রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ৬ দফা প্রস্তাব

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ৬ দফা প্রস্তাব

মহামারি করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘকে ‘অনুঘটকের ভূমিকা’ পালনের আহ্বান জানিয়ে ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি একটি ‘সু-সমন্বিত রোডম্যাপ’ প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার উপরও গুরুত্বারোপ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলার জন্য আমাদের একটি সু-সমন্বিত রোডম্যাপ দরকার। এই সংকট দূর করতে ২০৩০ এর এজেন্ডা, প্যারিস চুক্তি এবং আদ্দিস আবাবা অ্যাকশন এজেন্ডা আমাদের ব্লুপ্রিন্ট হতে পারে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘকে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে হবে।

‘কোভিড-১৯ এর সময়ে এবং পরবর্তীতে উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন,’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে দেয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইড লাইনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রধানমন্ত্রী যে ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন সেগুলো হচ্ছে-

প্রথমত, জি-৭, জি-২০, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত সংস্থা (ওইসিডি) ভুক্ত দেশগুলো, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউট (আইএফআইএস) গুলোর বার্ষিক প্রণোদনা, ছাড়ের অর্থ এবং ঋণ মওকুফের পদক্ষেপ বৃদ্ধি করা উচিত। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের ৭ শতাংশ ওডিএ প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আমাদের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আরো বেশি বেসরকারি অর্থ ও বিনিয়োগ সরিয়ে আনা প্রয়োজন। ডিজিটাল বিভাজন বন্ধ করার জন্য আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে আরো কাজে লাগাতে হবে।

তৃতীয় প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড পরবর্তী চাকরির বাজারের জন্য অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তা করে রেমিট্যান্স প্রবাহের নিম্নমুখী প্রবণতা ফিরিয়ে আনতে আমাদের নীতিগত পদক্ষেপের প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে অবশ্যই শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশ, প্রযুক্তি সমর্থন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আরো প্রবেশযোগ্য অর্থায়নের বিষয়ে তাদের অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।

পঞ্চম প্রস্তাবে তিনি বলেন, কমপক্ষে ২০৩০ সাল নাগাদ মহামারিজনিত কারণে কোনো সম্ভাব্য পিছলে পড়া রোধ করতে এলডিসি থেকে উত্তোরণ লাভকারী দেশগুলোর জন্য নতুন আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা থাকতে হবে।

সর্বশেষ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে অর্থায়নের জন্য আরো জোর প্রচেষ্টা করা দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের জিডিপির ৪ দশমিক ৩ শতাংশ সমতুল্য ১৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, নিয়মিত সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচিগুলোর আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি এই মহামারি চলাকালীন কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিল্পী ও সাংবাদিকসহ তিন কোটিরও বেশি মানুষকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সরকার।

এই সভা আহ্বানের জন্য বক্তব্যের শুরুতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেসে এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য অর্থায়নের ছয়টি কেন্দ্রীয় লক্ষ্য নিয়ে এই উদ্যোগের সূচনা অত্যন্ত সময়োচিত। এছাড়াও মিশর, জাপান এবং স্পেনের সঙ্গে আলোচনা গ্রুপ-১ এর সহ-নেতৃত্বে ছিল বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো কাজে পরিণত করা এখন গুরুত্বপূর্ণ। -বাসস।

আলোকিত রাঙামাটি