রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ১৬ মে ২০২০

বিভিন্ন স্থানে ধান কেনা শুরু

বিভিন্ন স্থানে ধান কেনা শুরু

ছবি- সংগৃহীত


করোনা পরবর্তী সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। খাদ্যের যাতে কোনো সঙ্কট না হয় সেজন্য সরকারি গুদামেও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে খাদ্য সরকার মজুত করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের কাছ থেকে সরকার সরাসরি ধান কেনা শুরু করেছে। সরকার এবার পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত চার লাখ মেট্রিকটন ধান ও দুই লাখ মেট্রিকটন চাল দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস হতে সংগ্রহ করবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জাতিসংঘ এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বড় আকারের দুর্ভিক্ষ হতে পারে এবং এতে প্রায় তিন কোটি মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাতে পারে। তবে এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে খাদ্যশস্য নিয়ে আপাতত চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, দেশে করোনায় সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে। অসহায় মানুষদের খাদ্যা সহায়তা নিশ্চিত করতে মজুত বাড়ানো হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ধান-চাল কেনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সারাদেশে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। ধান কেনায় যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, সেজন্য কর্মকর্তাদের কড়া দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চলতি বোরো মৌসুমে সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ মেট্রিক টন ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং ২৮ টাকা কেজি দরে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন গম কিনবে সরকার।

দেশে বোরো ধানের বৃহৎ উৎপাদনস্থল হাওরাঞ্চলের ধান কাটা প্রায় শেষ। সে অঞ্চলে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়েছে। হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের নেত্রকোণা জেলা সংবাদদাতা এম আব্দুল্লাহ জানান, জেলার মোহনগঞ্জ, মদন এবং খালিয়াজুড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকদের তালিকা চ‚ড়ান্ত করে ধান কেনা শুরু হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাতে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সুনামগঞ্জ জেলার সংবাদদাতা হাসান চৌধুরী জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকদের তালিকা চ‚ড়ান্ত করে ধান কেনা শুরু হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জেলাতেও সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়েছে। আমাদের বগুড়া ব্যুরো জানায়, এবার মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করে কৃষক নিবন্ধন করা হয়েছে। বগুড়া সদর ,নন্দীগ্রাম ও গাবতলী উপজেলায় বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ফেনীতে ২৬ টাকা কেজি দরে সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। গত ১২ মে জেলা খাদ্য গুদামে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা শ্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ১৪ মে সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং করোনা সময়কালে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ লাখ মেট্রিক টন ধানসহ অন্যান্য খাদ্যশস্য কিনবে সরকার। এ কার্যক্রমকে সূচারুরূপে সম্পাদনের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে ধান বিক্রয়কারী কৃষকের তালিকা তৈরি করে তা খাদ্য বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ধান কেনা শুরু হয়েছে।

এদিকে গত ১২ মে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে দুই লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের জন্য চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ৭২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত হতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চাল ক্রয় খাতে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ বলেন, দেশের আপদকালীন সময়ের জন্য সরকার খাদ্যশস্য মজুত করে রাখে। যখন নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠি কোনো আপদকালীন সময়ে সমস্যায় পড়ে যায় মূলত সে সময় তাদের সহযোগিতার জন্যই সরকার খাদ্যশস্য মজুত রাখে। এবার একটু বেশি বেশি পরিমাণ ধান চাল ক্রয় করা হচ্ছে, কারণ কৃষক যাতে নায্যমূল্য পায় পাশাপশি করোনাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেন কোনো ধরনের খদ্য সঙ্কট না হয়।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়