সামনে। সোমবার সকাল ৭টা থেকেই স্প্যানটিকে পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু হবে।

মরণব্যাধি করোনা যেন এখানে বাদসাধতে পারেনি। সোমবার ২৯তম স্প্যান স্থাপন ছাড়াও করোনার মধ্যেই গত ২৮ মার্চ সেতুর ২৭তম স্প্যান এবং ১২ এপ্রিল ২৮তম স্প্যান খুঁটিতে উঠেছে। এরপর ৩১ মার্চ ২৬ নম্বর খুঁটি বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর সব খুঁটি সম্পন্ন হয়ে গেছে। ভিত সম্পন্ন হয়ে এবং অনবরত স্প্যান বসে যাওয়ায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে বড় ধাপগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া চলতি মাসেই ৩০তম স্প্যানও বসে যাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বসে যাওয়া স্প্যানগুলোতে হরদম কাজ চলছে। এখানে এখনও দেশী বিদেশী প্রায় দুই হাজার কর্মী কাজ করছে এখানে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’।

বদলে যাবে বাংলাদেশ

পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হলে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে এটি। বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন হবে পদ্মা সেতু প্রকল্প। এ প্রকল্পের কারণে স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এ অঞ্চলকে ঘিরে আলাদা একটি টাউনশিপ গড়ে তোলা হবে। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হবে দক্ষিণবঙ্গের। পদ্মা সেতু এখন স্বপ্নের খোলস থেকে বেরিয়ে কাগজ-কলমের বন্দীদশা কাটিয়ে রূপ নিয়েছে দৃশ্যমান বাস্তবতায়। এ সেতুটি পৃথিবীর অন্যতম একটি সেতু হিসেবেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে স্থাপন করতে যাচ্ছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। কনক্রিট আর স্টিলের নিখুঁত গাঁথুনিতে তৈরি হতে যাচ্ছে বিশ্বের অতুলনীয় এ দোতলা সেতু। হাজার হাজার শ্রমিক আর প্রকৌশলীর অক্লান্ত পরিশ্রমে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে সেতুর মূল নির্মাণকাজ।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়