রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ২৫ এপ্রিল ২০২০

ত্রাণ পেল হাজারো পরিবার, অঙ্গীকারও করল ঘরে থাকার

ত্রাণ পেল হাজারো পরিবার, অঙ্গীকারও করল ঘরে থাকার

কোথাও ত্রাণের খবর পেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে লোকজন। অদৃশ্য, ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী ভাইরাসের ধ্বংসাত্মক দিকটির কথা ভাবছে না কেউ। করোনা দুর্যোগে কাজকর্ম হারা অভাবী লোকজনের কাছে তখন ত্রাণ পাওয়াই হয়ে যাচ্ছে মূখ্য বিষয়।

ফলে ত্রাণ তৎপরতার বিষয়গুলো আর সুশৃঙ্খল থাকছে না। কার আগে কে নেবে তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। এ পরিস্থিতিতে যারা নিয়ে যান, তাদের আর কিছুই করার থাকে না। ত্রাণ দাতা আর ত্রাণ গ্রহীতা সবাই পড়ছে করোনা ঝুঁকিতে।

লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে কিন্তু অভাবগ্রস্ত প্রকৃত গরিবদের কাছে ত্রাণের প্রবাহ কম। তাই ত্রাণের কথা শুনলেই মরিয়া হয়ে উঠছে লোকজন। তাঁরা বলছেন, অনেকে ত্রাণ দিতে গিয়ে অভাবগ্রস্ত মানুষকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।

তবে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. এরশাদ উদ্দিন তাঁর নিজের নামে করা ফাউন্ডেশন থেকে বেশ গুছিয়ে গত পাঁচদিন ধরে ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার পরিবারের রমজান মাসের উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। 

যারা নিজেদের দুর্ভোগের কথা বলতে পারছেন না, ফোন পেলে তাদের বাড়িতেও পৌঁছে দিচ্ছেন চাল, ডাল, তেলসহ খাদ্যসামগ্রী। অনাহারী লোকজনকে কেবল খাবার নয়, কীভাবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, এসব পরমার্শ দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ বিতরণের সময়। এ সময় সবাইকে ঘরে থাকার অঙ্গীকারও করানো হয়।

একই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বারবার হাত ধোয়া থেকে শুরু করে সামাজিক দূরুত্বের বিষয় সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছে সেখানে। আক্রান্ত হলে কী করতে হবে, আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা কোথায় আছে-সেগুলো বলে দেওয়া হচ্ছে। এই ১৫-২০ মিনিটের পরামর্শসভাটুকু বাধ্যতামূলকভাবে ত্রাণ নিতে যাওয়া সবাইকে শুনতে হয়।

গতকাল শুক্রবার তিনি জয়কা ইউনিয়নের কর্মহীন, দুস্থ নারীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে করিমগঞ্জ পৌর এলাকায় দুর্ভোগে পড়া লোকজনের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। সেখানেও ত্রাণ নিতে আসা লোকজনকে সামাজিক দূরত্বে বসিয়ে প্রথমে তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সভা। সভা শেষে উপস্থিত সবাই করোনা থেকে রক্ষা পেতে পরামর্শগুলো মেনে চলা এবং ঘরে থাকার অঙ্গীকার করেন।

স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে প্রথমে একটি খোলা মাঠ বাছাই করা হয় ত্রাণ বিতরণের জন্য। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা ত্রাণ নিতে আসা নারী-পুরুষদের দূরে দূরে বসিয়ে দ্রুত খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষ করে। আবার ট্রাকে মালামাল বোঝাই করে আরেকটি এলাকা ছুটে যাচ্ছি আমরা। তার আগে কারা ত্রাণ পেতে পারে সে বিষয়টি নির্ধারণ করে, তাদের কাছে উপহার স্লিপ পৌঁছে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ মিল স্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এরশাদউদ্দিন মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মো. এরশাদউদ্দিন বললেন, মানুষ না বাঁচলে এই টাকা-পয়সা, সহায় সম্পত্তির কোনো গুরুত্ব থাকবে না। কাজেই আমার সামর্থের সবটুকু নিয়ে মানুষকে সাহস দেওয়ার চেষ্টা করছি। ঘটা করে ত্রাণ বিতরণ করে লোকজনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না।

প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে আগে রক্ষা করতে হবে লোকজনকে। তাই সবার আগে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে আমি অগ্রাধিকার দিচ্ছি। যারা সুশৃঙ্খলভাবে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি পালন করছে একই সঙ্গে যারা দুর্ভোগে রয়েছে, তাদের খুঁজে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের নামে গরিব লোকজনকে ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না আমি।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ