রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ , ২ বৈশাখ ১৪৩১

কাওসার আকন্দঃ-

প্রকাশিত: ১২:০০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নানিয়ারচরে দূর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পন্ন

নানিয়ারচরে দূর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পন্ন

শারাদীয় দূর্গোৎসব-২০১৯ কে কেন্দ্র করে সারাদেশব্যাপী ব্যাপক সরগরম রয়েছে। আসন্ন ৩ অক্টোবর মহা পঞ্চমীর মধ্য শুরু হবে এবারের শারদীয় দূর্গাপূজা। বসে নেই প্রতিমা কারিগর, তারা তাদের হাতের অসাধারন প্রতিভার প্রতিফলনকে বিকোশিত করে সৃষ্টি করছে মহা মায়ার আবির্ভাব।

তারই ধারাবাহিতায় নানিয়ারচর উপজেলাতেও মহা ধুমধামের সাথে এবারের পূজোকে বরণ করে নেয়া হবে বলে আলোকিত রাঙ্গামাটিকে জানালেন নানিয়ারচর উপজেলা সদরের এবারের সার্বজনীন শ্রী শ্রী শারাদীয়া দূর্গোৎসব উদযাপন কমিটি-২০১৯ এর দায়িত্বরত সহ-সাধারণ সম্পাদক রিপন দাশ।

ছাত্ররাজনীতির সাথে দীর্ঘদিনের পথচলার এই ছাত্রনেতা সামাজিক ও ধর্মীয় অঙ্গনের প্রতিটি কর্মতৎপরতায়ও বেশ অবদান রেখে যাচ্ছেন। শত বাঁধা ও নানা সমস্যার মধ্যেও নিজের অর্পিত দায়িত্বের প্রতি বেশ সচেতন এই সাবেক ছাত্রনেতা।

পূজোর প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এবার কিছু নবীন এবং প্রবীনদের সমন্নয়ে পূজোর আয়োজন করেছি। নানিয়ারচর উপজেলা সদরে দুটি মন্দিরে দূর্গোপূজার আয়োজন হতো। একটি নানিয়ারচর উপজেলা সদরে অবস্থিত সার্বজনীন শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে এবং অন্যটি নানিয়ারচর উপজেলাধীন ৩নং বুড়িঘাট ইউনিয়নে অবস্থিত বুড়িঘাট শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে।

কিন্তু এবার মন্দিরের নির্মান জনিত কারনে, বুড়িঘাট ইউনিয়নের শারাদীয় দূর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে না। এখন পুরো নানিয়ারচর উপজেলায় কেবল একটিই দূর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে, আর সেটি নানিয়ারচর উপজেলা সদরের শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে। সার্বজনীন শ্রী শ্রী শারাদীয় দূর্গোৎসব উদযাপন কমিটি-২০১৯ এর আয়োজনে এবার উদযাপিত হবে সনাতনী সম্প্রদায়ের এই মহা ধর্মীয় উৎসব।

পরিবেশ পরিস্থিতি ও পূজোর সার্বিক বিষয়ে নানিয়ারচর পূজা উদযাপন কমিটির দায়িত্বরত সহ-সাধারণ সম্পাদক রিপন দাশ বলেন, নানিয়ারচর উপজেলার বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতির কথা বলতে গেলে তেমন একটা সহনীয় পর্যায়ে নেই। চারদিকে কেবল জনমনে হতাশা আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমরা বর্তমান পূজা উদযাপন কমিটি এমন এক সময় দায়িত্ব গ্রহন করেছি, যখন নানিয়ারচরে চলছে হাহাকার অবস্থা। কারন, সকল কিছুর মূল উৎস হলো অর্থ। আর পূজোর খরচ বাবদ বিশাল অর্থের জোগান দিতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি।

আঞ্চলিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে নানিয়ারচর উপজেলার একমাত্র সরকারি ইজারাদারভুক্ত বাজারটি বেশ কয়েকবছর ধরে বন্ধ।
নেই কোন প্রশাসনিক উদ্যোগ। কোন প্রকার ব্যবসায়ীক লেনদেন জমজমাট না হওয়ায় আমরা পূজা উদযাপন কমিটি পরেছি বিপাকে। কারো কাছ থেকেই নিয়মতান্ত্রিক সহনীয় পর্যায়ে পূজোর প্রনামী অর্থ সংগ্রহ করতে পারছিনা।

তিনি আরো বলেন, এবারের শারাদীয় দূর্গোপূজার সকল কিছুর প্রস্তুতি হিসেবে আমরা চারলক্ষ টাকার একটি ব্যয় হিসেব করেছি। উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ হতে পূজোর কিছু আর্থিক বরাদ্ধ সমীপে এই পূজোর উদযাপনকৃত ব্যয় সমন্নয় করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, সকল বাঁধা আর প্রতিবন্ধকতাকে ডিঙ্গিয়ে আমরা আসন্ন দূর্গোপূজার প্রস্তুতি সমাপ্তীকরণ করতে পারব। আমরা কিছু অনুষ্ঠানমালা আর মায়ের মাঙ্গলিক পূজোর আয়োজনে এবারের পূজোর প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সমাপ্ত করেছি। তার পাশাপাশি রয়েছে ধর্মীয় সংগীতানুষ্ঠান ও ক্রীড়ামূলক কিছু আয়োজন। আগামী ৩ অক্টোবর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গোপূজার সূচনার মধ্য দিয়ে আগামী ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মায়ের বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আমাদের এই পূজার আয়োজন সমাপ্ত হবে।

আইন -শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে রিপন দাশ বলেন, ইতিমধ্যে আমারা প্রশাসন সহ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তাদের সাথে পূজার আমন্ত্রন এবং সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করেছি। নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী সহ পুলিশ বাহিনীদের সার্বিক কঠোর নিরাপত্তার নজরদারীতে থাকবে পূজোর প্রতিটি মূহুর্ত, এমন প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন কর্মকর্তাগণ। আমরাও বেশ আশাবাদী সকল প্রস্তুতির আলোকে সুন্দর ও আনুষ্ঠানিক ধুমধামের সহিত এবারের পূজোর আনন্দকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব।

পরিশেষে তিনি সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আসন্ন শারাদীয় দূর্গোৎসব-২০১৯ এর নানিয়ারচর উপজেলার আয়োজিত পূজোর আমন্ত্রন জানান।

আলোকিত রাঙামাটি

সম্পর্কিত বিষয়: