রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৫ এপ্রিল ২০২১

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

ম্যালেরিয়া দিবস আজ। ছবি: সংগৃহীত


২৫ এপ্রিল, বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ। ২০০১ সালের আজকের এই দিনে প্রথম ম্যালেরিয়া দিবস পালন করা হয় আফ্রিকায়। এরপর ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হয়।

উইকিপিডিয়ায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী: ম্যালেরিয়া শব্দের অর্থ দূষিত বাতাস। ম্যালেরিয়া হলো মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের একটি মশা-বাহিত সংক্রামক রোগ। যার মূলে রয়েছে প্লাজমোডিয়াম গোত্রের প্রোটিস্টা (এক ধরনের অণুজীব) । ১৭৫৩ সালে ম‍্যালেরিয়া শব্দটি সর্বপ্রথম ব‍্যবহার করেন টর্টি। ইতালিয় শব্দ ম্যাল(অর্থ-দূষিত) ও এরিয়া(অর্থ-বায়ু) হতে ম্যালেরিয়া শব্দটি এসেছে। তখন মানুষ মনে করতো দূষিত বায়ু সেবনে এ রোগ হয়।

প্রাচীন গ্রীসের ফিজিসিয়ান হিপোক্রেটিস, যাকে 'ওষুধের জনক' বলা হয়। তিনি প্রথম এই রোগের লক্ষণসমুহের বর্ণনা দেন। তাছাড়া বছরের কোন সময় এটা হয় ও কোন জায়গায় রোগীরা বাস করে সেই তথ্যের সঙ্গে একটা সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন।

ম্যালেরিয়ার প্রথম নথীবদ্ধ চিকিৎসা পদ্ধতির সময়কাল ১৬০০ সাল, যখন পেরুর আদিবাসীর চিনচোনা গাছের তিক্ত ছাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করত। ১৬৪৯ সাল নাগাদ ইংল্যান্ডে এটাই 'জেসুইট পাওডার' হিসেবে পাওয়া যেত।

১৮৮০ সাল নাগাদ চার্লস ল্যাভেরন লোহিত রক্ত কণিকা থেকে ম্যালেরিয়ার কারণ হিসেবে একটিমাত্র কোষবিশিষ্ট পরজীবী প্রোটোজোয়াকে চিহ্নিত করেন। ফলে শত বছর ধরে চলা দূষিত বায়ু সেবনের ফলে রোগ সৃষ্টির ভুল ধারণার অবসান ঘটে। ১৮৯৭ সালে ভারতে কর্মরত ব্রিটিশ ডাক্তার স‍্যার রোনাল্ড রস প্রমাণ করেন যে Anopheles (অ্যানোফিলিস) মশা এই রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। এ যুগান্তকারী আবিষ্কারের কারণে তাকে ১৯০২ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।

এটি একটি সংক্রমিত স্ত্রী মশার (আনোফেলিস মশা) কামড়ের সঙ্গে শুরু হয়, যা তার লালার মাধ্যমে প্রোটিস্টর সংবহন তন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে এবং শেষে যকৃতে পৌছায়, যেখানে তারা পরিপক্ক হয় এবং বংশবৃদ্ধি করে। ম্যালেরিয়ার সাধারণ রোগের লক্ষণসমূহ হলো- প্রথম দিকে মাথাধরা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। 

দ্বিতীয় পর্যায়ে রোগীর শীত শীত অনুভূত হয় এবং কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। জ্বর ১০৫ ডিগ্রী থেকে ১০৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পর জ্বর কমে যায়। পরে আবার আসে। ৪৮ ঘণ্টা পর পর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স দ্বারা সৃষ্ট ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ। 

তৃতীয় পর্যায়ে রোগীর দেহে জীবাণুর সংখ্যা অসম্ভব ভাবে বেড়ে গেলে দ্রুত রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা ভাঙতে থাকে, ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। যকৃত বড় হয় ও সংক্রমিত হয়। প্লীহা, মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে।

বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে দক্ষিণ এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগের মারাত্মক প্রদুর্ভাব রয়েছে। এর মধ্যে পার্বত্য রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি ম্যালেরিয়াপ্রবণ এবং কক্সবাজার মধ্য ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। তবে আগের তুলনায় এসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রভাব অনেকটা কম এখন।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ