রাঙামাটি । শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২০ জুলাই ২০২১

বিদেশফেরতদের জন্য সুখবর

বিদেশফেরতদের জন্য সুখবর

করোনার সময় চাকরি হারিয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসা দুই লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার। প্রবাসী বাংলাদেশিদের নগদ টাকাও (ক্যাশ ইনসেনটিভ) দেওয়া হবে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঋণের প্রয়োজন হলে সরকার সে ব্যবস্থা করে দেবে। কেউ যদি আবার বিদেশ যেতে চান, তাঁকে প্রয়োজনীয় সনদসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ৪২৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর সিংহভাগই অর্থাৎ ৪২৫ কোটি টাকাই ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। গত ২৩ মার্চ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। ২৮ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের কথা রয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাস্তবায়ন করবে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) খালেক মল্লিক এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের অনেকেই কর্মহীন অবস্থায় আছেন। তাঁরা পরিবার–পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্তও। আর্থিক দুরবস্থার কারণে তাঁরা কিছু করতেও পারছে না। তাঁদের কথা বিবেচনা করেই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ওই এক বছরে মোট ৪ লাখ ৮ হাজার ৪০৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্য থেকে দুই লাখ কর্মীকে বাছাই করা হবে তাঁদের আগ্রহ, পারিবারিক অবস্থা, আর্থিক অবস্থা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে। কর্মী বাছাইয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এর বাইরে আরও ২৩ হাজার ৫০০ কর্মীকে বাছাই করে তাঁদের সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে সনদ দেওয়া হবে।

সুবিধাভোগী কারা হবেন

প্রথম দফায় দুই লাখ কর্মীকে ৩২ জেলা থেকে বাছাই করা হবে। অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত জেলাগুলো হলো ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লা, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা।

কর্মসংস্থান হবে কীভাবে

বাছাই করা দুই লাখ বিদেশফেরত কর্মী কী করতে চান, সেটা জেনে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হবে। উদাহরণ দিয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কেউ বিদেশে গাড়ি চালাতেন, কিন্তু এখন কোনো সনদ নেই, তাঁকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিটিআরসি) থেকে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে সনদ দেওয়া হবে। সেই সনদ দিয়ে চাইলে ওই কর্মী ফের বিদেশে যেতে পারবেন। কিংবা দেশের মধ্যেই গাড়ি চালাতে পারবেন। ওই কর্মীর যদি আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, তাঁকে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কোনো বিদেশ ফেরত কর্মী যদি উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহের কথা জানান, তাঁকে এসএমই ফাউন্ডেশনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সেখান থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

কেউ যদি বড় কোম্পানিতে কাজ করার আগ্রহ দেখান, তাঁর সেই যোগ্যতা থাকে, তাঁকে শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রে (বিটাক) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। আবার বিদেশ যেতে চাইলে সেই ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রশিক্ষণের সময় দুই লাখ বিদেশফেরত কর্মীর প্রত্যেককে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে সম্মানী বাবদ।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) শরিফা খান প্রথম আলোকে বলেন, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এখান থেকে সফলতা মিললে পরবর্তী সময়ে কর্মীর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

আলোকিত রাঙামাটি