রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নানিয়ারচর প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১৮ জুলাই ২০২১

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে খুশী নানিয়ারচরের ৬১ পরিবার

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে খুশী নানিয়ারচরের ৬১ পরিবার

নানিয়ারচর প্রতিনিধিঃ- মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহ প্রদান কার্যক্রমে নানিয়ারচর উপজালায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেলেন ৬১টি পরিবার। উপজেলায় দুর্গম উঁচু-নিচু পাহাড়ের জনপদে মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে পেয়ে খুশীতে আনন্দিত পরিবার সমূহ, বসতবাড়ির সামনে ও পাশে কেউ কেউ আবার মনের সুখে লাগাচ্ছেন ফুল গাছ। আশ্রয়হীনতায় ভোগা এ সকল পরিবারগুলো দুর্গম পাহাড়ের সবুজ অরণ্যর বুকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া লাল সবুজের ঘর পেয়ে আত্মহারা। 

সুবিধাভোগীদের মধ্য প্রতিবন্ধী মোঃ জমির হোসেন, দুই সন্তানের জনক এই পিতা নিজের সহধর্মীণিকে নিয়ে উপজেলার সদরের ফুটপাতে কিছু শাক-সবজি বিক্রি করেন। ভাড়া বাসায় থেকে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা ও নিজেদের ভরণ পোষণ চালতে ছিল অক্ষম।

তার এই দুর্বিসহ দিন পেরিয়ে আসার গল্প জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার পা নিয়ে খুব কষ্টে বাজার থেকে সবজি ঠিয়া করে নিয়া আসি পরে তা বিক্রি কইরা যা পাই তা দিয়া সংসার চালাই খুব কষ্টে। একদিন আমাগো (ইউএনও) মেডাম আমারে রাস্তায় দেইখা আমারে নিয়ে কিছু কথা জিজ্ঞাইল পরে আমারে একদিন হের অফিসে ডাকল আর আমারে একটা জায়গা দিয়া ঘর তুইলা দিল, এহন আমি পোলা মাইয়া লইয়া খুব ভালা আছি।

উপকারভোগী স্বামীহারা ২ মেয়ের মা ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের পহরবী চাকমা জানান, জরাজীর্ণ ঘরে ২ মেয়ে নিয়ে বহু কষ্টে জীবন কাটাচ্ছিলাম, আমার এক মেয়ে এইবারের এস,এস,সি পরিক্ষার্থী, এখন (ইউএনও) মেডাম আমাদের পাকা বাড়ি দিছে, বাড়িটি খুব মজবুত হইছে, স্যার কয়েকবার এসে বাড়িটি দেখে গেছে, ভগবান স্যার’কে ভালো রাখুক।

সাবেক্ষং ইউনিয়নের শান্তি চাকমা নামে এক উপকারভোগী বৃদ্ধ বলেন, ছেলের বিয়ের পর পৃথক সংসার করছে আমি আমার জীর্ণশীর্ণ ঘরে কোনরকম সহধর্মিনী নিয়ে থাকি, ইউএনও ম্যাডাম জানতে পেরে আমাদের একটি থাকার ব্যবস্থা করে দেন, এখনো ঘরের কাজ চলতেছে, টিভিতে দেখেছি কয়েক জায়গায় ঘর নাকি ভেঙে গেছে, কিন্তু আমাদের ঘর ভাঙ্গে নাই, ইউএনও ম্যাডাম ও অনেক স্যারেরা অনেক বার এসে দেখে যাচ্ছেন।

মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করেন বগাছড়ির সালমা বেগম জানান, আমার নিজের কনো জমি আর ঘর নাই। মাইনষের বাড়িতে গিয়া কাজ করি এগুলো দিয়া পোলা মাইয়া ও সংসার চালানো খুব কষ্ট। ইউএনও ম্যাডাম আমাগো একখান বাড়ি দিছে আমি অনেক খুশী হইছি। ম্যাডাম প্রতি সপ্তাহে অনেক বার আইসা ঘর দেইখা যায়, আরো অনেক স্যারেরাও আসেন আমাগো ঘর দেখতে, ঘর অনেক সুন্দর হইতাছে, রঙ দেওয়া হইলে আরো অনেক সুন্দর লাগবো।

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ সকল ঘরের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি রহমান তিন্নির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নানিয়ারচরে খাস জমি খুঁজে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছি। ইতিমধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্প-১ এর ২৮টি ঘর, ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ০৩টি ঘর সম্পন্ন হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর ৩০টি ঘর জুলাই মাসের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে এবং তৃতীয় পর্যায়ে ঘরের জন্য আবেদনকারীদের নামের তালিকা যাচাই-বাছাই এর কাজ চলছে। প্রতিনিয়ত তদারকিও করা হচ্ছে ট্যাগ অফিসারদের মাধ্যমে।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ