রাঙামাটি । শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেকিং

পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : কাপ্তাইয়ে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাপার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে : বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপিসাজেকে নিহত ৯ জনের ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর, আহত ২ শ্রমিককে ঢাকায় প্রেরণকাপ্তাই হ্রদে ৩ মাসের জন্য মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরুকেএনএফ প্রধান নাথান বমের স্ত্রী ‘নিখোঁজ’সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯, পরিচয় মিলেছে ২ জনের!তীব্র তাপদাহ: জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণায় নেমেছে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগকাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ ইউনিটের ৪টিই বন্ধ, উৎপাদন কমে ৩০ মেগাওয়াট

বিশেষ প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ১৬ এপ্রিল ২০২০

করোনার দিনে কোথায় সন্তু লারমা? প্লিজ আগে মানবিক হউন!

করোনার দিনে কোথায় সন্তু লারমা? প্লিজ আগে মানবিক হউন!
ফাইল ফটো

কৌতুহলি মনে একটা সহজ প্রশ্ন বিশ্বের এই ভয়াবহ দূর্যোগ মুহূর্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) এখন কোথায়? কোয়ারেন্টাইনে না লক ডাউনে! নাকি করোনার ভয়ে নিজেই আছেন আত্মগোপনে!

বাঙালীর কথা বাদই দিলাম, উনার কি উচিত ছিলনা তার জনগণের (তার ভাষায়) পাশে থাকা? বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে চরম বিপদে থাকা দূর্গম এলাকার পার্বত্য জনগণের খোঁজ খবর নেওয়া? উনার কি উচিত ছিলোনা সাজেকে হামে আক্রান্ত বাচ্চা ও পরিবার গুলোর পাশে থাকা। উনার কি উচিত ছিলোনা বিজুর এ সময়ে জনগণের পাশে থাকা!

আমরা সকলেই জানি সন্তু লারমার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) ভেঙে এখন পাহাড়িদের চারটি দল সক্রিয় রয়েছে যেমন, [ জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও জেএসএস (সংস্কারপন্থি) ]। সত্যিকার অর্থে এসব দলের একটাই কাজ আর তা হলো পাহাড়ে চাঁদাবাজি এবং এ চাঁদাবাজিকে যায়েজ করতে তারা উপজাতীদের নানা রকম কথা বলে নানান মন্ত্রে দীক্ষিত করার চেষ্টা করছে। এ কথা দিনের মতো সত্য যে, মূলত চাঁদাবাজির কোন্দলে পাহাড়ে রক্ত ঝরছে প্রায় সময়ই। এই তো ১০/৪/২০২০ (শুক্রবার রাতে)  ও  জুড়াছড়িতে হেমন্ত চাকমা (৩২) নামে তরুণ এক ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সুত্রঃ আলোকিত রাঙ্গামাটি ।

এদিকে গতকাল বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান সংস্কার কাজে জেএসএস (সন্তু) দলের হয়ে চাঁদাবাজি করতে এসে জনগণের হাতে আটক হয়েছে এক বাঙালী যুবক। তার নাম ফারুক হোসেন (৩০) । সূত্রঃ আলোকিত রাঙ্গামাটি।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবির এর আগে বিভিন্ন সময়ই গণমাধ্যম কে বলেছেন “পাহাড়ে প্রায় হত্যাকাণ্ড গুলো চাঁদা আর আধিপত্যের জন্য হয়।” তাছাড়া পাহাড়ে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষই জানে ও দেখেছে  পাহাড়ে হত্যাকাণ্ড গুলো মুলত চাঁদা সংশ্লিষ্ট। সত্য এই, এসব হত্যাকাণ্ড গুলোর দায়ভার কোন ভাবেই আঞ্চলিক দল গুলো অস্বীকার করতে পারে না।

চলে আসি মূল প্রসংঙ্গে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুরো বিশ্ব আজ থমকে গেছে। সব ধরণের উৎপাদন বন্ধ। জনগণ আজ ঘরে ঘরে নিজেদের আটকে নিয়েছে মুক্তির আশায়। কাজ কর্ম বন্ধ তাই নেমে এসেছে অভাব আর ক্ষুধা। পার্বত্য অঞ্চল দূর্গম আর পিছিয়ে পড়া অঞ্চল তাই দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় এখানের পরিস্থিতি আরো কঠিন। পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক যে  চারটি সশস্ত্র সংগঠন প্রতিবছর প্রায় আনুমানিক ৪০০ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে তা দিয়ে তারা মুলত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা, লবিং, অস্ত্র সংগ্রহ এবং নেতাদের পকেট ভারী করে।

অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে  এ দুঃসময়ে তারা কেও সাধারণ পাহাড়ী জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। (খুবই সামন্য দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া)। সাজেকে হামে আক্রান্ত বাচ্চা ও পরিবার গুলোর পাশে সবার আগে থাকার কথা সকল আঞ্চলিক দল গুলো। অথচ আমরা দেখলাম পাশে এসে দাঁড়িয়েছি বিজিবি আর সেনাবাহিনী (আঞ্চলিক দল গুলো যাদের সরাসরি শত্রু ভাবে)।

এসবের অর্থ একদম পরিষ্কার, পাহাড়ে অস্ত্রধরে, চরকি ঘুরিয়ে, জুজুর ভয় দেখিয়ে জোর করে চাঁদা আদায় করে নেতাদের পকেট ভারী করা। পাহাড়ে বসবাসকারীদের চুষে নিংড়ে খাওয়ার জন্যই কেবল জন্মিয়েছে এসব আঞ্চলিক দল।
-------------------------------------------------------------------------------------------------
রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবির এর আগে বিভিন্ন সময়ই গণমাধ্যম কে বলেছেন “পাহাড়ে প্রায় হত্যাকাণ্ড গুলো চাঁদা আর আধিপত্যের জন্য হয়।”
---------------------------------------------------------------------------------------------------

নেতৃত্বের কিছুটা গুণাগুন ছিল মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমার। যার ছিটাফোটা ও নেই সন্তু লারমার মধ্যে। রাষ্ট্রীয় বা সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করে এ সন্তু লারমা। রাষ্ট্রীয় টাকায় চলাফেরা সহ নিরাপত্তা, জাতীয় পতাকা বহণকারী গাড়ি, আলিশান বাড়ি-সবকিছুই ভোগ করছেন তিনি। অথচ, অবাক হওয়ার মত বিষয় হচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড নেননি এ সন্তু লারমা।

একজন প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার সাংবিধানিক পদের এই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র না নেওয়া বা না থাকাটা রাষ্ট্রের জন্য অপমান জনক ও অতি বিস্ময়কর বলেই মনে করছেন সকলেই। অথচ তাকে বা তার বহনকারী গাড়ী দেখলেই মাথা তুলে দিতে হয় স্যালুট! অনেক বিশ্লেষকরাই বলছেন দেশের প্রতি তার আনুগত্য বা দায়বদ্ধতা না থাকারই প্রমাণ এই জাতীয় পরিচয়পত্র না নেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু তিনি দেদারসে জাতীয় এবং আন্তজার্তিক মিডিয়ায় দেশে ও সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন।

আমরা চাই সন্তু লারমা নেতা হউক, নেতৃত্বের গুনাগুন ধারী হউক এবং মানবিক হউক। বিপদে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াক, মানবতার কথা বলুক। আবার ও বলি, সন্তু লারমা প্লিজ সবার আগে মানবিক হউন।

আলোকিত রাঙামাটি

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়