রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ৮ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১০:৪১, ৮ জুলাই ২০২২

অপপ্রচারের পুনরাবৃত্তি করলো জেএসএস’র পেইড এজেন্ট অগাস্টিনা চাকমা

অপপ্রচারের পুনরাবৃত্তি করলো জেএসএস’র পেইড এজেন্ট অগাস্টিনা চাকমা
অগাস্টিনা চাকমা

সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর চাঁদাবাজির অর্থে পালিত অগাস্টিনা চাকমা বিদেশে বসে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অপ্রচেষ্টার অংশ হিসাবে পাহাড়িদের ভূমি সমস্যার উপর নতুন গবেষণা পরিচালনার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার (৫ জুলাই) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এমরিপ’র ১৫তম অধিবেশনে “এজেন্ডা আইটেম ৫: ইন্টারসেশনাল কার্যক্রম এবং প্রতিপাদ্য বিষয় ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শ” শীর্ষক আলোচনায় অংশগ্রহণের সময় এই আহ্বান জানান জেএসএস’র পেইড এজেন্ট অগাস্টিনা চাকমা।

তার বিবৃতিতে অগাস্টিনা চাকমা বলেন, সমগ্র বিশ্বে আদিবাসীদের রক্ষা করতে জাতিসংঘের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসিত এবং ফলস্বরূপ, অনেক জাতি বা দেশ আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সরকার আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগোষ্ঠীর স্বশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য ১৯৯৭ সালে পিসিজেএসএস এর সাথে চুক্তি করলেও, কিন্তু এটি এখনও বাস্তবায়ন থেকে অনেক দূরে রয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন। অথচ পুরো দেশবাসী তথা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী জেএসএস ও জানে সরকার পার্বত্য চুক্তির ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন করেছে। ১৫টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। আর নয়টি ধারা বাস্তবায়নাধীন আছে। এখনো যেসব ধারা বাস্তবায়ন করা হয়নি, সেগুলোও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

সরকার বলছে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার যাবতীয় ব্যবস্থা তারা করেছেন। যারা চাকরি চেয়েছিলেন, তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর ওই অঞ্চলে যখনই কোনো ঘটনা ঘটেছে, তখনই সেখানে ছুটে গেছেন। সমাধানের পথ কী, তা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।’  ‘সরকার সব সময় বলেছেন, সমাধান হবে সংবিধানের আওতায়।’

অগাস্টিনা চাকমা আরো বলেন যে, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হয়। শেখ হাসিনা সরকারের উদাসীনতা বিশেষ করে ২০১৬ সাল থেকে কমিশনের বিধিমালা প্রণয়নের কাজ ঝুলিয়ে রাখার কারণে এই ২০২২ সাল পর্যন্ত এই ভূমি কমিশন কাজ করতে পারেনি। অথচ ভূমি কমিশনের একমাত্র চেয়ারম্যান ছাড়া প্রত্যেকেই তাদের স্বজাতির সদস্য ও জেএসএস এর একপ্রকার পছন্দের ব্যক্তিরাই। কমিশন গঠনের পর থেকেই ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কমিশন বেশ কয়েকবার রাঙামাটি ও বান্দরবানে বৈঠক করে অগ্রগতি আলোচনা চালাচ্ছেন এবং যেসব উপজাতি নিজেদের ভূমি হারিয়েছেন বলে দাবী করেছেন তাদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগও জমা নেয়া হয়েছে। অথচ অগাস্টিনা চাকমা জেএসএস এর সুরে মনগড়া তথ্য দিয়ে জাতিসংঘে দেশের সুনাম নষ্ট করার পাঁয়তারা করছেন।  

জনসংহতি সমিতির এই পেইড প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, বান্দরবান জেলার চিম্বুক পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণ করছে। এই প্রকল্প চারটি গ্রামকে প্রত্যক্ষভাবে এবং পরোক্ষভাবে ম্রো জনগোষ্ঠীর ৭০-১১৬ গ্রামকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা প্রায় ১০,০০০ জুম কৃষককে উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলবে। সেনাবাহিনী যেখানে খুশি সেখানে সড়ক নির্মাণ করছে এবং এতে বন ধ্বংস হচ্ছে যা আদিবাসী জুম্ম জাতির পরিবেশ ও সংস্কৃতি ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটা হচ্ছে সামরিক বাহিনীর সহজ চলাচল এবং আদিবাসীদের সহজে দমন করার জন্য কৌশল। তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটেলার বা সামরিক বাহিনী কর্তৃক আদিবাসীদের কাছ থেকে ভূমি দখল করা একটি সাধারণ ঘটনা। 

অথচ বাস্তবতা হলো চন্দ্র পাহাড়ের পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত স্থানটিতে কখনোই কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বসতভিটা ছিল না। চিম্বুক পাহাড় আনুমানিক ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যা বান্দরবান সদরের তেতুলপাড়া নামক স্থান থেকে শুরু হয়ে সীমান্ত পিলার ৬৪ অতিক্রম করে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছে। এই সুদীর্ঘ ১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাহাড়ের মধ্যে মাত্র ২০ একর জমি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত প্রথা ও রীতি মেনে সেখানকার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অর্থাৎ হেডম্যানের অনুমতি সাপেক্ষে বান্দরবান জেলা পরিষদের অনুমোদনে সরকারের নিকট থেকে ৪০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা পরিষদ তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করে। তাই বস্তুত চন্দ্র পাহাড়ে যেহেতু কোন জনবসতিই নেই, সেখানে ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষকে ভিটে-মাটি উচ্ছেদের বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেই প্রতীয়মান হয়।

গত ২২ নভেম্বর রোববার সকালে এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিষদ মিলানায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময় চেয়াম্যান ক্যশৈহ্লা জানিয়েছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলার চিম্বুক ভ্যালির নাইতং পাহাড় এলাকায় কোন ম্রো জনবসতি আগেও ছিল না, এখনও নেই। ওই জমিতে পর্যটন হোটেল নির্মিত হলে পরোক্ষভাবে ৪টি এবং প্রত্যক্ষভাবে ৭০-১১৬টি ম্রো গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হবার কথা সঠিক নয়। কারো ইন্ধনে বা কোন গোষ্ঠীর তৎপরতায় ম্রো জনগোষ্ঠী ফাইভ স্টার হোটেল নির্মানের বিরোধীতা করছে কি না তা তার জানা নেই। 

চেয়ারম্যান আরো বলেন, পাহাড় কর্তন না করা, পরিবেশের ক্ষতি না হয় এমন কোন কার্যক্রম গ্রহণ না করা, জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় অধিবাসীদের অগ্রাধিকার দেয়াসহ মোট ১৮টি শর্ত জুড়ে দিয়ে ৪০ বছরের জন্য সেনাবাহিনীকে জমিটি লীজ দেয়া হয় ।

সম্পাদিত চুক্তি পালনের মাধ্যমে ২০ একর জমিতে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন যাপন ক্ষুন্ন না করে পর্যটন সেবা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। এছাড়া স্থানীয় অধিবাসীদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এছাড়া গত ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে চিম্বুক ভ্যালির উক্ত পাহাড়ে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বান্দরবান পার্বত্য জেলার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন।

মানববন্ধনে ম্রো সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রমে বান্দরবান পার্বত্য জেলা যখন অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের দ্বার প্রান্তে উপনীত, তখনই কিছু স্বার্থান্বেষী কুচক্রি মহল এই উন্নয়নধারাকে নষ্ট করার জন্য হীন প্রচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে আর এন্ড আর হোল্ডিং গ্রুপ এর মাধ্যমে বান্দরবানের জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা ম্রো সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি করার জন্য নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা বলেন, ম্রো সম্প্রদায়ের কোন সদস্য এই মিথ্যা অপপ্রচারের সাথে জড়িত নয়।

ম্রো সম্প্রদায় নেতারা বলেন, স্বাধীনতার পর পার্বত্য এলাকায় সমস্ত ম্রো সম্প্রদায় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই অঞ্চলে শান্তির জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করছে। ফলে সেনাবাহিনীর সাথে ম্রো'দের ভাল সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ম্রো সম্প্রদায়ের আত্মসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী ম্রো ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার সুবিধার্থে স্কুল ও হোস্টেল তৈরী করেছে, লেখা পড়ার জন্য শিক্ষা উপকরন প্রদান করছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য ম্রো যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। অসহায়, দুঃসহ ম্রো জনগনের জন্য ঘর-বাড়ী তৈরী করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচুর পরিমাণে ম্রো সদস্যকে আনসার বাহিনীতে চাকুরী প্রদান করা হয়েছে। ম্রো ছেলে-মেয়েদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী প্রদান করছে। ম্রো যুবকদেরকে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে চাকুরী ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অসহায় গরীব ম্রো সদস্যদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনী কর্তৃক গবাদি পশু, আর্থিক সহায়তা, কৃষি কাজে উপকরন হিসেবে বীজ, সার ইত্যাদি প্রদান করছে। অসহায় গরীব ম্রো ও অন্যান্য সম্প্রদায়কে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সেনাবাহিনী বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করছে।

ম্রো সম্প্রদায় উক্ত বিষয়টিকে বাংলাদেশের জনগনের সামনে আরো পরিস্কার করতে গিয়ে বলেন, বান্দরবান পাবর্ত্য এলাকায় সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের মানুষ যখন মিলেমিশে কাজ করে ঠিক তখন কিছু অসৎ স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের সুবিধা আদায়ের লক্ষে বান্দরবানে এই উন্নয়নের ধারাকে বিঘণ করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা ম্রোদের জড়িয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা, অপপ্রচার করে আসছে। স্বার্থন্বেষী মহল বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে চিম্বুক পাহাড়ে অবস্থিত জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে নাকি ৮০০-১০০০ একর জায়গা দখল করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত পক্ষে উক্ত জায়গাটির পরিমাণ মাত্র ২০ একর এবং ইহা একটি তৃতীয় শ্রেণীর জায়গা যা বসবাসের অযোগ্য। এই জায়গাটি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ২০১৫ সালে নিজে স্বাক্ষর করে কাজ প্রদান করেন। এই নির্মাণর ও বসবাসের অযোগ্য জায়গায় আর এন্ড আর গ্রুপ ও সেনাবাহিনী যৌথ উদ্যোগে উন্নতমানের পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য কাজ করছে। এই খবরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মিডিয়াতে যে দশ হাজার লোকের ভূমিহীন হওয়ার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বর্তমানে উক্ত জায়গাটিতে কোন রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ সংযোগ তথা কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা নেই। উক্ত এলাকাতে বর্তমানে কোন লোক বসবাসও করছে না। ঐ এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হলে পরিবেশের উপর কোন প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নাই বরং ম্রো সম্প্রদায়ের আরো নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এ বিষয়টি নিয়ে দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া ভিত্তিক অনলাইন একটি সংবাদমাধ্যমে “বান্দরবানের চন্দ্রপাহাড় পর্যটনঃ পাল্টে যাবে পাহাড়ীদের জীবনমান” শীর্ষক একটি লেখার মাধ্যমে উক্ত পাহাড় নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। 

এছাড়া জেএসএস এর পেইড এজেন্ট অগাস্টিনা চাকমা তার বক্তব্যের শুরুতে ও শেষে পাহাড়ের ভূমি সমস্যা নিয়ে একই বক্তব্য বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে পুরো বক্তব্যটিকে হাস্যরসে পরিণত করেন। 

চলতি সপ্তাহেই খাগড়াছড়ি জেলা সদরে স্বজাতি কয়েক যুবকের হাতে গণধর্ষনের স্বীকার হন পানছড়ি এক গৃহবধূ, তিনি ওই যুবকদের হাতে বেদম প্রহারেরও স্বীকার হন। অথচ এসব বিষয় নিয়ে অগাষ্টিনা চাকমাদের সামান্যও মাথা ব্যথা নেই। 

গতকালই রাঙামাটির রাজস্থলিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ জেএসএস প্রধান সন্তু লারমার ফাঁসি ও পাহাড়ে প্রত্যাহারকৃত সকল সেনাক্যাম্পের স্থানে পুনরায় সেনা মোতায়েন করার জন্য সরকারের দাবী জানান উক্ত এলাকার মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন। এদিন সকাল ১০ টায় উপজেলা হ্নারামুখ পাড়া থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার উত্তর-দক্ষিণ দিক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মানুষের শান্তির জন্য, কিন্তু সন্তু লারমার নেতত্বৃধীন জেএসএস সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে পাহাড়ের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সন্তু লারমা পাহাড়ে খুন, গুম, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করছে। তাই সন্তু লারমার ফাঁসি দাবি করে তিন পার্বত্য জেলার পরিত্যক্ত সেনাবাহিনী ক্যাম্প গুলোতে পূনরায় সেনাবাহিনী মোতায়ন জোরদার করার দাবী জানান বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মারমা সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ঞোমং মারমা, সাধারণ সম্পাদক চাইলু মারমা, মংক্যানু মারমা, রনি মারমা, হেডম্যান উথিনসিন মারমা, হেডম্যান ক্যসুইথুই মারমা প্রমুখ।

এ সময় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে স্থানীয় হেডম্যান, কারবারি, জনপ্রতিনিধিগণ সহ ট্রাক, বাস, মিনি ট্রাক, সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও চাঁদের গাড়ী যোগে প্রায় ৬ হতে ৭ হাজারের অধিক মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন।  মানববন্ধন শেষে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তারা নিকট মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।

সর্বোপরি, অগাস্টিনা চাকমার দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বক্তব্য নিয়ে খুবি সমালোচনা হচ্ছে৷ জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে অগাস্টিনা চাকমা জাতিসংঘে গিয়ে মিথ্যা বানোয়াট কথাবার্তা বলার সুযোগ এবং আমেরিকা যাওয়ার ভিসা কীভাবে পেল? যে স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল কমর্কান্ডে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সেখানে তাদের বিপরীত অভিযোগ! 

সৌজন্যে:- দৈনিক খাগড়াছড়ি

সর্বশেষ