রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ২৭ নভেম্বর ২০২০

বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকা আয়ের টার্গেট

বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকা আয়ের টার্গেট
  • গঠন করা হচ্ছে বিশ্বমানের সার্টিফিকেশন অথরিটি
  • বিপুল বিনিয়োগ করবে নিউজিল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস
  • পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা হবে

বিপুল সম্ভাবনাময় হালাল খাদ্যে বিশ্ব জয় করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। হালাল খাবার রফতানি করে বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আগামী দশ বছরে এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই খাতে আয় হচ্ছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শতভাগ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর হালাল খাদ্য নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও রফতানিতে গ্লোবাল লিডার হিসেবে খ্যাত নিউজিল্যান্ড এই খাতে বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করবে। গঠন করা হবে বিশ্বমানের সার্টিফিকেশন অথরিটি। সংশ্লিষ্ট ছয় মন্ত্রণালয় ও ৫টি সরকারী-বেসরকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি সমন্বিত কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। হালাল পণ্য প্রস্তুত করার জন্য স্থাপন করা হবে একটি পৃথক অর্থনৈতিক জোন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক হালাল এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পদের জন্য আবেদন করার সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন।

সুস্বাদু হওয়ায় বাংলাদেশের গরুর মাংসের চাহিদা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে এই মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবসহ অনেক দেশ মাংস আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত সার্টিফিকেশন বিষয়টির কারণে আর রফতানির প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেয়া যায়নি। ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ৩৮ ধরনের সবজি, ২৯টি মসলা জাতীয় পণ্য এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আরও ১৭টি পণ্য রফতানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশী বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলেরও চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। হালাল পণ্য রফতানিতে বেঙ্গল মিট, প্যারাগণ ফ্রোজেন ফুড, কাজী ফার্মস এবং সিপি বাংলাদেশ কো. লিমিটেড প্রথম সারিতে রয়েছে। এই চার প্রতিষ্ঠানেরই বছরে রফতানির পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর পাশাপাশি ফলমূল ও শাক-সবজি রফতানি হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকার। মুসলিম বিশে^ যেভাবে হালাল ফুডের কদর বাড়ছে তাতে এই রফতানির পরিমাণ প্রায় দশগুণ বাড়ানো সম্ভব বলে আন্তর্জাতিক বাজার জরিপে দেখা গেছে। এ কারণেই সরকার হালাল ফুড রফতানিতে এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, পোশাক ও রেমিটেন্সের বাইরে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কিছু খাত রয়েছে। এখন আমরা সেদিকগুলোতে বেশি নজর বাড়াব। বিশেষ করে বাংলাদেশের হালাল ফুডের চাহিদা বিশ^ব্যাপী। সার্টিফিকেশন সক্ষমতা না থাকায় আন্তর্জাতিক বাজার ধরা যাচ্ছে না। মুসলিম বিশে^ বাংলাদেশের সবকিছু রফতানি হতে পারে। এ কারণে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সার্টিফিকেশন অথরিটি গঠন করা হচ্ছে। এই অথরিটিতে সংশ্লিষ্ট দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ, সরকারী প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক হালাল এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের রাখা হবে। আশা করছি এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের হালাল ফুডের রফতানি বহুলাংশে বেড়ে যাবে। ট্যারিফ কমিশন হালাল পণ্য রফতানির সম্ভাব্য বাজার ও সক্ষমতার বিষয়ে একটি সুপারিশ মালা তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক হালাল এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে বাংলাদেশ কাজ করতে শীঘ্রই সেখানে আবেদন করবে। এক্ষেত্রে তাদের সব শর্ত পালন করবে সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, আগামী দশ বছরে হালাল ফুড রফতানি দশগুণ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ছয় মন্ত্রণালয় ও ৫ সরকারী-বেসরকারাী সংস্থার উদ্যোগে একটি সমন্বিত কর্মসূচী গ্রহণের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করবে পররাষ্ট্র, কৃষি, ধর্ম, তথ্য, মৎস্য ও প্রাণিসসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিএসটিআই, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, এফবিসিসিআই ও জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর হালাল পণ্য রফতানি বাড়ানোর পদক্ষেপে সরাসারি যুক্ত থাকবে।

বর্তমানে দেশী পণ্যের মানসংক্রান্ত সনদ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট, ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এছাড়া বাংলাদেশ এ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড অনুমোদিত খাদ্য পরীক্ষাগারগুলো হচ্ছেÑ এনালাইটিক কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরি এটমিক এ্যানার্জি সেন্টার, পেস্টিসাইড এনালাইটিকক্যাল ল্যাবরেটরি, ন্যাশনাল ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি, ইনস্টিউটিউট অব ন্যাশনাল এনালাইটিক্যাল রিসার্চ এ্যান্ড সার্ভিসেস এবং এসজিএস ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচারাল টেস্টিং ল্যাবরেটরি। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট বিদেশী ক্রেতারা গ্রহণ করছে না।

ইসলামিক বিধিবিধানে যে ধরনের পণ্য ও সেবা মানবজীবনে গ্রহণ করার অনুমোদন রয়েছে, সেগুলোকে হালাল বলা হয়ে থাকে। হালাল নির্ধারণ করা হয় ব্যবহৃত কাঁচামাল, উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রভৃতি ইসলামিক বিধিবিধান অনুযায়ী কি-না তা বিবেচনা করে। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হালাল পণ্যের সনদ দেয়। এ ধরনের সনদ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসির মতো প্রতিষ্ঠান হালাল খাবার বিক্রি করছে। দেশেও পণ্যের হালাল সনদ দিচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ২০১১ সালে ফাউন্ডেশন এ কার্যক্রম শুরু করেছে। এ পর্যন্ত শতাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের ১০০টির বেশি পণ্যেও ক্ষেত্রে হালাল সনদ গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। তবে অনেক দেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত হালাল সনদও গ্রহণ করে না। এ কারণে একটি আন্তর্জাতিক মানের হালাল সার্টিফিকেশন অথরিটি করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্য ও সেবার বাজার নিয়মিত বাড়ছে। খাদ্য, ওষুধ, পোশাক-পরিচ্ছদ, প্রসাধনী, আর্থিক লেনদেন, পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলিম জনগোষ্ঠীর হালাল পণ্য ও সেবা গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর বাজার বড় হচ্ছে। থমসন রয়টার্সের দ্য স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে হালাল পণ্যের বাজারের আকার বেড়ে ৩ ট্রিলিয়নে দাঁড়াবে। বিশাল এ বাজারে সবচেয়ে বেশি দখল মালয়েশিয়ার। বাংলাদেশকে বাজার ধরতে হলে এখন কাজ শুরু করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ নেতৃত্ব অবস্থানে রয়েছে। ফলে হালাল ফ্যাশন বা পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের অংশ বাড়ানো সহজ। হালাল পোশাক-পরিচ্ছদের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর পরই তুরস্ক, ইতালি, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মরক্কো। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও ফ্যাশন জগতের নতুন এই বাজারে অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। একইভাবে ওষুধ ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতেও বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও হালাল বাজারে অংশ কম। বাংলাদেশ যেসব পণ্য রফতানি করছে, সেগুলো হালালভাবে উৎপাদন হচ্ছে কি-না বৈশ্বিক ক্রেতারা তা জানেন না। এমনকি এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রচাররও ঘাটতি রয়েছে। আবার অন্যান্য ক্যাটাগরি যেমন হালাল খাদ্যসামগ্রী, হালাল পর্যটন, হালাল ফার্মাসিউটিক্যালস ও হালাল প্রসাধনীর কোথাও প্রথম দশে বাংলাদেশ নেই।

সম্প্রতি রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘হালাল পণ্যসহ সব পণ্যের সার্টিফিকেশন সক্ষমতা ও হালাল পণ্য রফতানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক। ওই প্রবন্ধে তিনি বলেন, মুসলিমদের পাশাপাশি অমুসলিমদের মধ্যেও জনপ্রিয় হচ্ছে হালাল পণ্য। ২০২৪ সালের মধ্যে হালাল পণ্যের বৈশ্বিক বাজার হবে ১০ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারের। আগামী পাঁচ বছরে ৬ দশমিক ১ শতাংশ হারে চক্রবৃদ্ধি আকারে বাড়বে এ বাজার। বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে হালাল পণ্য রফতানি হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একটি কমিটি হালাল পণ্যের সনদ দিচ্ছে। পণ্য উৎপাদনের দুটি দিক রয়েছে। ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক। তবে বাংলাদেশের হালাল পণ্য রফতানির সক্ষমতা রয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। দখল করতে হবে হালাল পণ্যের রফতানি বাজার। সম্ভাব্য রফতানি পণ্য হচ্ছে শাকসবজি, ফলমূল, মসলা, গরুর মাংস, মাছ, ওষুধ, হিমায়িত খাদ্য, হিমায়িত মুরগির মাংস এবং মুরগির মাংসে তৈরি বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী।

জানা গেছে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণপূর্বক রফতানি আয় বাড়ানো এবং খাদ্যের অপচয় রোধের অংশ হিসেবে সরকার ইতোমধ্যে এ্যাগ্রো ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন পলিসি, ২০২০ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে নীতিমালায় কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার আলোচনা চলছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ ব্যক্ত করলেও সংশ্লিষ্ট নীতিমালার অভাবে এক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি আটকে ছিল। খাদ্য নিয়ে উন্নত বিশ্ব খুবই সচেতন। কোন ধরনের ছাড় তারা দেয় না। তাই আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে মান রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তুলতে সরকারের বিশেষ সহায়তাও প্রয়োজন। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ খাদ্য অপচয় রোধ করার প্রেক্ষাপট থেকেও এটি জরুরী। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশকে আলাদা অবস্থান করে নিতে হলে সক্ষমতা উন্নয়ন, প্রযুক্তি বিনিময়, উন্নত ব্যবস্থাপনা, তদারকি জোরদার করতে হবে।

বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল এ্যান্ড এ্যালায়েড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার এ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, শাক-সবজি রফতানির সম্ভাবনা থাকলেও বিভিন্ন কারণে এর পুরোটা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। মানসংক্রান্ত সমস্যা আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে রফতানি কাজের ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে বিমানবন্দরে বিশেষ স্ক্যানার না থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মান সনদ সংক্রান্ত সমস্যা দূর করা গেলে শাক-সবজি, ফলমূল, শুকনো বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের রফতানি আরও বাড়বে। বর্তমানে কোন কোন প্রক্রিয়াজাত খাবার রফতানির জন্য বিদেশ থেকে সনদ সংগ্রহ করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি লাগে। আবার অনেকে তাও সংগ্রহ করতে পারেন না। ফলে সরকার এ রকম একটি সংস্থা বা ল্যাব স্থাপন করলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি রফতানি আয় বাড়বে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রুট ভেজিটেবল এ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে রফতানি বেশি হতো। আমাদের মূলত গ্রীষ্মকালীন সবজিই বেশি রফতানি হয়। এই খাতে রফতানির বাজার আরও বাড়াতে চাইলে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার দরকার।

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতে নেদারল্যান্ডস এবং নিউজিল্যান্ড বড় অঙ্কেও বিনিয়োগের কথা জানিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত কৃষি ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলেছেন। এছাড়া কৃষি প্রক্রিয়াজতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ। এ সময় বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবার্গের জন্য একটি ট্রেড ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম গঠন, সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে দেশসমূহের বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, নেদারল্যান্ডস কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে গ্লোবাল লিডার। বাংলাদেশে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সঙ্গে চিটাগাং চেম্বারের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বিনিয়োগকারী ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারী ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম বন্দর সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে এই চেম্বারকে তাদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে এখন নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ প্রয়োজন। আশা করা হচ্ছে, দেশটি এ খাতে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে আসবে। এছাড়া সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাত করেন নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্য ও রফতানি বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড পারকার। ওই সময় তিনি দেশে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বিভিন্ন উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ করার কথা জানান। এছাড়া পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে দেশটির আগ্রহ রয়েছে। সেখানেও তারা বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ