রাঙামাটি । শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:১২, ২৭ অক্টোবর ২০২০

খোলাবাজারে পণ্য বাড়াচ্ছে সরকার

খোলাবাজারে পণ্য বাড়াচ্ছে সরকার

দেড় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন। স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হচ্ছে ১০ হাজার টন ভোজ্যতেল, সাত হাজার টন চিনি ও তিন হাজার টন মসুর ডাল।


খোলাবাজারে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, চিনি ও মশুরডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের বিক্রি কার্যক্রম আরও বাড়াচ্ছে সরকার।

বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে এসব পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই উদ্দেশ্য টিসিবি দেড় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করছে। স্থানীয়ভাবে ১০ হাজার টন ভোজ্যতেল, সাত হাজার টন চিনি ও তিন হাজার টন মশুরডাল কেনার প্রস্তুতি শেষ করেছে।

গত সপ্তাহে টিসিবির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিয়ে এসব পণ্য কেনায় সহযোগিতা দিতে সোনালী ব্যাংককে এলটিআর গ্যারান্টার হতেও অনুরোধ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে টিসিবির মুখ্য কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুইভাবে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। বেসরকারি খাতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে আমদানির দায়িত্ব দেয়ার পাশাপাশি টিসিবি নিজেও এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। তবে পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য পণ্য স্থানীয় উৎপাদক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হবে।’

বর্তমানে সরকার টিসিবির মাধ্যমে যে পরিমাণ নিত্যপণ্য বিক্রি করে তাতে বাজার মূল্যে খুব একটা প্রভাব পড়ে না।

সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগ ক্রেতা পর্যায়ে দাম সহনীয় রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিক্রি বাড়ালে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।

 

ছবি: সাইফুল ইসলাম


নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সরকার বাজারে ন্যূনতম পর্যায়ে হস্তক্ষেপ করে থাকে। অন্যদিকে দেশে ভোক্তা চাহিদার ৯৭ শতাংশ পণ্যই সাধারণত বেসরকারি খাত থেকে সরবরাহ করা হয়। টিসিবির সরবরাহ মাত্র তিন শতাংশ।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবে। সরকার ব্যবসার উপযুক্ত পরিবেশ দেবে। তবে জনকল্যাণেও সরকারকে অনেক রকম পদক্ষেপ নিতে হয়। ক্রেতা পর্যায়ে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখাও সরকারের কাজ।’

সব নিত্যপণ্যেরই দেশে নিরাপদ মজুদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায় মুনাফা থাকবে। সেটি হওয়া উচিত যৌক্তিক মুনাফা। ক্রেতাকে জিম্মি করে কাউকে সরকার অস্বাভাবিক মুনাফা করতে দেবে না। সরবরাহ ঠিক রাখতে কঠোর মনিটরিংয়ের পাশাপাশি দাম নাগালে রাখতে টিসিবির মাধ্যমেও খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।’

করোনাকালে মানুষের আয় কমে গেলেও বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। টিসিবি ট্রাকে করে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করলেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। কারণ, প্রতিদিন যে পরিমাণ পণ্য বিক্রি হয়, সেটি চাহিদার তুলনায় একেবারেই কম।

দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। এর বিপরীতে টিসিবি দেড় লাখ টন বিক্রি করলে বাজার চাহিদার ৬ শতাংশ মেটাতে পারবে তারা।

তবে এই উদ্যোগের পরেও ভোজ্যতেলের বাজারে টিসিবির অবদান কমই থাকবে। ২০ লাখ টন চাহিদার মধ্যে টিসিবি সরবরাহ হবে ০.৫০ শতাংশ মাত্র।

চিনির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই নিত্যপণ্যটির বার্ষিক চাহিদা ১৮ লাখ টন। এর মাত্র ০.৩৯ শতাংশ মেটাতে পারবে টিসিবি।

মসুর ডালের ক্ষেত্রেও টিসিবির বাজার অংশীদারত্ব তলানিতেই থাকবে। চাহিদা পাঁচ লাখ টনের মধ্যে সরকারি সংস্থাটির সরবরাহ ০.৬ শতাংশ থাকবে।

বর্তমানে খোলাবাজারে পেঁয়াজ ৩০ টাকায়, চিনি ৫০ ও মশুরডাল ৫০ টাকায় আর প্রতি লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন) ৮০ টাকায় বিক্রি করছে টিসিবি।

দেশব্যাপী ২৭৭ জন নিজস্ব ডিলারের মাধ্যমে টিসিবির এসব পণ্য বিক্রি করে। ঢাকায় ৪০টি, চট্টগ্রামে ১০টি, রংপুরে সাতটি, ময়মনসিংহে পাঁচটি, রাজশাহীতে পাঁচটি, খুলনায় সাতটি, বরিশালে পাঁচটি, সিলেটে পাঁচটি, বগুড়ায় পাঁচটি, কুমিল্লায় পাঁচটি, ঝিনাইদহে তিনটি ও মাদারীপুরে তিনটি করে মোট ১০০টি স্থানে ট্র্যাকের মাধ্যমে এসব পণ্য ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করা হয়।

অন্যান্য জেলার প্রতিটিতে দুটি করে ১০৪টি এবং আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতাভুক্ত উপজেলায় আরও পাঁচটি করে মোট ৬০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

এর বাইরে বন্যাকবলিত জেলা হিসাবে ময়মনসিংহে চারটি, রংপুরে চারটি, বগুড়ায় তিনটি, মাদারীপুরে অতিরিক্ত দুটি করে ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

রমজানে এই কার্যক্রমে ছোলা ও খেজুর যুক্ত হয়। আর দেশে প্রথমবারের মতো এবার টিসিবির বিক্রয় প্রক্রিয়ায় যোগ হয়েছে আলু। যা এখন প্রতিকেজি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সূত্রঃ newsbangla24

আলোকিত রাঙামাটি