রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:০০, ৫ মার্চ ২০২০

করোনা নয়, নতুন জরুরি অবস্থার মুখোমুখি পৃথিবী

করোনা নয়, নতুন জরুরি অবস্থার মুখোমুখি পৃথিবী

পৃথিবী এখন জরুরি অবস্থার মুখোমুখি


মাত্রাতিরিক্ত বা চাহিদার চেয়ে কম—কোনোটাই ভালো না। বৃষ্টি না হলে খরা হবে, বেশিতে বন্যা। এছাড়া জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ল যতটা সমস্যা, দ্রুত কমলেও কিন্তু ততাটই বিপদ। তাই সবকিছুতে সামঞ্জস্য চাই। গ্রিনহাউজ গ্যাস কার্বন ডাইঅক্সাইডের জন্যও এ নিয়ম প্রযোজ্য। পৃথিবীর আবহাওয়া প্রাণীদের জন্য বসবাসযোগ্য রেখেছে এ গ্যাসটিই। কিন্তু কার্বন ডাই অক্সাইড প্রতিনিয়ত বাড়ছেই। সে কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রাও। করোনাভাইরাস নয়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ে পৃথিবী এখন জরুরি অবস্থার মুখোমুখি।

গত ১০০ বছরে ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৮৫ ডিগ্রি (০.৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বেড়েছে। এ যাবৎকালের ১৪টি উষ্ণতম বছরের মধ্যে ১৩টিই রেকর্ড করা হয়েছে একবিংশ শতাব্দীতে। জলবায়ুর এমন বিপর্যয় এড়াতে গ্রীনহাউজ নির্গমনকে চারগুণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে, এমনটাই দাবি করছেন গবেষকরা।

বুধবার নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১০ সালে বিশ্ব ভাবলো গ্রিনহাউজ গ্যাসের বৈশ্বিক নির্গমনকে অর্ধেক করার জন্য ৩০ বছর সময় লাগবে। কিন্তু ২০২০ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করার জন্য এটি ওই পরিকল্পনা আগামী ১০ বছরেই সম্পন্ন করতে হবে। নয়তো পৃথিবী ভয়ানক কিছু দৃশ্যের মুখোমুখি হবে।

 

প্যারিস চুক্তির ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্য অবাস্তব বলে প্রমাণিত হয়েছে

 

প্যারিস চুক্তির ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্য অবাস্তব বলে প্রমাণিত হয়েছে

আশির দশকেও বছরে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের গড় বৃদ্ধি ছিল মাত্র ১.৬ পিপিএম। অথচ একাধিক জলবায়ু চুক্তি আর অসংখ্য পরিবেশ বিষয়ক সংগঠনের তৎপরতার পরও গত ১০ বছরে ২.২ পিপিএম গড়ে বাড়ছে কার্বন ডাইঅক্সাইড! যদি এ গ্যাসের বৃদ্ধি বর্তমান গতিতেই চলমান থাকে, তাহলে ২০৩৮ সালের মধ্যে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ৪৫০ পিপিএম ছাড়াবে!

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী শীর্ষ সাতটি নির্গমনকারী দেশ হলো- চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিল। পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশই মোট গ্রিনহাউজ গ্যাসের ৮০ শতাংশ নির্গত করে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার একেবারেই কী বন্ধ করে দেয়া সম্ভব এসব দেশের পক্ষে? ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ২০১৫’ এই অলীক সমাধানের দিকে না এগোলেও অন্তত গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ সহনশীল মাত্রায় নামিয়ে আনার কথা বলে। ‘ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বা আইপিসিসি এ শতকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি সর্বোচ্চ ২° সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

 

পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশই মোট গ্রিনহাউজ গ্যাসের ৮০ শতাংশ নির্গত করে

 

 

জাতিসংঘের আবহাওয়া দফতর বলছে, পৃথিবী এখন ভীতিকর গতিতে এমন এক যুগে প্রবেশ করছে যখন চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া এবং সমুদ্রের পানির স্তর বৃদ্ধিসহ কী ঘটবে কিছুই বলা যায় না। তাদের ধারণা গত আট লক্ষ বছরের মধ্যে পৃথিবীর বাতাসে কার্বনডাই অক্সাইড মিখেন এবং নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ এখন সবচাইতে বেশি।

প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে, আমাদের হাতে আর দশ বছর সময় নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বিগত দশকের রাজনৈতিক ব্যর্থতা সবচেয়ে বেশি দায়ি। এমনটা চলতে থাকলে খরা, বন্যা, ঝড়, তাপপ্রবাহ ইত্যাদি প্রকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়া, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, ফসল উৎপাদনের ধারায় পরিবর্তন, সুপেয় পানির সংকট ইত্যাদি অনেক ধরণের সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়