রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

পাহাড়িদের ‘মুন্ডি’ এখন বাঙালির রসনা বিলাসে

পাহাড়িদের ‘মুন্ডি’ এখন বাঙালির রসনা বিলাসে

ছবি: সুস্বাদু খাবার মুন্ডি


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে দিনে দিনে বাড়ছে পাহাড়িদের অন্যতম খাবার মুন্ডির চাহিদা। এই সুস্বাদু খাবারের প্রতি আকৃষ্ট নারীরা। যদিও পাহাড়িদের অন্যতম প্রিয় খাবারের নাম মুন্ডি। এরই মধ্যে মন কেড়েছে বাঙালি নারীদেরও চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা খাবারটি। 

মূলত এটি পাহাড়িদের এক প্রকার স্থানীয় নুডুলস। এটি চালের গুঁড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। মুন্ডি নামটি এসেছে মারমাদের কাছ থেকে। খাগড়াছড়ি ইয়ংড বৌদ্ধ বিহার এলাকায় মানুষেরা সকাল-বিকেলে এই খাবারের জন্য ভিড় জমায় ইউ.কে কফি হাউজে। 

 

মুন্ডি খেতে তরুণীরা রেস্টুরেন্টে

 


স্থানীয়ভাবে ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি সবার কাছে সুস্বাদু খাবার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি খেতে খুবই মজা এবং সামান্য টক মিশ্রিত ঝাল। তবে টক-ঝালের পরিমাণ নিজের মতো করে দিতে পারে। শুধু পাহাড়ের লোক নয়, খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা অনেক পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয় এই মুন্ডি। 

স্থানীয় মারমাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এটির উৎপত্তি মূলত মায়ানমার থেকে। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের বান্দরবান এবং কক্সবাজারে এই মুন্ডি উৎপাদন করে থাকে। মারমা জাতির অন্যতম এ খাবার উৎপাদনের জন্য পাইজাম ও মিনিকেটের মতো ভালো চাল কিনতে হয় বাজার থেকে। 

 

পাহাড়িদের জনপ্রিয় এক খাবার

 


প্রথমে এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মতো চালকে পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর গরম পানি দিয়ে ছোট ছোট দলা করা হয় ভেজানো চালকে। পরে একটি বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় নুডলস। আর এ নুডলস দিয়েই তৈরি হয় মুন্ডি।

চাইলাপ্রু মারমা নামে এক তরুণ বলেন, ছোটবেলা থেকে এটি খেয়ে আসছি। আমাদের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে দলবেঁধে বন্ধুদের নিয়ে এই খাবারটা খাওয়া হয়। পূর্ণিমা বড়ুয়া বলেন, চাকরি করার কারণে সবসময় আসতে পারি না। তবে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন এই মুন্ডি খাওয়ার জন্য ছুটে চলে আসি। এটি সুস্বাদু একটি খাবার। ইচ্ছে করে অফিস শেষে ক্লান্তির মাঝেও প্রতিদিন এসে খেতে।

 

বাঙালিরাও এই খাবার পছন্দ করেন

 


শহরের অদূরে মাইসছড়ি থেকে বিভিন্ন কাজে শহরে আসনে উগ্য মারমা। তিনি বলেন, নানান কাজের প্রয়োজনে শহরে আসা হয়। তবে আসলেই শহরের দক্ষিণ মাথা এলাকায় ইয়ংড বৌদ্ধ বিহারের সঙ্গে ইউ.কে কফি হাউজে মুন্ডি খেতে হয়। এটি আমার খুব প্রিয় একটি খাবার।

এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উগ্যচিং চৌধুরী জানান, এখানকার মানুষের মুন্ডির খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘ দিনের। এখানকার ইয়াং বয়সী নারী-পুরুষ সকলের প্রিয় খাবার এই মুন্ডি। এটির জন্য প্রতিদিন সকাল বিকেল বীর জমায় লোকজন। খাগড়াছড়ি শহর জুড়ে শুধু এখানেই পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকের পাশাপাশি প্রায়ই পর্যটক আসেন মুন্ডি খেতে। 

 

নুডুলস জাতীয় খাবার মুন্ডি


তবে এ জেলার বাইরেও মুন্ডি পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে সবার কাছে। পাহাড়ে পর্যটন শহর খ্যাত খাগড়াছড়িতে এখন পর্যটকদের প্রিয় খাবার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে এই খাবার। মুন্ডি খেতে খুবই মজা ও সুস্বাদু এমনটি জানালেন খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা কয়েকজন পর্যটক। 

খাগড়াছড়ির দক্ষিণ মাথায় ইউ.কে মুন্ডি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বাইরে থেকেও বেড়াতে এসেছেন অনেক পর্যটক। তারা বলেন, পাহাড়ে বেড়াতে এসে সবচেয়ে ভালো লেগেছে টক-ঝালমিশ্রিত মুন্ডি খাবার।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়