রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৯ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১৯ মে ২০২০

অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নাকি সেশনজট? কী বলছেন শিক্ষার্থীরা

অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নাকি সেশনজট? কী বলছেন শিক্ষার্থীরা

পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী


অর্পণ দাস, কৃষি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

করোনা সংকটে যেভাবে আমাদের নতুন ভাবাচ্ছে, তেমনই সেশনজটও। সব শিক্ষার্থীই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাসেরও সাড়া দিচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। কারণ এসব শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশই গ্রামাঞ্চলের। যেখানে ইন্টারনেট সুবিধা নেই বললেই চলে। অনেক অঞ্চলে ঘরে বসে মোবাইল নেটওয়ার্কিংও পাওয়া যায় না। সেখানে মোবাইলে কথা বলার জন্য খোলা স্থানে নেটওয়ার্কের সন্ধান করতে হয়। সেখান থেকে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়া প্রকৃতপক্ষে সম্ভবও নয়। ইন্টারনেটের মেগাবাইটের খরচতো আছেই। 

অন্বেষা বিশ্বাস, আইন বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেশনজটের আশংকা বাড়ছে। অনেক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাসও শুরু করেছে। যদিও যেকোনো জরুরি অবস্থায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষাব্যবস্থা সচল রাখা নি:সন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অস্বচ্ছল, যাদের মোবাইল ডাটা খরচ করে অনলাইন ক্লাস করা এখন নিছক বিলাসিতা। তবুও এটা সত্য যে ‘অনলাইন ক্লাস’ আমাদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। 

নিলয় সরকার, পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

করোনাভাইরাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন এই সেশনজট নিরশনে অনলাইন ক্লাস পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কিন্তু এখন সত্যি বলতে সব শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ডাটা খরচ করা সম্ভব হবে না, তাছাড়া অনেকের হয়তো অনলাইন ক্লাস করার মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসও নেই। এমন অবস্থায় অনলাইন ক্লাস করা আসলেই অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব। অপরদিকে দীর্ঘ সময় লকডাউনে থাকলে আমরা পড়ব ছয়মাসের সেশনজটে। পৃথিবীর অবস্থা ঠিক হলে আমরা হয়তো বেশি ক্লাস করে, সরকারি ছুটি কমিয়ে এনে এই জটটা হয়তো কভার করতে পারব। তাই এখন সব শিক্ষার্থীর দরকার পাশে দাঁড়ানোর।

যুবায়ের আহমেদ, কৃষি অনুষদ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলবে এমন কোনো আশা ও করা যাচ্ছে না। সেই ক্ষেত্রে লাখ-লাখ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন শেষ করতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষা ও ক্লাস কার্যক্রম চলমান কিন্তু আমাদের মতো টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে অনলাইনে শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো একটু মুশকিল, কারণ আমাদের শিক্ষা-কার্যক্রম অনেকটা মাঠ ও ল্যাব নির্ভর। তাই অনলাইনে শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম চালালে আমাদের ভালো বেগ পেতে হবে। 

সাদিয়া আফরোজ, আইন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের হাতে এখন দুটো অপশন। অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা না হয় সেশনজট। বর্তমানে বিভিন্ন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষাকে ফলো করলেও পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলো পিছিয়ে পড়েছে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য অনলাইন ভিত্তিক পড়াশোনা অনেকটা কষ্টসাধ্য। আমরা অনলাইন ক্লাস করা শুরু করলে দেখা যাবে আমাদের ক্লাসের ৪০% স্টুডেন্টই সেখানে অনুপস্থিত। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে থাকে। তাদের অনেকের এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা হয়তো ওতোটা উন্নত নয় বা পরিবারিক অবস্থাও অনেকের এতোটা ভালো না যে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা পেছনে ফেলে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হবে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়