রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ২৭ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন যেভাবে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন যেভাবে

ডা. সাদেকুল ইসলাম তালুকদার

করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড-১৯) একটি নতুন ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট সংক্রামক রোগ। এই রোগটি শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার মতো উপসর্গ, যেমন কাশি, জ্বর এবং আরও গুরুতর ক্ষেত্রে শ্বাস নিতে অসুবিধা করে।

করোনাভাইরাস রোগ প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে যখন তারা কাশি বা হাঁচি দেয়। কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো বস্তু স্পর্শ করে যার মধ্যে ভাইরাস রয়েছে, তারপর তাদের চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করে তাহলে সেই ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

ভাইরাসটি দেখতে কেমন?

এই ভাইরাসটি অতিক্ষুদ্র, খালি চোখে তো দেখা যায়ই না এমনকি সাধারণ মাইক্রোস্কোপ দিয়েও দেখা যায় না। এটি দেখা যায় ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে। তবে, এটি দেখতে খুবই চমৎকার। রাজার রাজমুকুটের মতো। রাজমুকুটে যেমন স্বর্ণ-মনি-মুক্তা খচিত কাঁটা থাকে তেমনি এই ভাইরাসের গায়েও সুন্দর সুন্দর কাঁটা আছে। রাজমুকুটের ল্যাটিন শব্দ হলো করোনা (corona)। তাই বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে করোনাভাইরাস। ভাইরাসটি আরএনএ দিয়ে তৈরি। তবে মানুষের শরীর থেকে লিপিড বাইলেয়ার ইনভেলাপ নিয়ে এর চারিদিকে আবরণ তৈরি করে। এই আবরণে ভাইরাসের কাঁটা গেথে থাকে এবং ঝিল্লি লেগে থাকে। কাছিম যেমন খাপরির ভেতর অবস্থান করে নিজেকে রক্ষা করে, তেমনি এই ভাইরাস ইনভেলাপের ভেতর অবস্থান করে নিজেকে রক্ষা করে। ভাইরাসটির আকার গোলাকার এবং গড় আকার ১২৫ এনএম (ন্যানো মিটার)। এক মিলিমিটারের ১০০০ ভাগের একভাগ হলো ১ মাইক্রোমিটার। এক মাইক্রোমিটারের ১০০০ ভাগের একভাগ হলো ১ ন্যানো মিটার। তাহলে এখন বুঝে নিন ভাইরাস টি কত খুদ্র!

ভাইরসটি বিস্তার লাভ করে কেমনে?

ভাইরাসটি মানুষের কোষে প্রবেশ করে আনকোটেড হয়। অর্থাৎ এনভেলাপ খুলে ফেলে। জিনোমের প্রতিলিপি তৈরি করে এবং ট্রান্সক্রিপশন ও বাডিং করে নতুন ভাইরন তৈরি করে। মানুষের (হোস্ট) কোষ ঝিল্লি থেকে লিপিড বাইলেয়ার নিয়ে কোট গায় দিয়ে নতুন ভাইরাস গঠন করে।

কারও এই রোগ হওয়ার পর কি প্রতিরক্ষা তৈরি হয়?

ভাইরাস সংক্রমণ থেকে ভালো হওয়ার পর রোগীর শরীরের রক্তরস (সিরাম) এবং অনুনাসিক স্রাবগুলোতে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখা গেছে। এদের দুই বছরের মতো প্রতিরক্ষা (Immunity) থাকে।

কখন এই রোগ হতে পারে?

শীতকালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। স্থানীয় মহামারি আকার ধারণ করে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসব্যপী। একই রকম ভাইরাস (সেরোটাইপ) বেশ কয়েক বছর পরও কোনো অঞ্চলে ফিরে আসতে পারে।

 

jagonews24

 

রোগটি নির্ণয় করা যায় কীভাবে?

করোনাভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট সর্দি যেকোনো ব্যক্তির অন্যান্য সর্দি থেকে ক্লিনিক্যালি আলাদা করা যায় না। অ্যান্টিবডি টাইটার দেখে পরীক্ষাগারে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে। ভাইরাসটি কালচার করা খুবই কঠিন। নিউক্লিক অ্যাসিড হাইব্রিডাইজেশন পরীক্ষা (পিসিআর) করে এখন এই ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করা হচ্ছে। আমাদের দেশের অনেক পরীক্ষাগারে পিসিআর করার ব্যবস্থা আছে। এসব পরীক্ষারে রোগীর গলা ও নাক থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করা সম্ভব।

এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধে করণীয় কী?

চিকিৎসা দিতে হবে সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই লক্ষণ অনুযায়ী। এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন বা নির্দিষ্ট ওষুধ পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্যকর পদক্ষেপগুলো সংক্রমণ হার হ্রাস করে।

কী কী স্বাস্থ্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে?

ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, মুখের স্পর্শ এড়াতে হবে মাস্ক পরে এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ (৩ ফুট দূরে) এড়িয়ে নিজেকে সুরক্ষা করতে হবে।

সূত্রঃ jagonews24.com

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়