রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টাই সরবরাহ হবে ওয়াসার পানি

চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টাই সরবরাহ হবে ওয়াসার পানি
চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টাই সরবরাহ হবে ওয়াসার পানি, ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম শহরে চব্বিশ ঘণ্টা পানি সরবরাহ নিশ্চিত হতে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প- ২ এর মাধ্যমে এ লক্ষ্য অর্জিত হবে।

আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর বিভাগীয় শহরটিতে আর পানি সরবরাহের কোনো সংকট থাকবে না।

প্রকল্প সূত্র জানায়, আজ শনিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবেন। তারা প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা সরেজমিন দেখবেন। এ সময় সংশ্লিষ্টদের কাছে সার্বিক বিষয়ে ধারণা নেবেন। 

এরপর মন্ত্রী ওয়াসার ‘পতেঙ্গা বুস্টিং পাম্প স্টেশন’ উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ বুস্টিং পাম্প চালু হলে ইপিজেড-বন্দর-পতেঙ্গাবাসী ‘মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্পে’ উৎপাদিত দৈনিক সাড়ে চার কোটি লিটার পানি পাবে।

ওয়াসা সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে পানি উত্তোলন করে পরিশোধনের পর চট্টগ্রাম শহরে সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি উৎপাদনে গেলে ওয়াসার পানি সরবরাহ বাড়বে দৈনিক আরো ১৪ দশমিক ৩ কোটি লিটার। বর্তমানে দৈনিক ৩৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এ প্রকল্প চালু হলে দৈনিক ৫০ কোটি লিটারের বেশি পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের অধীনে প্রথম প্রকল্প ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প-১’ ও ‘মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প’ চালুর পর এ মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। 

চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প-২। 

জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ৮৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করে। 

নগরীতে বর্তমানে ওয়াসার পানির চাহিদা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু ওয়াসা সরবরাহ করতে পারে প্রায় ৩৬ কোটি লিটার। এ শোধনাগার চালু হলে উৎপাদন বাড়বে আরো ১৪ দশমিক ৩ কোটি লিটার। এতে নগরীর পানি সমস্যা কেটে যাবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজে নিয়েছেন। এর একটি অংশ নগরীর পানি সরবরাহ ও সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম ওয়াসার মাধ্যমে সম্পাদনের লক্ষ্যে একাধিক মেগা প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। আমাদের শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ট্রায়াল রান চলছে। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা কারিগরি দিকগুলো দেখছেন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবেন। তাদের সবুজ সংকেত পাওয়া গেলে আগামী ১৭ মার্চ প্রকল্পটি উদ্বোধন হতে পারে। এটি হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি বড় উপহার। পাশাপাশি নগরীর সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের কাজও এ দিন উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ বলেন, এ প্রকল্প চালু হলে নগরীতে আর পানির সংকট থাকবে না। অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত নগরীতে পানির জন্য আর চিন্তা করতে হবে না। পানি সরবরাহের দিক থেকে বিশ্বের উন্নত শহরগুলোর মতো সেবা মিলবে। এরপর সমস্ত গভীর নলকূপ বন্ধ করে দেয়া হবে। এতে আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার লেভেল বাড়বে। ফলে জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পাবে।

শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্পের পরিচালক ও ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম  বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর রাঙ্গুনিয়া সরফভাটা থেকে পানি উত্তোলন করে পরিশোধনের পর চট্টগ্রাম শহরে সরবরাহ করা হবে। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, চলতি ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে। আমরা বেশ কিছুদিন ধরে এ প্রকল্পের ট্রায়াল রান চালাচ্ছি। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, উৎপাদিত পানির গুণগত মান নিশ্চিত করা। প্রতিটি প্যারামিটারে শতভাগ লক্ষ্য অর্জন করতে না পারা পর্যন্ত কোনোভাবে সাধারণের ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ করা যাবে না। আমরা এ লক্ষ্যে চূড়ান্ত পারফেকশনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, সবকিছু নিশ্চিত করে আগামী ১৭ মার্চ প্রকল্প উদ্বোধন করার মতো প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়