রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেকিং

পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : কাপ্তাইয়ে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাপার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে : বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপিসাজেকে নিহত ৯ জনের ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর, আহত ২ শ্রমিককে ঢাকায় প্রেরণকাপ্তাই হ্রদে ৩ মাসের জন্য মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরুকেএনএফ প্রধান নাথান বমের স্ত্রী ‘নিখোঁজ’সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯, পরিচয় মিলেছে ২ জনের!তীব্র তাপদাহ: জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণায় নেমেছে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগকাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ ইউনিটের ৪টিই বন্ধ, উৎপাদন কমে ৩০ মেগাওয়াট

সাতরং ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ১৬ নভেম্বর ২০২২

লাল কাঁকড়ার জন্য বানানো হলো রাস্তা, মানুষ-গাড়ি সবই নিষিদ্ধ

লাল কাঁকড়ার জন্য বানানো হলো রাস্তা, মানুষ-গাড়ি সবই নিষিদ্ধ
​​​​​​​ছবি: সংগৃহীত

এ যেন লাল গালিচা! রাস্তাজুড়ে কিলবিল করছে কোটি কোটি লাল কাঁকড়া। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে নোটিশ বোর্ড। এই রাস্তায় মানুষ কিংবা যান; সবই নিষিদ্ধ। এমনকি ওই এলাকায় মানুষের বাইরে বেরোনোর সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করা হয়েছে অফিস টাইম।

ভাবছেন সামান্য কাঁকড়ার জন্য এত কিছু? হ্যাঁ, এটাই সত্যি। পৃথিবীর এই জায়গায় মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করে। বছরের অন্যান্য দিনে যে রাস্তা দিয়ে মানুষ অত্যন্ত ব্যস্ত ভাবে গাড়ি চালিয়ে যান কিংবা হেঁটে যান সেই রাস্তা কয়েক মাসের জন্য বন্ধ থাকে। সেই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে শুধু লাল কাঁকড়ার দল। দেখলে মনে হবে বৃষ্টি ভেজা পথে কেউ যেন প্রকৃতির লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে লাল চাদরে মুড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার এই জায়গা।

এসব কাঁকড়া কিন্তু অন্যান্য কাঁকড়াদের মতো নয়। এরা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে প্রজননের জন্য জঙ্গল ছেড়ে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এই প্রজননের মহাপর্বের একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। এই আশ্চর্য দৃশ্য দেখতে প্রতিবছর হাজারো পর্যটক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে যান অস্ট্রেলিয়ার এই ছোট্ট দ্বীপে।

সুমাত্রা থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভারত মহাসাগরে ভাসছে এই লাল কাঁকড়ার দ্বীপ, যাকে সবাই চেনে ক্রিসমাস দ্বীপ নামে। এটি অস্ট্রেলিয়ার পারথ থেকে ১৭৫০ কিলোমিটার দূরে। মাত্র ১৩৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই ছোট্ট দ্বীপে থাকেন মাত্র ২ হাজার মানুষ। তবে এই দ্বীপ সারা বিশ্বের কাছে বিখ্যাত লাল কাঁকড়া দ্বীপ হিসেবে। এখানেই রয়েছে প্রায় পাঁচ কোটির বেশি লাল কাঁকড়ার বসবাস।

অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বৃষ্টি শুরু হলেই বদলে যায় তাদের জীবনযাত্রা। তারা দল বেঁধে ছুটে যায় সাগরের দিকে, যাকে বলা হয় ক্র্যাব মাইগ্রেশন। কথাটা একটু আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি। মাইগ্রেশন বা এই অভিযান সাধারণত পরিযায়ী পাখিদের ক্ষেত্রে আমরা শুনতে পাই। কিন্তু এখানে লাল কাঁকড়াও পরিযায়ী।

বর্ষা নামলেই অবলোকন করা যায় অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এছাড়াও পাবেন সমুদ্রের কিনারায় প্রবাল প্রাচীর এবং সামুদ্রিক গুহা। এই দ্বীপের জঙ্গলে প্রায় ৩০ টিরও বেশি গুহা রয়েছে। দ্বীপটির উপকূলীয় দৈর্ঘ্য প্রায় প্রায় ৭৩ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৪৬ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ক্রিসমাস আইল্যান্ডের জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানে নানান বিরল উদ্ভিদ, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী প্রাণী থাকলেও মূল আকর্ষণ লাল কাঁকড়া। এরা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে নিজেদের ডেরা বানায়। আর সেই গর্ততেই বছরের অন্যান্য সময় ঘাপটি মেরে বসে থাকে।

ক্রিসমাস আইল্যান্ডে এসব কাঁকড়া খুবই স্পেশাল। অক্টোবর ও নভেম্বরে বর্ষা নামলেই এদের জন্য তৈরি করে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট একটি পথ, থামিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি, তৈরি করা হয় কৃত্রিম সেতু। রীতিমত লাল কাঁকড়া তখন ভিআইপির দল।

একবার ভাবুন তো, যদি সারা বিশ্বের মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের রুটিন বানিয়ে নিত! তাহলে হয়তো বিশ্ব উষ্ণায়ন কিংবা বিভিন্ন প্রজাতির ধ্বংস আমাদের দেখতে হত না। আমাদের পৃথিবী আরো সুন্দর হয়ে উঠত।

জনপ্রিয়