রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:১২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

খালে পরিণত হচ্ছে কর্ণফুলী, প্রস্থ এখন অর্ধেক

খালে পরিণত হচ্ছে কর্ণফুলী, প্রস্থ এখন অর্ধেক

কর্ণফুলী নদীর চিত্র


বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম প্রধান নদী কর্ণফুলী। নদীটি ভারতের লুসাই পাহাড় থেকে শুরু হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ বছরের ব্যবধানে এ নদীর প্রস্থ নেমে এসেছে অর্ধেকে। এভাবে চলতে থাকলে কর্ণফুলী পরিণত হবে খালে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন নদী বিশেষজ্ঞরা।

২০০৬ সালে দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণের সময় এডিবির মাস্টারপ্ল্যান ও বিএস শিট অনুযায়ী এ নদীর প্রস্থ ছিল ৮৮৬ দশমিক ১৬ মিটার। কিন্তু ১৪ বছরের ব্যবধানে তা অর্ধেকেরও বেশিতে নেমে এসেছে বলে দাবি চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নেতাদের।


শাহ আমানত সেতু


তাদের মতে, ভাটার সময় বর্তমানে শাহ আমানত সেতুর নিচে নদীর প্রস্থ থাকছে মাত্র ৪১০ মিটার। যা জোয়ারের সময় চর অতিক্রম করে সর্বোচ্চ ৫১০ মিটার পর্যন্ত পৌঁছায়। এছাড়া ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর অন্তত ৩০০ মিটার এলাকা দিয়ে চলতে পারে না নৌযান। ফলে নদীর মাঝ বরাবর অঘোষিত ঘাট বসিয়ে যাত্রী পারাপার করছে স্থানীয়রা।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতু থেকে নগরের ফিরিঙ্গিবাজারের মনোহরখালী পর্যন্ত ২১ দিন ধরে একটি জরিপ চালানো হয়েছে। যেন কর্ণফুলী দখল ও দূষণের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে।

তিনি বলেন, এডিবির মাস্টারপ্ল্যান ও বিএস শিট অনুযায়ী রাজাখালী খালের মুখে কর্ণফুলীর প্রস্থ ৮৯৮ মিটার থাকার কথা থাকলে বাস্তবে তা রয়েছে ৪৬১ মিটার। একইভাবে চাক্তাই খালের মুখে ৯৩৮ মিটারের পরিবর্তে রয়েছে ৪৩৬ মিটার।

অপরদিকে, ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় ৯০৪ মিটার থাকার কথা থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ গাইড ওয়াল নির্মাণ করায় সেখানে রয়েছে ৭৫০ মিটার। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্মিত মেরিনার্স পার্ক এলাকায় ৯৮১ মিটারের পরিবর্তে রয়েছে ৮৫০ মিটার। যদিও সেখানে ড্রেজিং অব্যাহত রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।


কর্ণফুলী নদীর ভরাট ও দখল মানচিত্র


আলীউর রহমান আরো বলেন, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে এরইমধ্যে কর্ণফুলী রক্ষায় ছয়টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। তা হলো- অবিলম্বে কর্ণফুলী মেরিনার্স পার্ক, সোনালী মৎস্য আড়ত, বেড়া মার্কেটসহ কর্ণফুলী নদী দখল করে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর গতিপথ ফিরিয়ে আনা। নিয়মিত ড্রেজিং করে ও প্রয়োজনীয় নদীশাসনের মাধ্যমে বাংলাবাজার, সদরঘাট, চাক্তাই ও রাজাখালী এলাকার নৌ-বন্দর ঝুঁকিমুক্ত করা। নদীর পাড়কে স্থায়ীভাবে চিহ্নিত করা ও পাড় রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করা এবং প্রস্তাবিত হাইড্রো মরফলোজিক্যাল মডেল স্টাডির মাধ্যমে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রবাহ ও নদীশাসনে ব্যবস্থা নেয়া।

এদিকে, কর্ণফুলী রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এটি এক সময় খালে পরিণত হবে এবং এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরও কার্যকারিতা হারাবে বলে আশঙ্কা করছেন নদী বিশেষজ্ঞরা।

 

আলোকিত রাঙামাটি