একই স্থানে কবর-শ্মশান ঘাট
ছবি: সংগৃহীত
বগুড়ার নন্দীগ্রামের পাঁচ ইউপি ও একটি পৌরসভা মিলে মোট জনসংখ্যা প্রায় দুই লাখ। এখানে নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ তারা মিলেমিশে একই সমাজে বসবাস করছে। নন্দীগ্রামের অসাম্প্রদায়িকতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো একই স্থানে মুসলমানদের কবরস্থান ও হিন্দুদের শ্মশান ঘাট।
প্রায় দুইশ বছর ধরে সম্প্রীতির নিদর্শন বহন করছে পূর্ব কুচাঁইকুড়িতে পাশাপাশি গড়ে ওঠা মুসলমানদের কবরস্থান ও হিন্দুদের শ্মশান ঘাট। নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার (বগুড়া-নাটোর) মহাসড়কের কাছে পূর্ব কুচাঁইকুড়িতে এ কবরস্থান ও শ্মশান ঘাট। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ওই স্থানে মুসলমান ও হিন্দুদের মরদেহ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ীই দাফন ও সৎকার করা হয়। দশটি গ্রামে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। ধর্ম নিয়ে তাদের মধ্য কোনো মতবিরোধ নেই বলে দাবি করেন এলাকাবাসীরা।
কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটে তারা সম্প্রীতির বন্ধন থেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে। কবর স্থানের কারো দাফন ও শ্মশানে কারো সৎকার করার সময় একে অপরকে সহযোগিতা করে। তবে কখন এই কবরস্থান ও শ্মশান ঘাট স্থাপিত হয়েছে এ বিষয়টি কারো জানা নেই।
নন্দীগ্রাম পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন বলেন, যুগ যুগ ধরে এখানে মুসলমান দাফন ও হিন্দুদের সৎকার করা হচ্ছে। এ নিয়ে কখনও কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়নি। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মের নিময়-নীতি মেনে দাফন ও সৎকার করে আসছে। এখানে কোন মত পার্থক্য নেই।
পুর্ব কুচাইকুড়ি মন্দিরের পুরোহিত রঞ্জিত কুমার জানান, কবর ও শ্মশান পাশাপাশি অবস্থিত। পূর্ব পুরুষরা সম্প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ পাশাপাশি এই কবরস্থান ও শ্মশান ঘাট করে গেছেন। দুই ধর্মের মানুষ এখানে তাদের নিজ ধর্ম অনুযায়ী দাফন ও সৎকার করে। এখানে ধর্ম পালনে কারো কোনো সমস্যা হয় না।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম পৌরমেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জানান, পূর্ব পুরুষরা এটি স্থাপন করে গেছেন। তখন থেকে একই স্থানে দাফন ও সৎকার হচ্ছে। নন্দীগ্রাম পৌরসভার অর্থায়নে কুচাইকুড়ি কবর ও শ্মশানে যাওয়ার জন্য ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরসিসি সড়ক নির্মিত হবে। এছাড়াও শ্মশানের জন্য চুল্লি ও কবর স্থানের পুকুর ঘাটের কাজ চলছে।
তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনাও আছে।
আলোকিত রাঙামাটি