রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাপ্তাই প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১২:১৭, ২২ জুন ২০২২

আপডেট: ১২:১৯, ২২ জুন ২০২২

কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসে বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরের ক্ষতি সাধিত

কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসে বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরের ক্ষতি সাধিত
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের খন্ড চিত্র।

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে কাপ্তাই উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাপ্তাইয়ের বেশীর ভাগ এলাকা পাহাড়বেষ্টিত হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়ে মানুষজনদের বসবাস করতে হয়। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে উপজেলার কিছু জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তেমনি বিভিন্ন সড়কেও কাদাপানি জমে যানচলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।



এছাড়া পাহাড়ি ঢলে সম্প্রতি কাপ্তাই রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি এলাকায় চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গেছে। ফলে হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একই ইউনিয়নের চন্দ্রঘোনা ফেরীঘাটে পাঠাতন ডুবে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে বলে স্থানীয়রা জানায়। এছাড়া, কাপ্তাই উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে কাপ্তাই ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ সরোয়ার হোসেন জানান, শীলছড়ি এলাকায় পানি নির্গমনের ছড়ার সাথে বাজার মসজিদের যে ধারক দেয়ালটি ছিল, সেটি গত কয়েকদিনের বর্ষণে ভেঙে গেছে। ফলে মসজিদটি ঝুঁকিতে রয়েছে। শীলছড়ি ভেলবাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শাহাবুদ্দিন সওদাগরের স্ত্রী পারভীন বেগমের একমাত্র বাড়িসহ ওই এলাকার আরও কয়েকটি ঘরবাড়ি টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত যদি চলমান থাকে তবে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। তাছাড়া বর্ষা এলেই পাহাড়ি ঢলের সাথে আসা মাটিতে কাপ্তাই সড়কের শীলছড়ি এলাকায় মাটি জমে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত দুইদিন ধরে সড়কটি যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় রাস্তার মাটি অপসারণ করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, রাইখালী ইউপি সদস্য শেখ মোহাম্মদ নাসের জানান- অত্র ইউনিয়নের রিফিউজি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সতিশ বড়ুয়া ও জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িটি পাহাড় ধসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বর্তমানে পরিবারগুলো অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছে। রাইখালী ইউনিয়নে আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে এবং অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরির স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রাশেদ জানান, তাদের চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি পাহাড়ি ঢলে আবারও ভেঙে গেছে, যেটি গত কয়েকদিন আগে মেরামত করা হয়েছিলো। ভেঙে যাওয়ায় আবারও দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ।

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান, চলমান টানা বর্ষণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি মোকাকেলায় কাপ্তাইয়ে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড়ের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে প্রতিনিয়ত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে যাদের ঘরবাড়ি পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদেরকে সরকারি খাদ্য সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এবং অনান্য ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা দেওয়া হলে, তাদেরও সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত বিষয়: