রাঙামাটি । বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ , ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আলোকিত রাঙ্গামাটিঃ-

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২৩ জুলাই ২০২০

কাপ্তাইয়ে কথিত অপহরণ মামলার ভিকটিমকে মহালছড়ি থেকে উদ্ধার

কাপ্তাইয়ে কথিত অপহরণ মামলার ভিকটিমকে মহালছড়ি থেকে উদ্ধার

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ- কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গায় প্রেমের টানে ঘরছাড়া যুবতীর পরিবারের দায়ের করা অপহরণ মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে প্রতারক শুভ্র মারমার কথিত মা প্রভা দেবী চাকমাকে। 

সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করা শুভ্র মারমার কথিত মা প্রভা দেবী চাকমা রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের অবসর প্রাপ্ত একজন কর্মচারী। পরে পুলিশী তদন্তে বেরিয়ে আসে প্রেমের টানে সিএনজি ড্রাইভারের হাত ধরেই বাড়ী ছাড়ে ওই যুবতী।

 কুড়িগ্রাম জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার চিংকিনালা পৌঁছালে অপহৃত সুইমাইথুই মারমাকে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহৃত সুইমাইথুই মারমা কাপ্তাই ওয়াগ্গা কুকিমারার বাসিন্দা।

কাপ্তাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসির উদ্দীন জানান, সরকারি চাকরিজীবির ভূয়া পরিচয়ে বিভিন্নস্থানে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করতো শুভ্র মারমা ও তার কথিত মা প্রভা দেবি চাকমা (৬০)। তারা কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ইউনিয়নের কুকিমারা এলাকায়ও  বিভিন্ন জনকে চাকরি দেবার কথা বলে বেড়াত। বিশেষ করে শুভ্র নিজেকে অনেক সময় গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয় দিতো। 

এরমধ্য গত মার্চ মাসে নিখোঁজ হয় কুকিমারার সুইমাইথুই মারমা (২৩) নামের এই যুবতী। নিখোঁজের পর গত ৭ জুলাই তার পরিবার শুভ্র ও তার মা প্রভা দেবী চাকমাকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে কাপ্তাই থানায় অপহরণ মামলা (মামলা নং- ১) দায়ের করেন। এঘটনায় আসামী প্রভা দেবী চাকমাকে আটক করার পর প্রভা দেবী জানান, শুভ্র তার ছেলে নয়। তারা বিভিন্ন স্থানে সরকারি চাকরিজীবিসহ ভূয়া পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদ পেতে আসছেন। অপহৃত সুইমাইথুই মারমাকেও শুভ্র চাকরির প্রলোভন দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউসার গত বুধবার কাপ্তাই থানায় সাংবাদিকদের জানান, মামলার পর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আসামীদেরকে আটক এবং কথিত অপহৃত যুবতীকে উদ্ধারে পুলিশী তৎপরতা শুরু করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহৃত যুবতীর লোকেশন কুড়িগ্রাম জেলায় এবং শুভ্র মারমার অবস্থান অন্য জেলায় দেখা যায়। তবে ঘটনার দু’দিন পর থেকে অপহৃত যুবতীর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। 

এএসপি সার্কেল জুনায়েত কাউসার  জানান, যদিও শুভ্র মারমা ১নং আসামী এবং সন্দেহজনক গতিবিধির মানুষ,ফলে তারা তদন্ত ভিন্ন আঙ্গিকে পরিচালিত করেন। ভিক্টিমের পূর্বের ইতিহাস সংগ্রহ এবং তার পরিবার, বন্ধুদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে দু'ব্যক্তিকে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়। এদের একজনের মোবাইল নাম্বার সচল থাকলেও অপরজনের নাম্বার ঘটনার পরদিন থেকেই বন্ধ পাওয়া যায়। 

তিনি আরও জানান, একজন মহিলাকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে সন্দেহভাজন মোঃ সুমন নামের এক বাঙালী সিএনজি চালককে চট্টগ্রাম থেকে আটক করা হয়। 

এরপর থেকেই খুলতে থাকে ঘটনার রহস্য। বন্ধ নাম্বারটি সুমন নামের ওই বাঙালী চালকের তা নিশ্চিত হওয়া যায়। অপহৃত সুইমাইথুই মারমার সঙ্গে রয়েছে তার প্রেমের সম্পর্ক। তার হাত ধরেই পালিয়ে যায় মেয়েটি। কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি পৌঁছালে বুধবার কাপ্তাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ভুক্তভোগী মেয়েটিকে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি  চিংকিনালা হতে তাকে উদ্ধার করে  কাপ্তাই থানায় নিয়ে আসা হয়।

কাপ্তাই থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) তাদের রাঙামাটি কোর্টে চালান করা হবে।

আলোকিত রাঙামাটি