রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১১:২২, ১০ আগস্ট ২০২২

‘উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও আদিবাসী আখ্যান’

‘উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও আদিবাসী আখ্যান’
ফাইল ছবি

প্রতিবছর পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ৯ আগস্ট ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ পালনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। যদিও বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত দেশের ‘উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’ কথাগুলো রয়েছে তবু পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের অন্তরের তাগিদ ও দুর্বলতা ‘আদিবাসী’ শব্দের প্রতি।

উল্লেখ্য, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে ‘আদিবাসী’ শব্দটি না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কাছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ উদযাপনে সরকারের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যদিকে সংবিধানের ‘উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘আদিবাসী ফোরাম’র দাবি এখানে ‘আদিবাসী জাতিসমূহ’ সংযুক্ত করা হোক। প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর কেউই বাংলাদেশে স্মরণাতীত কাল থেকে বসবাস করছে না।

“লক্ষণীয়, ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ অনুসারে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, সমতা, বৈষম্যহীনতা, সুশাসন এবং সরল বিশ্বাসের মূলনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। এজন্য পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন জরুরি। তাহলে ‘আদিবাসী’ বনাম ‘উপজাতি’ বিতর্ক থেকে আমরা মুক্ত হতে সক্ষম হবো।”

বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সব উপজাতি সম্প্রদায় প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার থেকে অষ্টাদশ (১৭২৭-১৭৩০) শতকের দিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বসবাস শুরু করে, যা স্মরণাতীত কাল পূর্বে ঘটেনি। মাত্র কয়েকশ বছর পূর্বে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। উপরন্তু বাংলাদেশের এই উপজাতীয়/ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর আদিনিবাস ভারত ও মিয়ানমারেও তাদের আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি অর্জনের নেপথ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে কথিত স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ গঠনের দূরভিসন্ধি রয়েছে বলে প্রতীয়মান। স্বার্থান্বেষী মহলের এ ধরনের তৎপরতা রাষ্ট্রের জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

পার্বত্য এলাকাবাসীর ‘আদিবাসী’ দাবির সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হলেও সেখানকার জননিরাপত্তার অবস্থা এখন শোচনীয়। তিনটি অস্ত্রধারী গ্রুপ নিজেদের মধ্যে দলাদলি ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কেউ-ই সেই গ্রুপের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এমনকি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেও মাসে মাসে চাঁদা দিতে হচ্ছে। অস্ত্রের মুখে অপহৃত হলে নগদ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়। নেতৃত্ব নিয়েও রয়েছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত।

ভোটের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত না হওয়ায় সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।পাহাড়ি বাঙালিদের তরফ থেকে ভোটার লিস্ট নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তিন পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনী নানা উন্নয়নমূলক কাজে নিয়োজিত থাকলেও সেখানকার সন্ত্রাসী দলগুলোর কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে অস্ত্র উদ্ধারে সক্ষম হয়নি তারা। সেখানকার অধিবাসীর ভাষ্য, নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে এবং সন্ত্রাস নির্মূলে সফলতা নেই সেনাবাহিনীর। এজন্য পার্বত্য এলাকার মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকা ও মানবতা অক্ষুণ্ন রাখা কখনো কখনো কঠিন হয়ে পড়ছে।

অথচ চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত জনপদের প্রত্যাশায় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট আছেন। বিপরীত দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা প্রতি বছর নানা বক্তব্য ও মন্তব্যে অসহযোগিতার মনোভাব প্রকাশ করে আসছেন। তিনি ‘আদিবাসী’ পরিচয় নিয়েও বিভ্রান্ত। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই মর্মে বাংলাদেশ সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কৃর্তক নির্দেশনা জারি করা হয়।

তার আগে ২৫ জুলাই ২০০৫ তারিখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগ কর্তৃক উপজাতি ও আদিবাসী বিতর্ক অবসানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের উপজাতি গোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে আখ্যায়িত না করে উপজাতি হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করে। ২৮ জানুয়ারি ২০১০ তারিখ বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন উপজাতির সম্প্রদায়কে কোনো অবস্থায়ই যেন উপজাতি এর পরিবর্তে আদিবাসী হিসেবে উল্লেখ করা না হয় সে বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করে।

পাহাড়ি নেতারা সম্ভবত আইএলও কনভেনশন-১০৭ এর অনুচ্ছেদ ১-এর উপঅনুচ্ছেদ ১(খ) বর্ণিত ‘আদিবাসী’ সংজ্ঞাটি মনোযোগ সহকারে পাঠ করেননি। সেখানে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীন দেশসমূহের আদিবাসী এবং ট্রাইবাল জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ক্ষেত্রে রাজ্য বিজয় কিংবা উপনিবেশ স্থাপনকালে এই দেশে কিংবা যে ভৌগোলিক ভূখণ্ডে দেশটি অবস্থিত সেখানে বসবাসকারী আদিবাসীদের উত্তরাধিকারী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ‘আদিবাসী’ বলে পরিগণিত এবং যারা, তাদের আইনসংগত মর্যাদা নির্বিশেষ নিজেদের জাতীয় আচার ও কৃষ্টির পরিবর্তে ওই সময়কার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আচার ব্যবহারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপন করে।’

অন্যদিকে ‘উপজাতি’ সম্পর্কে আইএলও কনভেনশন-১০৭ এর অনুচ্ছেদ ১-এর উপঅনুচ্ছেদ ১(ক) অংশে বলা হয়েছে- ‘স্বাধীন দেশসমূহের আদিবাসী এবং ট্রাইবাল জনগোষ্ঠীর সদস্যদের বেলায়, যাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা জাতীয় জনসমষ্টির অন্যান্য অংশের চেয়ে কম অগ্রসর এবং যাদের মর্যাদা সম্পূর্ণ কিংবা আংশিকভাবে তাদের নিজস্ব প্রথা কিংবা রীতি-নীতি অথবা বিশেষ আইন বা প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।’ অর্থাৎ ‘আদিবাসী’ হলো ‘সন অব দি সয়েল’। আর ‘উপজাতি’ হলো প্রধান জাতির অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র জাতি।

‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র ২০০৭’ অনুসারে তাদের ৪৬টি অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই ঘোষণাপত্রে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সংজ্ঞা নির্ধারিত হয়নি বা সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়নি। তাছাড়া ঘোষণাপত্রের ওপর সব সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সর্বসম্মত সমর্থন নেই। এ কারণে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকারবিষয়ক ঘোষণাপত্রের ওপর ভোট গ্রহণের সময় বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল। তবে যেকোনো অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের প্রতি সমর্থন রয়েছে বর্তমান সরকারের। সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান মানবাধিকার চুক্তির প্রতি অনুগত এবং উপজাতিদের অধিকার সমর্থন করে আসছেন।

এজন্য বলা হয়, ‘আদিবাসী’ শব্দটি সংবিধানে সংযোজিত হলে ২০০৭ সালের ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র’ মেনে নিতে হবে; যা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী। কারণ ঘোষণাপত্রের অনুচ্ছেদ-৪-এ আছে: ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার চর্চার বেলায়, তাদের অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন এবং স্বশাসিত সরকারের অধিকার রয়েছে ও তাদের স্বশাসনের কার্যাবলির জন্য অর্থায়নের পন্থা এবং উৎসের ক্ষেত্রেও অনুরূপ অধিকার রয়েছে।’

অর্থাৎ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করলে ও পার্বত্য অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে স্বশাসিত আদিবাসী শাসক নিজেদের অর্থায়নের উৎস হিসেবে সেখানকার খনিজ, বনজ ও অন্যান্য সম্পদ নিজেদের বলে চিন্তা করত। আবার অনুচ্ছেদ-৩৬-এ আছে, ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর, বিশেষত যারা আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা বিভক্ত হয়েছে, তাদের অন্য প্রান্তের নিজস্ব জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক কার্যক্রমসহ যোগাযোগ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রাখার ও উন্নয়নের অধিকার রয়েছে।’

রাষ্ট্র এই অধিকার কার্যকর সহযোগিতা প্রদান ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। ঘোষণাপত্রের এই নির্দেশ কোনো সরকারই মেনে নিতে পারবে না বলে মনে করা হয়। কারণ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক কার্যক্রম অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তাছাড়া বাংলাদেশে পার্বত্য অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে; যা ক্রমেই সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত করবে।

জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রের শেষ অনুচ্ছেদ-৪৬-এ সবার মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখানোর কথা বলা হয়েছে এবং এই কাজটি গত মহাজোট সরকার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছে। সংবিধানের ২৩ক অনুচ্ছেদে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে বিধান সন্নিবেশিত রয়েছে। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি তথা শান্তিচুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে পার্তব্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি স্বাক্ষর করে এবং চুক্তির খ খণ্ডের ০১ নং ধারায় জেলা পরিষদের আইনে ‘উপজাতি’ শব্দটি বলবৎ থাকবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে অদ্যাবধি সর্বমোট ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা পূর্ণ বাস্তবায়িত, ১৫টি আংশিক বাস্তবায়িত ও ৯টি প্রক্রিয়াধীন (বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০-২১)। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ২৪১টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয় এবং বর্তমানে ২০৭টি ক্যাম্প চলমান। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে পার্বত্য তিন জেলা পরিষদের নিকট ৩৩টি বিষয়ের মধ্যে রাঙ্গামাটি জেলায় ৩০টি, খাগড়াছড়ি জেলায় ৩০টি ও বান্দরবান জেলায় ২৮টি বিষয় হস্তান্তর করা হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। বর্তমান সরকার ২০১০ সালে নতুন করে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ নেয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃ ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যে জাতির গোষ্ঠীর সংখ্যায় বেশি এবং যাদের ভাষায় লিখিত রূপ আছে এমন ৫টি ভাষায় বই ছাপিয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। জানুয়ারি ২০১৭ সাল হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা, মারমা এবং ত্রিপুরা নৃ-গোষ্ঠীসমূহে নিজ ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের তাদের মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। সরকার তাদের সার্বিক উন্নয়নের উচ্চ শিক্ষায় কোটা সংরক্ষণসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

লক্ষণীয়, ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ অনুসারে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, সমতা, বৈষম্যহীনতা, সুশাসন এবং সরল বিশ্বাসের মূলনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। এজন্য পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন জরুরি। তাহলে ‘আদিবাসী’ বনাম ‘উপজাতি’ বিতর্ক থেকে আমরা মুক্ত হতে সক্ষম হবো।

লেখক: বঙ্গবন্ধু গবেষক এবং বিশিষ্ট লেখক, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

সর্বশেষ