রাঙামাটি । বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ , ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১১:১৯, ৫ জুলাই ২০২১

পাবনায় যুবলীগের হটলাইন, কল করলেই পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন

পাবনায় যুবলীগের হটলাইন, কল করলেই পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় অক্সিজেন সংকটে পড়েছেন রোগীরা। এ ক্রান্তিকালে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন পাবনা জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা। যুবলীগের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক ৪৭টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত। তারা তাদের হটলাইনে (০১৭২৪-০৭৬৭৭০) রোগীর স্বজনদের ফোন পেলেই অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হাজির হচ্ছেন। শনিবার (৩ জুলাই) থেকে তারা এ সেবাদান কার্যক্রম শুরু করেছেন।

দীর্ঘদিনের দাবির মুখে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ শুরু হয়। চলতি জুনের মধ্যে কাজ মেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রের অভাবে এখনো চালু হয়নি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে কাজের অর্ধেকও শেষ হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে।

এদিকে পাবনায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের পর গত বুধবার পাবনায় সর্বোচ্চ ১৭৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বৃহস্পতিবার ১৯২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। শুক্রবার আরও ১ হাজার ৩৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনিবার ৭৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ১১৮ জন। এ নিয়ে জেলায় শনিবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৫ জন।

এ অবস্থায়ও হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তহুরা আজিজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও করোনা যোদ্ধা দেওয়ান মাহবুবুল ইসলাম জানান, পাবনা একটি পুরনো জেলা। এই জেলায় আজ পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ও আইসিইউ ইউনিট চালু হয়নি। তিনি বলেন, ‘হাসপাতলে বহু রোগী অক্সিজেন সংকটে ভুগছে। অনেক রোগীকে হাসপাতলে কর্তৃপক্ষ ভর্তি করতে পারছে না।’

তিনি জানান, ‘আমরা পাবনাবাসী’র ব্যানারে তারা গত সপ্তাহেও মানববন্ধন করেছেন। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার অধিকাংশ সামগ্রী ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। করোনার কারণে ভারতে লকডাউন থাকায় মালামাল আমদানিতে বিঘ্ন ঘটেছে। এরই মধ্যে কিছু মালামাল এসেছে। শিগগিরই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা যাবে।’

পাবনা জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক জানান, এ দুঃসময়ে যুবলীগ জেলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশে তারা করোনাকালে পাবনার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এর আগে লক্ষাধিক হতদরিদ্রের মধ্যে কয়েক দফায় খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করা হয়। করেনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণকারীদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি মানুষের জন্য। তাই জেলার মানুষের বিপদে পাশে আছে যুবলীগ। এবার অক্সিজেন সংকটে সিলিন্ডার নিয়ে আমরা জেলাবাসীর পাশে থাকতে চাই। অনেক সময় টাকা দিয়েও অক্সিজেন সিলিন্ডার পাওয়া যায় না। আমাদের হটলাইনে কল করলেই আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সিলিন্ডার নিয়ে রোগীর কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন।’

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সমাজসেবক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি বলেন, ‘সরকারের একার ওপর ছেড়ে না দিয়ে সবাই এগিয়ে আসলে এই মহামারি মোকাবিলা করা সহজ হবে। তাই জেলার অক্সিজেন সংকটে থাকা মানুষের পাশে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আমরা পাশে থাকতে চাই।’

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘এটা যুবলীগের যুবকদের একটি মহতী কাজ। সরকারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি-সংগঠন এভাবে এগিয়ে আসলে যে কোনো দুর্যোগ সহজেই মোকাবিলা করা সহজ হয়।’

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়