রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-

প্রকাশিত: ১৭:১৬, ২২ জুন ২০২২

আপডেট: ১৮:১৩, ২২ জুন ২০২২

বিলাইছড়ির দূর্গম বড়থলিতে কেএনএফ’র হামলা, নিহত ৩

বিলাইছড়ির দূর্গম বড়থলিতে কেএনএফ’র হামলা, নিহত ৩
প্রতীকি ছবি 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা দুর্গম বড়থলি ইউনিয়নে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর হামলায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস’র সশস্ত্র গ্রুপ জেএলএ’র ৩ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহতের দাবি করছে কেএনএফ। বিষয়টি সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেজে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে নিয়েছে। 

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) হেডকোয়ার্টারস, ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট এর লে. কর্ণেল সলোমন এর বরাতে ফেসবুক পেজে পোস্টকৃত বার্তায় দাবি করা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কেএনএফ’র স্পেশ্যাল কমান্ডো ফোর্স হেডহান্টার টিম সন্ত্রাসী জেএসএস'র সশস্ত্র বাহিনী জেএলএ এর জাইজাম বেসমেন্ট ক্যাম্পে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে জেএলএ বাহিনীর ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে। তবে আহত অবস্থায় ট্রেইনিসহ অন্যরা সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।’

পোস্টকৃত বার্তায় কেএনএফ বলছে, ‘দীর্ঘদিন ধরে জুম্মল্যান্ড আর্মি জাইজাম এলাকায় স্থানীয় নিরীহ বম, খিয়াং, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। কিন্তু জেএলএ উক্ত গ্রামবাসীকে সেখান থেকে চলে যেতে হুমকি দেয় এবং নির্যাতন করে। যে কারণে ভয়ে স্থানীয়রা তাদের সহায় সম্পদ ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় নারীদের উপরে তারা নির্যাতন করছে এবং তাদের ক্যাম্পে আটকে রেখে রান্না করতে বাঁধ্য করছে। এছাড়াও জেএলএ ওই এলাকায় তাদের সশস্ত্র ক্যাম্প তৈরি করেছে মূলত টহলরত সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালানো এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে। জেএলএ’র এসব অপকর্ম বেশ কয়েকদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করেছে কেএনফ বাহিনী।’

কেএনএফ বলছে, ‘গত সপ্তাহে জেএলএ বাহিনী তাদের একটি ক্যাম্পে হামলা চালালে উল্টো জেএলএ’র ১৭ জন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং ৩০-৪০ জন আহত হন।’

এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস’র ইউনিয়ন সভাপতি আতুমং মারমা জানান- ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ‘কুকিচীন পার্টি’ নামক একটি নতুন সশস্ত্র সংগঠনের কর্মীরা বড়থলী ইউনিয়নের জাইজাম নতুন পাড়ায় এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত হয়। বিষয়টি আইনশৃংখলাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’

আতুমং মারমা জানান, ‘যারা মারা গেছেন তারা হলেন, বৃষচন্দ্র ত্রিপুরা, সুভাষ ত্রিপুরা এবং ধনরা ত্রিপুরা। এদের মধ্যে সুভাষ ত্রিপুরা এবং ধনরা ত্রিপুরা পিতা-পুত্র বলেও জানিয়েছেন তিনি।’

এই ব্যাপারে রাঙামাটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলছেন, ‘বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেখানে পৌঁঁছানো কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ। তাই আমরা এখনো নিশ্চিত কিছু বলতে পারছিনা।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিলাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেনকে বেশ কয়েক বার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি। 

বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ‘বড়থলির চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি বিলাইছড়ি থানাকে জানিয়েছি। এলাকাটি এতই দূর্গম যে সেখানে বিলাইছড়ি থেকে তিনদিন, পাশ্ববর্তী রুমা উপজেলা থেকে যেতেও দুইদিন সময় লাগে। পুরো বিষয়টি রুমা জোনকে অবহিত করা হয়েছে, তারা বিষয়টি দেখছে।’

জনপ্রিয়