নতুন রূপে সাজছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্থান
এখানেই দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- ছবি: সংগৃহীত
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ছিল (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো মুক্তিকামী বাঙালি জনতার ঢল। সেই জনতার ঢলে বজ্রকণ্ঠে বাঙালির মুক্তির ডাক দিয়ে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ ভাষণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে অমিত শক্তির উৎস এবং মুক্তিযুদ্ধের উজ্জীবনী শক্তি।
১৮ মিনিট স্থায়ী ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালি। এ ভাষণের ঐতিহাসিক গুরুত্ব যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে জায়গায় দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কালজয়ী ৭ মার্চের ভাষণ দেন সেই ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (৩য় পর্যায়) আওতায় ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানটিকে সাজানো হচ্ছে।
স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রমনা গণপূর্ত উপ-বিভাগ-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রাণবন্ত করতে সরকারের প্রচেষ্টায় ৩০ ফুট প্রশস্ত সৌন্দর্যবর্ধন জলধারার ওপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের মঞ্চের আকৃতিতে মঞ্চসহ নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য।
তিনি আরো বলেন, পুরো জায়গাসহ মঞ্চের চারদিকে বিভিন্ন লেজার লাইটের মাধ্যমে আলোকিত করা হবে। পাশাপাশি ফুলের বাগান, জলধারার মাঝখানে গ্লাস টাওয়ার ও শিখা চিরন্তন বরাবর ৪০ ফিট প্রশস্ত পেডেস্ট্রেন রোড থাকবে। নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের জলধারার নিচে ঠিক মঞ্চটির আন্ডারগ্রাউন্ডে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা থাকবে যেখানে প্রায় ৫৬০টি গাড়ি পার্কিং করা যাবে। আন্ডারগ্রাউন্ডে যাতায়াত করতে থাকবে দুটি র্যাম্প এবং তিনটি সিঁড়ি। এছাড়া শিশু ও বয়স্কদের জন্য থাকছে দুটি লিফট।
এ প্রকৌশলী আরো বলেন, মঞ্চ দেখতে আগত দর্শনার্থীদের জন্য সাতটি ফুড কোর্ট থাকছে। মঞ্চটির পাশেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও শিশু পার্কে আগত দর্শনার্থীদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ৫০ ফিট লম্বা ও ৫০ ফিট চওড়া দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদসহ জনসভার জন্য স্থায়ী মঞ্চ। গ্লাস টাওয়ারের চারদিকে থাকছে গ্রিন হেজ বাউন্ডারি ও ৪৪টি আধুনিক ফুলের দোকান।
মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তরুণ প্রজন্মসহ সমগ্র বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা। গণপূর্ত অধিদফতর প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের জনগণের কাছে মুক্তিযুদ্ধের মর্মস্পর্শী, অনুভূতিগুলো প্রতিফলিত করা। ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালের ২২ জুন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আলোকিত রাঙামাটি