রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-

প্রকাশিত: ০১:১০, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

কাউখালীতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

কাউখালীতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

ছবি:- আলোকিত রাঙ্গামাটি 


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- কাউখালী-ঘাগড়া সংযোগ সড়ক চেলাছড়া রাস্তায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি’র অর্থায়নে ৩ কোটি ২৩ টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়কের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে স্থানীয়রা বাধা দিলে তার পরও এগিয়ে চলছে সড়কের নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ।

এই বিষয়ে কাউখালীর দায়িত্ব প্রাপ্ত এলজিইডি’র কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছু নিম্নমানের ইট এনেছে, সে গুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। 

স্থানীয়রা জানান, চেলাছড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে কালভার্ট গুলো নির্মাণ করা হচ্ছে তা খুবই নিম্নমানের। সড়কের পাশে যে ওয়াল ও ড্রেন গুলো উঠানো হয়েছে তা নিম্নমানের এবং তা খুবই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। সড়কের পাশের ওয়াল গুলো ছেলে-মেয়েরা খেলতে গিয়েই উঠে যাচ্ছে। এছাড়া দুপাশের এল ড্রেন গুলো করা হয়েছে তা কোন ঢালাই দেয়া হয়নি। নামে মাটির উপরে ওয়াল তুলেই তা আস্তর করে দিয়ে কাজ সাড়ছে। সড়কের এই কাজ গুলো আগামী বর্ষাতেই আবার ভেঙ্গে যাবে বলে দাবী করেন স্থানীয়রা।


ছবি:- আলোকিত রাঙ্গামাটি


চেলাছড়া সড়কের কয়েকজন চালক বলেন, সড়কের উপর দিয়ে নিয়মিত ভারী ভারী যানবাহন চলাচল করছে। যে কালভার্ট গুলো নির্মাণ করা হয়েছে তা খুবই নিম্নমানের হয়েছে। নিম্নমানের ইট দিয়ে ব্রীকের ওয়াল তুলে তিন সুতা রডের উপর দিয়েই ঢালাই করা হয়েছে বলে তারা জানান।

তারা বলেন, যে কোন সময় কালভার্ড গুলো ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় ঠিকাদাররা জানান, কাউখালী উপজেলায় কাজটি এম এম এন্টারপ্রাইজ মনে হয় পেয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত লেস দিয়ে কাজ টি ভাগিয়ে নিয়েছে।

তারা বলেন, এই কাজটি খুবই খারাপ হবে আমাদের বিশ্বাস। এখানে পার্বত্য অঞ্চলে আঞ্চলিক দলের কয়েকটি গ্রুপকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা ছাড়া কোন কাজ করা যায় না। এছাড়া অফিস খরচ সহ সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ পারসেন্ট চলে যায়। এর পর কাজটি পাওয়ার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্টান লেস দিয়েছে প্রায় ১৮ পারসেন্ট। সব মিলিয়ে কাজ টি সর্বোচ্চ কাজ করা হলে ৩৫ থেকে ৪০ পারসেন্ট কাজ হবে।

এই অবস্থায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কী ভাবে কাজটি সঠিক ভাবে করবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। সড়কটি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা মনে করেন। 

এদিকে কাজটি সরজমিনে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা যে অভিযোগটি করেছে তা মিল রয়েছে। নিম্নমানের ইট, বালি, কংক্রিট দিয়ে রাস্তার ঢালাই কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে স্থানীয় মেম্বারের অভিযোগের ভিত্তিতে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এখানো পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন সাইডে নিম্নমানের ইট, বালি, কংক্রিট দেখা গেছে। এছাড়া কালভার্ট গুলোতে তিন সুতা রডের বাইন্ডার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

ঠিকাদারের কথার সূত্র ধরে স্থানীয়রা বলেন, একটি কাজ যখন করা হবে তা একটু ভালোভাবে করতে হবে। সরকার একটি রাস্তার জন্য বার বার বরাদ্ধ দিবে না। তাই কাজটি যাতে ভালো ভাবে করলে ক্ষতি কী? ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে তার সিডিউলে যা ধরা রয়েছে তা দিয়েই তারা কাজ করছে। এখানো কোন ধরনের দুই নম্বারী নেই। তাহলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যাতে আগামী দিনে কোন কাজ করতে যাতে নিম্নমানের কাজ না হয় তার জন্য সরকারী দপ্তর গুলোকে আরো ভালো ভাবে কাজের মানঠিক রাখার জন্য সঠিক ভাবে সিডিউল করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যে কালভার্ট গুলো কথা বলা হয়েছে তা সব কিছু সিডিউল মোতাবেক করা হচ্ছে। এখানে কোন ধরনের নিম্নমানের কাজ করার হচ্ছে না। এছাড়া সিডিউলে যা আছে তাই করা হচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান কখনোই খারাপ কাজ করে না। 

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী পরিতোষ বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে কিছু ইট নিয়ে আমি খবর পেয়ে সাথে সাথে ইট গুলো সরিয়ে নিতে বলেছি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। যদি আর কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তা খতিয়ে দেখা হবে।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ