রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

সুমন্ত চাকমা (জুরাছড়ি) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ৫ আগস্ট ২০২২

জুরাছড়িতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ; গত দুই মাসে ৩৭৯ জন আক্রান্ত

জুরাছড়িতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ; গত দুই মাসে ৩৭৯ জন আক্রান্ত

রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু'মাসে বিভিন্ন স্থানের লোকজন জ্বর, কাঁশিসহ শারীরিক দুর্বলতার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে চিকিৎসা নিতে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে তাদের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত জুলাই মাসে ২৫৬ জনের দেহে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পাওয়া গেছে। জুন মাসে পাওয়া যায় ১২৩ জনের দেহে।

দু'মাসে উপজেলার বিশেষ করে দুর্গম মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জুরাছড়ি ইউনিয়নের আমলা, থাচি, শালবাগান। বনযোগীছড়া ইউনিয়নে বহেরাছড়ি, বালিশ পাড়া। মৈদং ইউনিয়নে আমতলা, ভুয়াতলীছড়া, বাদলহাটছড়া, কাটালতলী, জামেরছড়ি। দুমদুম্যা ইউনিয়নে গবছড়ি, লাম্বাবাগছড়া, হরিণ হাট ছড়া, বড় ও ছোট করইদিয়া, ঘন্ডাছড়া, দুলুছড়ি, আদিয়াবছড়া,কান্দারাছড়া, এটছড়ি, কলাবনছড়া গ্রামের মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

দুমদুম্যা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য লক্ষি লাল চাকমা ও কালা চোখা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, “আমাদের এলাকায় সাপ্তাহে ৭/৮ জন করে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদেরকে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মী ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।”

দুমদুম্যা মৌজার প্রবীন হেডম্যান সমূর পাংখোয়া জানান, “গেল বছর দু'য়েক ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত কম হলেও এ বছর আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।”

বগাখালী গ্রামের শান্তি তঞ্চঙ্গ্যা, নঙগা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “আমরা নিজেও এ রোগে আক্রন্ত হয়ে গত কয়েকদিন ধরে ভুগছি। এখানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। আমাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন।”

বগাখালী কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রভাইডার অমর শান্তি চাকমা বলেন, “দৈনিক বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি ম্যালেরিয়া রোগী বেশী পাওয়া যাচ্ছে।”

দুমদুম্যা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমা বলেন, “হঠাৎ করে এ বছর ইউনিয়নের ঘরে ঘরে জ্বর ও কাঁশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কমিউনিটি ক্লিনিক ও ব্র্যাক কর্মীরা স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অনন্যা চাকমা বলেন, “জুন-জুলাই মাসে দুর্গম পাহাড়ে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। এর রোগের প্রাদুর্ভাব অক্টোবর মাস পর্যন্ত পাহাড়ে কম বেশী তাকতে পারে।”

তিনি আরো বলেন, “আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও রোগটি নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিকে পর্যন্ত ঔষধ সরবরাহ রয়েছে। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে দক্ষ সহকারি সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মীরা  চিকিৎসা সেবা নিবেদিত ভাবে দিয়ে যাচ্ছে।”

সর্বশেষ