রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:১১, ২৮ জানুয়ারি ২০২২

করোনা নিয়ে ফখরুলের নাটক, সন্দেহ তৃণমূলের

করোনা নিয়ে ফখরুলের নাটক, সন্দেহ তৃণমূলের

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর- ফাইল ফটো


করোনার শুরু থেকে টিকা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নাটক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার জনগণকে টিকা আগে দিতে চাইলে ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন সরকার জনগণের উপর টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করছে। আবার যখন সরকার সিদ্ধান্ত পাল্টে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গকে টিকা দিতে চাইল, তখন ফখরুল ভোল পাল্টে বললেন জনগণ টিকা পাবে না তার আগেই সরকার নিজ দলের লোকদের টিকা দিচ্ছে।

অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের তালিকা থেকে টিকা নেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রথম টিকা নেবেন না বললেও প্রাণ বাঁচাতে সস্ত্রীক নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে সিঙ্গাপুর গিয়ে টিকা নেয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত নাগরিক ছাড়া অন্য কাউকে টিকা দেওয়া হচ্ছে না এটা জানতে পেরে দেশে ফিরে আসেন। তারপরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে না নিয়েই গোপনে টিকাকেন্দ্রে যান। পরে সংবাদকর্মীদের কাছে ধরা পড়েন মির্জা ফখরুল। এভাবে তিনি বহু নাটকের পর বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। তবে জনসম্মুখে সরকারের সমালোচনা করে তিনি এখনো বলেন, দেশের মানুষ এখনো টিকা পাচ্ছে না।

এর মধ্যে প্রচার করা হয় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনায় আক্রান্ত। তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। কিন্তু অনেকেই এই সময় তার করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখেন।

যদিও বিএনপিপন্থী সংগঠনের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনা পরীক্ষা করেছেন এবং পজিটিভ রেজাল্ট আসার পরই তিনি এবং তার স্ত্রী আইসোলেশনে যান।

একজন চিকিৎসক জানান, প্রথমে তার স্ত্রী রাহাত আরার করোনা পজিটিভ আসে। এরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনা পরীক্ষা করান। পরে তারও করোনা পজিটিভ আসে। ফলাফল দেখার পরই তিনি সব কর্মসূচি থেকে নিজেকে গুটিয়ে বাসায় আইসোলেশনে থাকেন। কিন্তু বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এই সময়ে তার করোনায় আক্রান্তের বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন।

তারা বলছেন, যখন সরকার করোনার কারণে রাজনৈতিক সভা সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তখন বিএনপি সব বাধা ডিঙিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করছে। সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।

তবে এভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার পেছনে অন্য কোনো কাহিনি থাকতে পারে বলেও বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে কখনোই ভরসার প্রতীক ছিলেন না। বিশেষ করে কর্মীদের মনে তার ব্যাপারে অনেক সংশয় এবং অবিশ্বাস রয়েছে। বিশেষত ২০১৮ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকেই বিএনপির কট্টর সমর্থকরা ফখরুলের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের গোপন যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করে আসছে।

তৃণমূল পর্যায়ের অনেকেই মনে করেন, বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল। এমনভাবে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছিল যেন নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়। ঐ নির্বাচনে হারের পেছনে মির্জা ফখরুলের সিদ্ধান্তগুলো দায়ী বলে মনে করেন কেউ কেউ।

বিশেষ করে বিএনপির কয়েকজন বিজয়ী প্রার্থী সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্তে কর্মীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। মির্জা ফখরুলের দাবি ছিল তারেক রহমানের নির্দেশেই এটি করা হয়েছে। তবু কর্মীরা মনে করেন যে, তারেক রহমান যেহেতু বিদেশে থাকেন, তিনি এমন নির্দেশনা দিলেও তাকে বাস্তবতা এবং কর্মীদের মনোভাব বুঝানোর দায়িত্ব ছিল মহাসচিবের।

এরপর থেকেই মির্জা ফখরুলের উপর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিশ্বাস চলে গেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলাগুলো কেন নিষ্ক্রিয় এটা নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে। তাই মির্জা ফখরুলের অসুস্থতার মধ্যে যোগসাজশ দেখেন বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা।