রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ , ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ৫ আগস্ট ২০২১

‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশে শেখ কামালের বিরাট অবদান রয়েছে’

‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশে শেখ কামালের বিরাট অবদান রয়েছে’

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের বহুমুখী প্রতিভার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির দিক থেকে আজ যে উৎকর্ষতা সেখানে শেখ কামালের একটা বিরাট অবদান রয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ কামালের সাদাসিধে জীবনে দেশকে গড়ে তোলা, দেশের মানুষের পাশে থাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক অঙ্গন বা ক্রীড়া অঙ্গন; এইসব কিছুর উন্নতি করাই ছিল তার কাছে সব থেকে বড় বিষয়।

বৃহস্পতিবার শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথমবারের মতো যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রবর্তিত এই পুরস্কারের জন্য সাতটি ক্যাটাগরিতে মোট ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দু’টি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে টোকিও অলিম্পিক গেমস থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামাল বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তন করে, খেলাধুলাকে উন্নত করে এবং আবাহনী ক্রীড়া চক্র গড়ে তোলে। ঠিক এর আগে আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা করা হয়।

তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটা করার পেছনে একটা উদ্দেশ্য ছিল। ধানমন্ডি এলাকায় তখন খেলাধুলা বা শিশুদের প্রতিভা বিকাশের কোনো সুযোগ ছিল না। তাই এ অঞ্চলের শিশু এবং তরুণদের জন্য একটা খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করাই ছিল কামালের উদ্দেশ্য এবং সে এ ব্যাপারে আলোচনা করেই প্রতিষ্ঠানটা গড়ে তোলে। কাজেই তার সঙ্গে এবং পাশাপাশি আমরা সবাই ছিলাম।

তিনি বলেন, কামাল যেমন খেলাধুলার দিকে থেকে তেমনি সাংস্কৃতিক চর্চার দিকেও ছিল। চমৎকার গান গাইতে পারতো। স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী সে গড়ে তোলে। নাট্যচর্চার সঙ্গেও সম্পৃক্ততা ছিল। সুরেলা গানের গলার সঙ্গে সে চমৎকার সেতার বাজাতে পারতো।

ক্রীড়া সংগঠনগুলোকে আরো ভালোভাবে গড়ে তোলা শেখ কামালের লক্ষ্য ছিল উল্লেখ করে স্বাধীনতার পর দেশের ক্রীড়া অঙ্গনকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে শেখ কামালের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে যে আধুনিক ফুটবল খেলা বা ক্রিকেট খেলা বা এই যে খেলাধুলা সেটাকে একটা আধুনিকতার ছোঁয়া এবং সংগীত জগতে বা সাংস্কৃতিক জগতে সেখানেও তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবেও সে অনেক অবদান রেখে গেছে আমাদের সমাজের জন্য।

শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার লাভ করেন- ক্রীড়াবিদ হিসেবে রোমান সানা (আর্চরি), মাবিয়া আক্তার সীমান্ত (ভারত্তোলন), মাহফুজা খাতুন শিলা (সাঁতার),  ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে মনজুর কাদের (শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব) এবং  ক্যা শৈ ল হ্ন (কারাতে ফেডারেশন), উদীয়মান ক্রীড়াবিদ হিসেবে আকবর আলী (ক্রিকেট) ও ফাহাদ রহমান (দাবা), উন্নতি খাতুন (ফুটবল), ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশন/সংস্থা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, আজীবন সম্মাননায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন এবং ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ওয়ালটন।

পুরস্কার হিসেবে প্রত্যককে ১ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তিনিই বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে শেখ কামালকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার তানভীর মাজাহার তান্না এবং আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে শহিদ শেখ কামালকে নিয়ে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক ও উন্মোচন করেন।

শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয় এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

গত বছর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ শেখ কামালের জন্মদিন ৫ আগস্টকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে জাতীয় ভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।

আলোকিত রাঙামাটি