রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৩০ জুলাই ২০২১

যে কারণে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ ও বিশেষ

যে কারণে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ ও বিশেষ

জুমার দিনের অনেক ফজিলত ও গুরুত্বের কথা একাধিকবার হাদিসে এসেছে। ছবি: সংগৃহীত


জুমার দিন বা শুক্রবার সপ্তাহের সেরা মহিমান্বিত দিন। এদিনকে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমা’। জাহিলি যুগে এ দিনটি ‘ইয়াওমুল আরুবাহ’ নামে পরিচিত ছিল। এর আরো নাম আছে। যেমন—১. সায়্যিদুল আইয়্যাম, ২. আফজালুল আইয়্যাম, ৩. ইয়াওমুল আজহার ও ৪. ইয়াওমুল আতিক।

মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদ এই দিনটি। পবিত্র আল-কোরআনে জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছেন এই দিনে। তাই মুসলিম উম্মাহ জুমার দিন শুক্রবার বিশেষ ইবাদতের লক্ষে মসজিদে একত্রিত হয়ে থাকে। জুমার দু’রাকাত ফরজ নামাজকে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।  

জুমার দিনের অনেক ফজিলত ও গুরুত্বের কথা একাধিকবার হাদিসে এসেছে। রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন, ‘এটা শুক্রবার, যে দিনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের পূর্ববর্তী জাতি থেকে পৃথক করেছেন। ইহুদিদের জন্য বিশেষ ইবাদতের দিন ছিল শনিবার, খ্রিস্টানদের জন্য ছিল রোববার। যখন আল্লাহতায়ালা আমাদের প্রেরণ করলেন, তখন শুক্রবারকে জুমার দিন হিসেবে পালন করতে নির্দেশ দিলেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৭৯৭)।

পবিত্র কোরআনে এ দিনটিকে ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষত্ব আলোচনা করা হলো—

যেসব কারণে শ্রেষ্ঠ শুক্রবার
আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার : আল্লাহ অন্য নবী-রাসূল ও তাদের উম্মতদের চেয়ে আমাদের উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে মনোনীত করেছেন।

কবরের আজাব লাঘব করা হয় : শুক্রবার মৃত্যুবরণ করা প্রকৃত মুসলিমের সৌভাগ্যের নিদর্শন। কেননা শুক্রবারের বরকতে এ দিনে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি কবরের আজাব থেকে মুক্তি লাভ করেন। হাদিসের ভাষায়, জুমার দিনে অথবা রাতে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে, তাহলে মহান আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৪)

সগিরা গুনাহ মোচন করা হয় :  কোনো মুসলিম যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং জুমার নামাজ নিয়মিত আদায় করে আর কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে শুক্রবারের শ্রেষ্ঠত্বের কারণে দুই জুমার মধ্যবর্তী সব সগিরা গোনাহ মোচন করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

শুক্রবারের রয়েছে পাঁচটি বিশেষত্ব : স্রষ্টার পক্ষ থেকে শুক্রবার শুধু উপহারই নয়; বরং আল্লাহ তায়ালা দিনটিকে নানা বিশেষত্বে ভরপুর করে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, ১. এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। ২. তাকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। ৩. এই দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৪. এই দিনে এমন একটি সময় আছে (আসরের পর), এই সময়ে কেউ হারাম জিনিস ছাড়া অন্য কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা মঞ্জুর করেন। ৫. আর এ দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)

পরকালে আমাদের অগ্রগামী হওয়ার নিদর্শন :  কিয়ামতের দিন অন্য নবীদের উম্মতদের চেয়ে আমরা থাকব সর্বদিক থেকে অগ্রগামী। রাসূল (সা.) বলেছেন, আমরা সর্বশেষ উম্মত; কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের আগে আর আমাদের দেওয়া হয়েছে সবার শেষে। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৬৩)

সুরা কাহফ দুই জুমার জ্যোতি : আল্লাহ এ দিনে আর একটি বিশেষ অফার দিয়েছেন সুরা কাহফের তিলাওয়াতের মধ্যে। যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়টি আলোকিত থাকবে। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় জ্যোতির্ময় হবে। (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৫৯৯৬)

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের বরকতপূর্ণ এই দিনে বেশি বেশি ইবাদত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়