রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৮ জানুয়ারি ২০২২

ঢাকায় প্রবেশের পথ হবে যানজটমুক্ত

ঢাকায় প্রবেশের পথ হবে যানজটমুক্ত

হাতিরঝিল-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ককে ৪ লেন এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং চীনা কনসোর্টিয়াম চুক্তি সই করবে

হাতিরঝিল-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ককে ৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার করার প্রকল্প শেষ পর্যন্ত এগুতে শুরু করেছে। পরিকল্পিত সড়কটি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ঢাকার কেন্দ্রে আসার বিকল্প প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি এটি যানজট কমাতেও সহযোগিতা করবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য আগামী রোববার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) একটি চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সই করবে।

চু্ক্তি স্বাক্ষরের পর চীনা কনসোর্টিয়াম মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর জন্য ৯ মাস সময় পাবে। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ভূমি হস্তান্তর ও কনসোর্টিয়ামকে তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।

একবার কাজ শুরু হলে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ৪ বছর সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই প্রকল্পে চায়না কমিউনিকশনস কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের কনসোর্টিয়াম ২ হাজার ৯৪ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

হাতিরঝিল থেকে ডেমরা পর্যন্ত এখনকার রুটটি ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটারের। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে তা ১৩ কিলোমিটারে নেমে আসবে। আর ১ ঘণ্টার পরিবর্তে এর এক মাথা থেকে আরেক মাথায় পৌঁছাতে লাগবে ১০ মিনিট। তবে এটি ব্যবহারের জন্য টোল দিতে হবে।

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিগতভাবে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ার ৫ বছর পর প্রকল্পের এই অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। এটি সওজের আওতাধীন দ্বিতীয় পিপিপি প্রকল্প, যা এই পর্যায়ে এসেছে।

সওজ এই মুহূর্তে ৬টি পিপিপি প্রকল্পে কাজ করছে। এর মধ্যে ঢাকা বাইপাস রোডকে ৪ লেন এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার প্রকল্পটির কেবল মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। বাকি প্রকল্পগুলো প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে আছে।

এক্সপ্রেসওয়েটি কীভাবে যানজট কমাবে?

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট, এই দুটি জাতীয় মহাসড়ক ঢাকার সঙ্গে দেশের প্রধান ২টি শহরকে যুক্ত করেছে। তবে ব্যস্ততম এই দুটি মহাসড়কের প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়।

মহাসড়ক ধরে যানবাহন ঢাকায় ঢোকার পর তা সড়কে ব্যাপক চাপ তৈরি করে। এতে করে প্রায়ই শহরের দক্ষিণ অংশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। তাই ঢাকার যানজট কমাতে ও শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বিকল্প প্রবেশদ্বারের জন্য বিদ্যমান হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা রুটটিকে এক্সপ্রেসওয়েতে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

কর্মকর্তারা বলছেন, এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিমরাইল এলাকার সাথে সংযুক্ত করা হবে, যেখানে মহাসড়কে যান চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখতে একটি বহুস্তর বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।

এক্সপ্রেসওয়েটির দুই পাশে থাকবে টোলমুক্ত সড়ক। চট্টগ্রাম রোড, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার, মেরাদিয়া ও রামপুরা সেতু এলাকায় থাকবে ৪টি ইন্টারচেঞ্জ। এগুলো এক্সপ্রেসওয়েতে ঢোকা ও বের হওয়ার পাশাপাশি টোল আদায়ের কাজে ব্যবহার করা হবে।

প্রকল্প অনুমোদনের পর পিপিপি কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্যতা যাচাই ও অন্যান্য কাজের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করে। গত বছরের জানুয়ারিতে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি মূলত জমি অধিগ্রহণের জন্য এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত বছরের নভেম্বরে চীনা কনসোর্টিয়াম নিয়োগের জন্য সওজের প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। সওজ সূত্র জানায়, এক্সপ্রেসওয়ের নকশা প্রায় চূড়ান্ত। এবং কনসোর্টিয়াম এরমধ্যে প্রয়োজনীয় তহবিলের জন্য একটি চীনা ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছে।

সওজের পিপিপি সেলের সমন্বয়কারী এ কে এম ফজলুল করিম গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে কনসোর্টিয়াম অর্থায়নের পাশাপাশি তা পরের ২৫ বছরের জন্য পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে।

তিনি আরও বলেন, চুক্তি অনুসারে সরকার টোলের পুরো অর্থ পাবে এবং কনসোর্টিয়াম পাবে একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক। বর্তমানে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় আরও দুটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণাধীন আছে।

অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ