রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা মূলধন তুলতে পারবে এসএমইরা

পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা মূলধন তুলতে পারবে এসএমইরা

দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (এসএমই) নতুন সুযোগের পথ পেতে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারের মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে এসএমই উদ্যোক্তারা। এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার এসএমই ফাউন্ডেশন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এসএমইর সংজ্ঞা পরিবর্তন হলে এই মূলধন সংগ্রহের পরিমাণ আরো বাড়বে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমইর অবদান মাত্র ২৫ শতাংশ। মূলধন সঙ্কটের কারণে তারা অগ্রসর হতে পারছে না। রাজধানীর খিলক্ষেতের ডিএসই টাওয়ারে গতকাল দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মফিজুর রহমান এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। ডিএসই চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো: মাসুদুর রহমান। ২০১৮ সালে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজার থেকে মূলধন আহরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

তিন বছর মেয়াদি এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এসএমই খাতের উন্নয়নে যৌথ গবেষণা পরিচালনা ও পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনের বিষয়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের অবহিতকরণের উদ্দেশ্যে যৌথ প্রচারণা, পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে যৌথ উদ্যোগে সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজন, এসএমই ফাউন্ডেশন পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনে আগ্রহী ও যোগ্য উদ্যোক্তাদের তালিকা সরবরাহ এসএমই খাতের উন্নয়নে পারস্পরিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সবুজ অর্থনীতি বা পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের জন্য পারস্পরিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, এসএমই ফাউন্ডেশন এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাতকরণে ধারণা প্রদান এবং উভয় পক্ষ প্রযুক্তি উন্নয়ন বিষয়ে পারস্পরিক তথ্য বিনিময় করবে।

প্রসঙ্গত বর্ণিত বিধি অনুসারে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজার থেকে মূলধন আহরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ৩০ এপ্রিল ২০১৯ থেকে ডিএসই এসএমই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এসএমই খাতভুক্ত কোম্পানিসমূহ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারবে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো: মাসুদুর রহমান বলেন, ভারতের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৬০ শতাংশ, চীন ও জাপানে প্রায় ৭০ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে মাত্র ২৫ শতাংশ। এই হার বাড়াতে উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তিনি বলেন, দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের অন্যতম বড় সমস্যা পুঁজি সঙ্কট। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বছরে এই খাতে এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেয়া হলেও প্রকৃত চাহিদা অন্তত তিনগুণ বা পাঁচ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো। সেই সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের সুযোগ করে দিতেই বিধিমালা তৈরি করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। তিনি এই সুযোগ গ্রহণ করতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

ডিএসই চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমান বলেন, সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দুই দফায় প্যাকেজ ঘোষণা করলেও নানা জটিলতায় বেশির ভাগ উদ্যোক্তা তার সুফল পায়নি। সেক্ষেত্রে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারা তাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। কারণ দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জায়গা হচ্ছে পুঁজিবাজার। তাই ব্যাংকে না গিয়ে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে তিনি এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মফিজুর রহমান বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের এই সুযোগ নিঃসন্দেহে দেশের এসএমই খাতের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। তিনি বলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করাই যথেষ্ট নয়, একে সফল করতে হবে।

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে পাঁচ কোটি থেকে ৩০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের সুযোগ থাকলেও এসএমইর সংজ্ঞা পরিবর্তন হলে এর পরিমাণ আরো বাড়বে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়