রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১৪ মে ২০২০

কপ্তাইয়ে নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে

কপ্তাইয়ে নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ- কাপ্তাইয়ের ৩টি নন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চন্দ্রঘোনা কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়, সাক্রাছড়ি জুনিয়র হাই স্কুল এবং ভালুকিয়া নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষক কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুদান হতে শিক্ষক কর্মচারীদের মাসিক বেতন পরিশোধ করা হতো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গত ১৭ মার্চ হতে সরকার কর্তৃক দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে কাপ্তাইয়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ বন্ধ হলেও সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং এমপিও (মান্থলি পে অর্ডার) ভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা সরকারি বেতন ঠিকই পেয়ে আসছে। কিন্তু নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা এর আওতার বাহিরে থাকায় বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কেআরসি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম জানান, তাদের স্কুলের ১৪ জন শিক্ষক কর্মচারী গত মার্চ মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি' হতে কিছু বেতন পেয়েছেন। কিন্ত বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় এখন সেই সুযোগ আর নেই। তিনি জানান, সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার রবিবার (১০ মে) তাদের প্রত্যেকের জন্য চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী প্রেরণ করেছেন। এছাড়া ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ হতে ৮ জন শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার স্বরুপ চাল, ডাল, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

কেআরসি স্কুলের শিক্ষক কাজী সালেহ আহমেদ এবং জামাল উদ্দিন জানান, তারা রাঙামাটির সাংসদ মহোদয় এবং ইউনিয়ন পরিষদ হতে কিছু সহায়তা পেয়েছে, কিন্ত তা দিয়ে ২ মাসের অধিক সময় পরিবার পরিজন নিয়ে চলা খুবই কষ্টকর। তারা সকলেই সরকারের নিকট নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রনোদনা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

এদিকে, ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাক্রাছড়ি জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের ৯ জন শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা এখনো কোন সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পায়নি।

অপরদিকে, রাইখালী ইউনিয়নের ভালুকিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের ৭ জন শিক্ষক কর্মচারী সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে টিউশন ফি' হতে প্রদত্ত সামান্য বেতন পেয়েছেন। তারাও কোন সরকারি সহায়তা পায়নি। ফলে চরম আর্থিক দৈন্যতায় ভুগছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা।

এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহমেদ জানান, এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি' হতে পাওয়া বেতন দিয়ে তাদের বেতন ভাতা গ্রহণ করেন। কিন্তু বর্তমান এই প্রেক্ষিতে বেতন পাচ্ছেনা বিধায় উক্ত শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তিনি সকলকে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এদিকে, বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল জানান, আমরা কোন প্রতিষ্ঠানকে সরকারি সহায়তা বরাদ্দ না দিলেও প্রত্যেকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে তাদের সহায়তা করছি। তবে এরপরও কেউ যদি বাদ যায়, তাহলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান তালিকা পাঠালে আমরা সকলকে সহায়তা করবো বলে তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষকগণ সকলের নিকট অনুরোধ জানান।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ