টানা ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
মহান বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা তিনদিন বন্ধ। ইট-পাথরের নগরী ছেড়ে সবাই সবুজ-শ্যামল প্রাকৃতিক পরিবেশে এমন ছুটি কাটাতে চাইবে- এটাই স্বাভাবিক। তাই তো তিনদিনের এ ছুটিতে পর্যটক বরণে মুখিয়ে আছে পর্যটন নগরী রাঙামাটি।
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার দর্শনীয় পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক বাড়তে শুরু করেছে। শিশির ভেজা সকালে ভ্রমণপিপাসু মানুষের আনাগোনা বাড়ায় বদলাতে শুরু করেছে জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর দৃশ্য। শহর ও বিভিন্ন আনাচে-কানাচে বিনোদন ও দর্শনীয় স্পটগুলোতে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। শহরের আবাসিক হোটেলগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে।
রাঙামাটির অন্যতম দর্শনীয় স্থান হলো- ঝুলন্ত সেতু, ডিসি বাংলো পার্ক, জেলা পুলিশের পলওয়েল পার্ক ও লাভপয়েন্ট স্পট, সুবলং ঝরনা স্পট, আরণ্যক, পেদাটিংটিং, টুকটুক ইকোভিলেজ, বেড়ান্যে লেক, বড়গাং, মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতিসৌধ, সুখী নীলগঞ্জ, রাজবন বিহার, চাকমা রাজার বাড়ি ইত্যাদি। এসব দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্রসহ রাঙামাটি শহরের আনাচ-কানাচের স্পটগুলো পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত। এছাড়া কাপ্তাইয়ের জাতীয় উদ্যান, নৌবাহিনী পর্যটন স্পট, শিলছড়ি স্পট, বিজিবি স্পট, বনশ্রী পর্যটন স্পটসহ বিভিন্ন জায়গায় ছুটছেন পর্যটকরা। পাড়ি জমাচ্ছেন ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যন্ত।
এই শীত মৌসুম হলো পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। শীতে কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা রাঙামাটি পার্বত্য জেলার পাহাড়গুলো দূর থেকে দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন সবটুকু উজাড় করে দিয়ে পেখম মেলে বসে আছে পর্যটন শিল্পের সৌন্দর্য বিকাশে। যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙামাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
সাজেক
রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ অঞ্চলের মানুষগুলোর আয় রোজগারও। পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে আবাসিক হোটেল-রেস্টুরেন্ট, হস্তশিল্পের কারুকাজ, চাকমা ও মারমা সম্প্রদায়ের তৈরি তাঁতের কাপড়সহ ঐতিহ্যবাহী ব্যবসাগুলোর বেচা-বিক্রিও জমে উঠেছে।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছে। সবাই সুন্দরভাবে রাঙামাটি শহর ঘুরছেন।
পর্যটন ট্যুরিস্ট বোট-মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী জানান, শীত এলেই রাঙামাটিতে পর্যটকের আনাগোনা বেড়ে যায়। বর্তমানে ট্যুরিস্ট বোটগুলো মোটামুটি ভাড়া হচ্ছে। সামনে টানা তিনদিনের ছুটিতে বোটগুলোর আরো ভালো ভাড়া হবে।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম জানান, এরই মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। সামনের টানা ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের আগমন ঘটলে আরো বাড়তে পারে।
আলোকিত রাঙামাটি