রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পাহাড়ে মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন

পাহাড়ে মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন

ছবিঃ আলোকিত রাঙ্গামাটি


রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ- পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, শান্তি, সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে জঙ্গি সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর অবৈধ অস্ত্রধারীদের সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধের লক্ষ্যে দ্রুত চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে তাদের সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার পূর্বক পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের দাবিতে এবং বাঘাইছড়িতে সরকারি অফিসে ঢুকে ইউপি মেম্বার বিজয় চাকমাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি। 

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

ঘন্টাব্যাপী এই প্রতিবাদ সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ ফরাজি সাকিবের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হাবিব আজম এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর কবির, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নাদিরুজ্জামান, সহ-সভাপতি কাজি মোঃ জালোয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদ উল্লাহ্, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নুরুল আবছার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মামুনুর রশীদ মামুন, প্রচার সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, পার্বত্য এলাকায় পার্বত্য শান্তির জন্য শান্তিচুক্তি করা হয়েছিলো। কিন্তু পার্বত্য শান্তিচুক্তি করা হলেও পার্বত্য এলাকায় জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তে কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে। পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ যে ভারী অস্ত্র-শস্ত্র ব্যবহার করে তা সীমান্তের ওই দুর্গম এলাকা দিয়ে বাইরের দেশে থেকে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। সশস্ত্র জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাতে ভারী অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। জেএসএস ও ইউপিডিএফের সশস্ত্র শাখা এক হয়ে জুম্ম লিবারেশন আর্মি গঠন করেছে, তারা এখন ‘সেকেন্ড ফেজইন সারজেন্সি’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে। সীমান্তের ওপারে গড়ে তুলেছে ১৪টি ক্যাম্প। গত এক বছরে মূল জেএসএস এবং ইউপিডিএফের সশস্ত্র রাজনৈতিক শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় ৮০ জন সন্ত্রাসী লিডার তাঁদের পরিবারের সদস্যদের পাশের কয়েকটি দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে জানান বক্তারা।

বক্তারা আরো বলেন, জেএসএস ও ইউপিডিএফের কাছ থেকে সম্প্রতি যেসব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তাতে তাদের ভারী অস্ত্র সংগ্রহের প্রমাণ মিলছে। গত বছর ২৮ নভেম্বর ২০২০এ সকালে বাঘাইহাটে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দল জেএসএসএর গোপন আস্তানা থেকে সেনাবাহিনী দুটি একে-৪৭ ও একটি এসএমসি উদ্ধার করে। এর আগে এলএমজি, ৭.৬২ মিলিমিটার রাইফেল, এম-১৭ রাইফেল, জি-৩ রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, মর্টার, হ্যান্ড গ্রেনেড ও রকেট লঞ্চার উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। দিন যত যাচ্ছে পাহাড়ের সশস্ত্র জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফের অপতৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আগের মত এখন আর জঙ্গলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রশাসনের নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে উপজাতি সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চালাচ্ছে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা। রেহাই পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও। পার্বত্য অঞ্চলে বেপরোয়া ভাবে সন্ত্রাসীদের উত্থান হলেও এর লাগাম টেনে ধরার জন্য নেই পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড় থেকে সেনাবাহিনীর অনেক ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ায় পাহাড়ের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। সেনা ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ার সুযোগে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলো এখন নির্দ্বিধায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। সন্ত্রাসীদের ধারাবাহিক হত্যাকান্ডে অংশ হিসেবে বাঘাইছড়ি পিআইও অফিসে ঢুকে সমর বিজয় চাকমা নামের এক ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যাকরে জেএসএস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। উক্ত হত্যার সাথে জড়িত জেএসএস সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান নেতৃবৃন্দরা।

সমাবেশে বক্তারা, পাহাড়ে রক্তপাত বন্ধ চায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও ছাত্র পরিষদ। পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প অধিক হারে স্থাপন করার জন্য দাবী জানান নেতৃবৃন্দরা।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাঠালতলী গিয়ে শেষ হয়।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ