রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ৩০ মে ২০২১

উৎপাদিত কাগজ নিয়মিত বিক্রি হলে ঘুরে দাঁড়াবে কেপিএম

উৎপাদিত কাগজ নিয়মিত বিক্রি হলে ঘুরে দাঁড়াবে কেপিএম

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ- বাংলাদেশ কেমিক্যালস ইন্ড্রাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এর অন্যতম কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম)। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও করোনাকালীন সময়েও মিলে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। লোকবল কম থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে দৈনিক গড়ে ২০ মেট্রিকটন কাগজ উৎপাদন করছে এই মিলটি। পাকিস্তানের দাউদ কোম্পানি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মিলটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা একসময় ছিল ৩০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্ত বর্তমানে দীর্ঘদিনের পুরাতন জরাজীর্ণ মেশিনের কারণে বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। 

কেপিএম ব্যবস্থাপনা কতৃর্পক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মিলের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৫-২০ হাজার মেট্রিকটন হলেও কাঁচামাল সংকটসহ নানাবিধ কারনে গত অর্থ বছরে ৬ হাজার মেট্রিকটন কাগজ উৎপাদন করেছে মিলটি। তবে এই ৬ হাজার মেট্রিক টন থেকে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিকটন কাগজ কেপিএমের গোডাউনে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে শ্রমিক কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এসব কাগজ বিক্রি হলে কেপিএম আবারও ঘুঁরে দাঁড়াতে পারবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন।

মিলের অপর এক সূত্রে জানা গেছে, দেশের মধ্যে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেপিএমের কাগজের মান ছিল সবচেয়ে সেরা, ফলে দেশের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই মিলের কাগজের ব্যাপক চাহিদা ছিল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যপুস্তক ছাপাতে এই মিলের কাগজ ব্যবহার করা হতো, তাই কেপিএমের সিংহভাগ কাগজ কিনতো সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল কারিকুলাম ফর টেক্মট বোর্ড (এনসিটিবি)।

এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ স্টেশেনারি অফিস (বিএসও), শিক্ষা বোর্ড কেপিএম থেকে কাগজ ক্রয় করতো। কিন্ত যথেষ্ট মানসম্মত হওয়া সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠান বিগত ২ বছর ধরে কেপিএম হতে কাগজ কিনছে না, ফলে উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেপিএম প্রতিদিন ২০ টনের অধিক কাগজ উৎপাদনে যেতে পারছেনা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি এসব প্রতিষ্ঠান কেপিএম হতে নিয়মিত কাগজ ক্রয় করতো তাহলে কেপিএম দৈনিক উৎপাদন আরো বাড়াতে পারতো বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীরা।

কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস জানান, কেপিএমকে আবারও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকার, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে কেপিএমের কর্মকর্তা, শ্রমিক কর্মচারীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এই মিলটাকে আবারও আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০ মে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মোঃ এহছানে এলাহী কর্ণফুলী পেপার মিল পরিদর্শন করেন, এসময় তিনি কেপিএমকে কিভাবে আবারও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

কেপিএমের এমডি আরো জানান, সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান যদি কেপিএম হতে প্রতিনিয়ত কাগজ ক্রয় করে তাহলে আমরা লাভের মুখ দেখবো। 

কেপিএম সিবিএ'র সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বর্তমানে কেপিএমের ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত দক্ষ ও আন্তরিক। কেপিএমের কাগজের মান আগের মতো আছে, কিন্ত এনসিটিবিসহ অন্যান্য কাগজ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান যদি কেপিএম হতে নিয়মিত কাগজ ক্রয় করে, তাহলে মিলটি ঘুঁরে দাঁড়াবে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়