রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ , ৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ১ অক্টোবর ২০২০

আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক হলেন বাংলাদেশি ড. তাহমিদ

আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক হলেন বাংলাদেশি ড. তাহমিদ

ড. তাহমিদ আহমেদ


প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন ড. তাহমিদ আহমেদ। আইসিডিডিআরবি’র আন্তর্জাতিক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ড. তাহমিদ আহমেদকে পরবর্তী নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

ড. আহমেদ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী পরিচালক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রফেসর ক্লেমেন্সের স্থলাভিষিক্ত হবেন। যিনি ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়োগ প্রাপ্তির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ড. তাহমিদ আহমেদ কোভিড-১৯ বিষয়ে গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। 

তিনি বলেন, এই চলমান মহামারি জনস্বাস্থ্যকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের অপরিসীম গুরুত্বকে বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেয়।

ড. আহমেদ তার গবেষণামূলক কাজ এবং শিশু অপুষ্টি রোধ ও এর সহজতর চিকিৎসা ব্যবস্থা সন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তার অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বুলেটরি পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন, কমনওয়েলথ সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলোজি অ্যান্ড নিউট্রিশন এবং ভারতীয় পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য সংস্থার পদক পেয়েছেন। ২০১৮ সালে ড. আহমেদ ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ডেভেলপমেন্ট ট্রান্সফর্মারস পুরস্কার বিজয়ী। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ পদক গ্রহণ করেন।

ড. তাহমিদ আহমেদ আইসিডিডিআরবি’র ৬০ বছরের গৌরবময় ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বাহী পরিচালক পদ অলংকৃত করবেন। 

এ বিষয়ে ড. আহমেদ বলেন, আইসিডিডিআরবি’র প্রথম বাংলাদেশি নির্বাহী পরিচালক হওয়া নিঃসন্দেহে একটি গৌরবের বিষয়। আইসিডিডিআরবি একটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল এবং থাকবে। আমি দেশি-বিদেশি ৪ হাজার জনেরও অধিক কর্মীর একটি দলকে নেতৃত্ব দেয়া এবং প্রতিষ্ঠানটিকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে গর্বিত, যা আমাদের গবেষণার ব্যাপ্তিকে আরো বিস্তৃত করবে বলে আশাবাদী।

ড. আহমেদ ১৯৮৫ সালে আইসিডিডিআরবি’তে যোগ দেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিভিন্ন দায়িত্বভার পালন করেছেন এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে আইসিডিডিআরবি’র নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর জন ক্লেমেন্সের নির্দেশনায় ড. আহমেদ আইসিডিডিআরবি’র ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সহকর্মীদের মধ্যে ড. আহমেদ তার দৃঢ় নৈতিকতা এবং তরুণ বিজ্ঞানীদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য সমাদৃত। তিনি একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, যিনি বিশ্ব জনস্বাস্থ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে বেশ সম্মানিত।

আইসিডিডিআরবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ন্যান্সি ওয়াই চেং বলেন, আমি নিশ্চিত তার নেতৃত্বে আইসিডিডিআরবি বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এবং মানুষের স্বাস্থ্য সুবিধা উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

শিক্ষা:

ড. তাহমিদ আহমেদ ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল এবং নটর ডেম কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি শুরুতে বাংলাদেশের গ্রামীণ একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করেছেন। এরপরে ১৯৮৫ সালে আইসিডিডিআরবিতে যোগ দেন। তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালে আবাসিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে জাপানের সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। 

২০১৫ সাল থেকে তিনি আইসিডিডিআরবি’র নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ে গবেষণার পাশাপাশি আইসিডিডিআরবি পরিচালিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ডায়রিয়ার হাসপাতাল-ঢাকা হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রসমূহের তত্ত্বাবধান করেন। কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতেই তিনি আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া ড. আহমেদ ইউনিসেফের সহযোগিতায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য আইসিডিডিআরবি’র টেকনাফে অবস্থিত ক্যাম্পাসে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি কোভিড-১৯ আইসোলেশন ও ট্রিটমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

অর্জন:

২০০৩ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি ড. তাহমিদ আহমেদকে মেডিকেল সায়েন্সে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ড. সুলতান আহমেদ চৌধুরী স্বর্ণপদক প্রদান করেছে। ২০১৮ সালে ড. আহমেদ ইসলামী ব্যাংক ডেভেলপমেন্ট ট্রান্সফর্মারস পুরস্কার পেয়েছেন।

আলোকিত রাঙামাটি