রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কাপ্তাই প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ৭ এপ্রিল ২০২০

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে উঠা জমিতে বাম্পার ফলনেও কৃষকের মুখে হাসি নেই

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে উঠা জমিতে বাম্পার ফলনেও কৃষকের মুখে হাসি নেই

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ- দেশের একমাত্র পরিকল্পিত বৃহৎ কাপ্তাই হ্রদ এখন সবুজ ফসলের সমারোহ। হ্রদে ভেসে উঠা জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে বাম্পার ফলন হলেও প্রান্তিক কৃষকদের মুখে হাসি নেই। তারা উৎপাদিত ফসল ঘরে তুললেও বর্তমানে হাটবাজার বন্ধ থাকায় ন্যায্য মূল্যেও বিক্রি করতে পারছে না এসব ফসল।

প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী হতে এপ্রিল পর্যন্ত প্রচন্ড খরা, তাপদাহ ও বৃষ্টিপাতের অভাবে বৃহৎ কাপ্তাই হ্রদে পানি শুকাতে থাকে। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হ্রদে জেগে উঠে চর। সেই চরে কৃষকরা তাদের ধান, ভুট্টা, বড়বটি, লালশাক, ঢেঁড়শ, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে।

ইতিমধ্যে অনেক কৃষক বিভিন্ন ফসল ও নানা ধরনের সবজি চাষ করে বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। শত কষ্টে ফসল উৎপাদন করেও বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে কৃষকের অর্জিত ফসল হাট-বাজারে বিক্রয় করতে না পেরে মাথায় বজ্রাঘাত পড়ার অবস্থা হয়েছে। বিভিন্ন শাক সবজিসহ অন্যান্য ফসল ক্ষেতেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজাতীয় কৃষক সংখইউ মারমা, তাজপ্রুখই মারমা ও লক্ষী চাকমা জানান, আমরা প্রতি বছর অপেক্ষা করি কখন কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকাবে। সেই শুকিয়ে যাওয়া জমিতে ফসল চাষ করে এবং উৎপাদিত ফসল বিক্রয় করে পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) পালন, ছেলে-মেয়ের স্কুল খরচ, বিভিন্ন দেনা পরিশোধ ও নতুন বছরকে নতুন সাজে বরণ করার সকল পরিকল্পনা করে থাকি। বর্তমান মহামারি করোনার কারণে সকল হাট-বাজারসহ দোকানপাট বন্ধ থাকায় আমাদের মুখে হাসি নেই বলে জানান। অনেক ফসল হয়েছে তবে বিক্রি করতে না পারায় ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বলে জানান প্রান্তিক এসব কৃষকরা।

কৃষক শাহাবউদ্দিন, শাহাবাজ আলী আক্ষেপ করে জানান, আমরা নতুন করে আর কিছু চাষ করবো না। কারন বাজারে লোকজন নেই, হাট-বাজার বন্ধ তাই উৎপাদন করে লাভ কি?

তারা আরো জানান, এবার কাপ্তাই হ্রদে বিভিন্ন ফসলের চাষ ভাল হয়েছিল। কিন্তু মরণব্যাধি করোনার কারণে লাভের মুখ দেখা  হলোনা। এ অবস্থায় প্রান্তিক কৃষকরা সরকারের নিকট কৃষি প্রনোদনার দাবি জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুল আলম চৌধুরী জানান, আমাদের সহযোগিতায় কৃষকরা প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ভাল ফলন উৎপাদন করেছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বেচাবিক্রি কম হচ্ছে। তবে এটা অচিরেই কেটে যাবে। তিনি আরো জানান, কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে আছে এবং থাকবে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়