রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ১৪ মে ২০২২

নৌপথ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নৌপথ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- ফাইল ছবি

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নৌপথের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেল চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ অঞ্চলের নৌ-করিডোরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নৌপথ খনন সংক্রান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নৌপথের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমাতে দেশের নৌপথের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়নকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে থমকে দেওয়া হয়েছিল। পচাত্তর পরবর্তী সরকার দেশের নৌপথসহ কোনো পথেই উন্নয়ন করে নাই। এরপর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশের নৌপথ পুনরায় উদ্ধার ও উন্নয়নে হাত দেন। আজ যে দুটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে তার কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের নৌপথের যে অগ্রগতি হবে তাতে দেশের নৌপথ ব্যবহারকারী পণ‍্যবাহী যান ও যাত্রীরা আরো সাচ্ছন্দ্যে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।

অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ অঞ্চলের নৌ-করিডোরের সক্ষমতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন এবং একে টেকসই খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌপথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র অনুষ্ঠিত হয়। 

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আইউব আলী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গালফ কবলা-কর্ণফুলী যৌথ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশিদ, অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধারতি-বঙ্গ যৌথ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বঙ্গ ড্রেজার্স লিমিটেডের পরিচালক মো. আইনুল ইসলাম। 

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম‍্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক উপস্থিত ছিলেন। 

চুক্তিপত্র অনুযায়ী ১৩টি নৌরুটের উন্নয়ন ও সংরক্ষণ খনন কাজ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গালফ কবলা-কর্ণফুলী যৌথ প্রতিষ্ঠান এবং ধারতি-বঙ্গ যৌথ প্রতিষ্ঠান। এজন্য ব্যয় হবে ৪৩০ কোটি টাকা।

প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৯০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন, ৬টি স্থানে নৌযানসমূহের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ৩টি ফেরি ক্রসিং এলাকায় সংরক্ষণ ড্রেজিং, ৪টি প্যাসেঞ্জার ও ২টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং  স্টেশন নির্মাণ এবং ২টি মাল্টিপারপাস ভেসেল সংগ্রহ করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের আশুগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালে মূল নদী ও শাখাসমূহ (প্রায় ৯০০ কিলোমিটার নৌপথ) পারফরম্যান্স বেইজড কন্ট্রাক্ট ড্রেজিং এর মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ এবং নাব্যতা সংরক্ষণ করা হবে। এ নৌ-করিডোর মধ্যে ৬টি স্থানে নৌযানসমূহের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ। 

প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত স্থানসমূহ হচ্ছে- ষাটনল, চরভৈরবী, চাঁদপুর, মেহেন্দীগঞ্জ, সন্দ্বীপ এবং নলচিরা; উক্ত নৌরুটের ৩টি ফেরি ক্রসিং (চাঁদপুর-শরিয়তপুর, লক্ষীপুর-ভোলা এবং ভেদুরিয়া-লাহারহাট) এলাকায় সংরক্ষণ ড্রেজিং; ৪টি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন (ঢাকা শ্মশানঘাট, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর এবং বরিশাল) এবং ২টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন (পানগাঁও ও আশুগঞ্জ); নৌকরিডোরটির বিভিন্ন স্থানে (ভৈরব বাজার, আলু বাজার, হরিণা, হিজলা, মজুচৌধুরী, ইলিশা (ভোলা), ভেদুরিয়া,  লাহারহাট, বদ্দারহাট, দৌলতখাঁ, চেয়ারম্যানঘাট (চর বাটা), সন্দ্বীপ, তজুমদ্দিন, মনপুরা এবং তমুরুদ্দিন) ১৫টি ল্যান্ডিং  স্টেশন নির্মাণ এবং ২টি মাল্টিপারপাস ভেসেল সংগ্রহ করা হবে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌ-করিডোর এবং নারায়ণগঞ্জ ও বরিশাল এর বর্ধিতাংশ অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার রুট বা নৌপথ হিসেবে চিহ্নিত। দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ নৌযান এ করিডোরের মধ্য দিয়ে চলাচল করে এবং দৈনিক প্রায় ২ (দুই) লাখ যাত্রী এসব নৌপথ ব্যবহার করে।

প্রকল্পের মেয়াদকাল ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য ৩৩৪৯.৪২ কোটি টাকা। যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক এর প্রকল্প সাহায্য (পিএ) ৩০৫২.৮০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) ২৯৬.৬২ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআইডব্লিউটিএ)।