রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২০ মার্চ ২০২৩

রোজায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে গোশত-দুধ-ডিম

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

রোজায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে গোশত-দুধ-ডিম
ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। আসন্ন রোজার আগেই সব ধরনের গোশত, দুধ ও ডিমের দাম নাগালের বাইরে। এসব খাদ্যপণ্য কিনতে না পারায় প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রমজানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে কম দামে দুধ, ডিম ও গোশত বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

করোনা সংকটকালে খামারি ও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশে প্রথম চালু হয় গোশত, দুধ, ডিমের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র। এতে মানুষের দোরগোড়ায় দুধ, ডিম, মাছ, গোশত পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। পরে গত দুই বছর রমজানেও সুলভমূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন রমজানেও কম দামে এসব পণ্য ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের নামে বিক্রয় করা হবে।

রমজান মাসে গোশত, ডিম, দুধ সরবরাহের জোগান ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি এবং জুম প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প এবং সংশ্লিষ্ট অনেকে যুক্ত ছিলেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, আসন্ন রমজানের আগে বাজারে মুরগি, খাসি ও গরুর গোশত, দুধ, ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও সাপ্লাই চেইন সচল রেখে মূল্য স্থিতিশীল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। রমজান মাসে জনসাধারণ যেন সহজেই প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী সুলভমূল্যে সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সভায় ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান বলেন, বিপিআইসিসির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট অব্যাহত থাকবে। তিনি উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে ডিম ও ড্রেসড ব্রয়লার মুরগির গোশতের মূল্য নির্ধারণের কথা বলেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ২০২২ সালে অত্যন্ত সফলভাবে রমজান মাসে ভ্রাম্যমাণ বাজার ব্যবস্থাপনায় সুলভমূল্যে মুরগি, খাসি ও গরুর গোশত, দুধ ও ডিম সরবরাহ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের ১৫টি স্থানে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এবার ঢাকা ছাড়াও অন্য বিভাগীয় শহরে এসব পণ্য সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

জানা যায়, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) থেকে আগের বছরের মতো এবছরও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিক্রয় প্রতিনিধি, কুল ভ্যানসহ অন্য লজিস্টিক সরবরাহ করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সুলভমূল্যে বিক্রির জন্য মুরগির, খাসির ও গরুর গোশত, দুধ এবং ডিমের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। সরকারি দুগ্ধ ও গবাদি পশু উন্নয়ন খামার থেকে গোশত জন্য সরবরাহযোগ্য গরুর সংখ্যা জেনে নির্ধারণ করা হবে গরুর গোশতের পরিমাণ। ঢাকা শহরের ২০টি স্থানে, চট্টগ্রাম শহরের পাঁচটি স্থানে এবং অন্য প্রতিটি বিভাগীয় শহরের একটি স্থানে সুলভমূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, আগের বছরগুলোতেও ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যাপক সুফল মানুষ পেয়েছে। এবছরও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তবে গতবারের তুলনায় একটু বড় করেই আমরা করব। আগামী ২৩ মার্চ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। দাম সুলভই থাকবে কিন্তু বর্তমান বাজার অনুযায়ী একটু পরিবর্তন হবে।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, গরু ও খাসির গোশত, দুধ, ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও সাপ্লাই চেইন সচল রেখে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে চায় সরকার। আসন্ন রমজান মাসে জনসাধারণ যেন সহজেই প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ভূমিকা রাখতে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। গত দুই রমজানের মতো এবারও ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থায় গোশত, দুধ, ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জনপ্রিয়