রাঙামাটি । শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১০:০০, ১৬ জানুয়ারি ২০২২

ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে শেয়ার বাজার

ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে শেয়ার বাজার

নতুন বছরে পর পর দুই সপ্তাহ ধরে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে শেয়ার বাজার। ব্যাংক খাত, সরকারি প্রতিষ্ঠান, ওষুধ, রসায়ন এবং  গ্রামীণফোন, ইউনিলিভার কেয়ার, ম্যারিকো, লিন্ডে বিডি, রেনেটা এবং বার্জার পেইন্টসহ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারে দাম বৃদ্ধির ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে গত সপ্তাহের পঞ্চম ও শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সূচক বেড়েছে। অর্থাৎ বছরের প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, গত বছরের শেষ কয়েক দিনের মন্দাভাব অনেকাংশে কেটে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভালো মৌলভিত্তি ও বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের গুরুত্ব বাড়ছে।

বাজারের তথ্য বলছে, নতুন বছর ২০২২ সালের প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও ঊর্ধ্বমুখীতার মাধ্যমে পার করেছে দেশের শেয়ার বাজার। এতে গত এক সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। ফলে নতুন বছরের প্রথম দুই সপ্তাহেই বাজার মূলধন বেড়েছে ২২ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে সক্রিয় না হওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে এখনও দুর্বলতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাল্টিপারপাস হলে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের লেনদেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, একটি স্থিতিশীল মার্কেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদান থাকে সবচেয়ে বেশি। রিটেইল ইনভেস্টরদের অংশগ্রহণ থাকে কম। কিন্তু আমাদের এখানে উল্টো। এখানে রিটেইল ইনভেস্টরদের বিনিয়োগ বেশি, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। তিনি উল্লেখ করেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছাড়াও বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করা দরকার। তিনি বলেন, বিশ্বের সবকটি স্টক মার্কেটে ইকুইটি মার্কেটের তুলনায় বন্ড মার্কেট শক্তিশালী। ইকুইটির তুলনায় বন্ড মার্কেট বড় অথবা সমান সমান। কিন্তু আমাদের এখানে উল্টো। এখন নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে। পুঁজিবাজারে বৈচিত্র্য আছে। কিন্তু আমাদের মার্কেটে সেটা নেই।

এদিকে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে (ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড- সিএমএসএফ) ব্যাংকগুলো কত টাকা বা অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ দিয়েছে তা জানতে চেয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে এ তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

এর আগে, গতবছরের ১ জুলাই পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠনের গেজেট হয়। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এ তহবিলে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা।  আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছিল ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে নতুন বছরের প্রথম দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ২২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ২৩০ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২৬০ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট । আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৪১ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট । এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও বছরের প্রথম দুই সপ্তাহ টানা বেড়েছে। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ১৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৭০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট।

এদিকে, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৯৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৬৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৮৩২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

আলোকিত রাঙামাটি