রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ , ৪ চৈত্র ১৪৩০

কাপ্তাই প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১০:২১, ২ জুলাই ২০২২

শখের বসে কেক তৈরী ও বিক্রি করে অনেকটা স্বাবলম্বী সাথী

কাপ্তাইঃ

শখের বসে কেক তৈরী ও বিক্রি করে অনেকটা স্বাবলম্বী সাথী

অনেকটা শখের বসে কেক বানানো শুরু। তারপর ঘরে তৈরী কেকই আর্শিবাদ হিসেবে ধরা দেয়। নিজের হাতের তৈরি কেক বিক্রি করে অনেকটা স্বাবলম্বী হয়ে উঠা। ইতিমধ্যে কেক বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করে ফেলেছেন কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় বসবাসরত উম্মে হাবিবা সাথী।

ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা উম্মে হাবিবা সাথীর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ২০২০ সালে করোনাকালীন তিনি যখন অবসর সময় অতিবাহিত করছেন, তখন তার মাথায় চিন্তা এলো নিজ থেকে কিছু একটা করার। সেই চিন্তা থেকে তিনি অনেকটা শখের বশে মনের মাধুরী মিশিয়ে কেক বানাতে থাকেন। পরিবারের সদস্যরা তার বানানো কেকের প্রশংসা করলে এরপ্রতি তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন এক প্রতিবেশীর নিকট থেকে কেক বানানোর অর্ডার পেল। এক প্রকার ভয়ে ভয়ে অর্ডারের কেক তৈরি করে চমক লাগিয়ে দিল। তার বানানো প্রথম অর্ডারের কেকটি এতোটাই সুস্বাদু হয়েছিল, যারা খেয়েছে তারা সকলেই এর প্রশংসা করেছে। এতে তার বানানো কেকের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে কেক বানানোর জন্য আরও অর্ডার আসতে থাকে। এর ফাঁকে তিনি তার জমানো কিছু টাকা দিয়ে কেক তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় করে নেয়।

২০২১ সালে পুরোদমে অনলাইন এবং অফলাইনে হরেক রকমের কেকের অর্ডার পেয়ে এবং সফলভাবে তা তৈরি করে ধিরে ধিরে তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠে উম্মে হাবিবা সাথী। 

তিনি আরও জানান, একসময় তিনি মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ করে কেক বানানো শুরু করলেও বর্তমানে কেক বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা আয় করে ফেলেছেন সাথী। শুধু কেক তৈরিতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহানের অনুপ্রেরণায় তিনি একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে অংশ নিয়েছেন। যেখানে কাপ্তাই ইউনিয়নের অনেক নারী প্রশিক্ষণার্থীকে আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে কেক বানানোর কাজ শিখানো হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণ কর্মশালা ছাড়াও তিনি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন নারীকে কেক তৈরিতে পারদর্শী করে তুলেছেন। বর্তমানে তার ছাত্রীরাও কেক বানিয়ে তা বিক্রি করে বেশ অর্থ আয় করছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সাথী বলেন, তিনি বিভিন্ন প্রকারের কেক তৈরি করতে পারেন। তবে উল্লেখ যোগ্য হলো, চকলেট, ভেনিলা, স্ট্রবেরি, লেমন, অরেঞ্জ, বাটার কচ, পানদান ফ্রেভারের বিভিন্ন ডিজাইনের কেক। এছাড়া ছোট বাচ্চাদের জন্মদিনের ডল কেক, ডোরিমন, কারকেকসহ বিভিন্ন কার্টুনের কেক বানাতে পারদর্শী তিনি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তিনি কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ী হুবহু ডিজাইন সম্বলিত কেক তৈরি করে চমক লাগিয়ে দিতে পারেন তিনি।

এদিকে, বর্তমানে উম্মে হাবিবা সাথীর একটি নিজস্ব অনলাইন ব্যবসার জন্য 'Sathi's vlog' একটি ফেসবুক পেইজ রয়েছে। যেখানে তিনি কেক বিক্রির জন্য ভালো সাড়া পেয়েছেন। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো, নিজ হাতে তৈরী কেক বিক্রি করে আজ তিনি অনেকটা স্বাবলম্বী, এই ধারবাহিকতা তিনি আজীবন ধরে রাখতে চান। ভবিষ্যতে এই কেক বানানো নিয়ে তিনি আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করবেন। নিজের পাশাপাশি সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কাজ করতে আগ্রহী বলে তিনি জানিয়েছেন। তার এতটুকু স্বাবলম্বী হওয়ার পিছনে যাদের অবদান বেশী, বিশেষ করে তার স্বামী, পরিবারসহ সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়