কিছুই দেখিনা তোমার প্রতিচ্ছবি ছাড়া
ছবি: সংগৃহীত
জীবদ্দশায় আরেকবার ফিরে এলো
সেই ভয়ংকর কষ্টের রাত
প্রগতির সাথে প্রতিক্রিয়াশীলতার সংঘাত
রক্ত গঙ্গা বয়ে যাওয়ার
সেই কালরাত
সাড়ে সাত কোটি বাঙালির ঠিকানা
বত্রিশ নম্বর থেকে রক্তস্রোত
সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ার রাত
সেই অভিশপ্ত রাতে ঘটে গেলো
কোটি সন্তানের পিতৃবিয়োগের মর্মন্তুদ ঘটনা
আর ঘাতকেরা ছড়িয়ে দিলো এক রটনা
মিথ্যাচারের নির্লজ্জ সূচনা সেই রাতে
সেই রাতে সব কীর্তিময় স্বপ্নের মৃত্যুতে
গোটা জাতি ডুবে গেলো অমানিশার অন্ধকারে
তাদের মাথার উপরের ছাতা গেলো সরে
গর্বিত পরিচয় হারিয়ে ফেললো মুহূর্তে
চরম বিষন্নতার সেই বিপন্নতার রাতে।
যদিও অন্য যেকোন দিনের মতই
সেদিনের সন্ধ্যায় বাংলার ঘরে ঘরে
সেই লক্ষ্মীবারে নিবিষ্ট চিত্তে পাঁচালি পড়ে
সমৃদ্ধির প্রার্থনা করেছিলো
আর সব মসজিদে শোনা গিয়েছিলো
আজানের ধ্বনি
যার যার প্রার্থনা শেষে
সবাই ছিলো গভীর নিদ্রায় মগ্ন
সেই রাতের সুনসান নীরবতা ভাঙ্গেনি
বিকট শব্দেও কেউ জেগে ওঠেনি
সেই কালঘুম যেন
গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ
সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার
এক ঘৃণ্য প্রয়াস করেছিলো ওরা
ওরাই প্রণেতা তোমাকে হত্যার নীল-নকশার।
যেভাবে তস্কর চুরি করে নিয়ে যায়
সাধু গৃহস্থের সর্বস্ব
ঘটি, বাটি, হাঁড়ির পান্তা ও নুন
সে রাতে তেমনই চুরি করে নিলো ওরা
রক্তে কেনা স্বাধীনতা
কিন্তু বিশাল জনতার আমানত
এই দায়ভার বইবার ক্ষমতা
আছে কি আর ওদের মতো খুনীদের!
তোমাকে হত্যা করার ভেতর দিয়ে
ওরা ঘুরিয়ে দিতে চাইলো সময়ের চাকা
তা কি আর হয় কিছুতেই
এটাতো সম্ভব নয় কোনভাবেই
সাময়িক বিজয়ের আনন্দে
বিভোর ছিলো যারা
নিজেদের চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চয়ই
স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছে তারা
বাংলাদেশের মাটি প্রতিক্রিয়াশীলদের নয়
এখানে শেষতক হবেই হবে
ভূমিপুত্রদের ভালোবাসার জয়
পিতা, তোমার জন্য আর কাঁদবো না মোরা
আজ যেদিকেই তাকাই
কিছুই দেখিনা তোমার প্রতিচ্ছবি ছাড়া।
আলোকিত রাঙামাটি