রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ , ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১১ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা ভারতের

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা ভারতের

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য ভারত বহুস্তরের কৌশল গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সম্প্র্রতি চীন বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। ভারতের ইকোনমিক টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে প্রভাব বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চীন ও ভারত। এরই অংশ হিসেবে ঢাকাকে পাশে চাইছে বেইজিং ও নয়াদিল্লি। এর আলোকেই বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণ করার চেষ্টা করছে ভারত ও চীন।

খবরে বলা হয়েছে, ভারত বেশ কয়েকটি কানেক্টিভিটি উদ্যোগ সক্রিয় করতে যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশ হবে ভারতের স্থলসীমান্তঘেরা উত্তর-পূর্বের রাজ্য ও অন্যান্য অংশে। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ও কানেক্টিভিটি পর্যালোচনাকারী বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন, রেল ও মহাসড়কে কানেক্টিভিটি উদ্যোগ জোরদার করা হবে। এতে ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের বাজারের সঙ্গেও বাংলাদেশ সংযুক্ত হবে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশই ১৯৬৫ সালের আগের রেলসহ অন্যান্য কানেক্টিভিটি পুনরায় সচল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারের বিরোধিতার পরও গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে পণ্য পরিবহন পুনরায় চালু হওয়ায় ভারতে বাংলাদেশি রপ্তানি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে দু'দেশের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এক দশক আগেই বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক্কমুক্ত বাজার সুবিধা দিয়েছে ভারত। এতে ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসছে। তবে সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ার পর দেশটির ব্যবসায়ীরা শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা বাতিলের দাবি তুলেছেন। ভারত সরকারও সম্প্রতি শুল্ক্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলেছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি ছিল ৯২১ কোটি ডলার এবং বিপরীতে ভারতে রপ্তানি করেছে ১০৪ কোটি ডলার।

২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো ভারতকে হটিয়ে চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়। বর্তমানে চীন থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আর রপ্তানি করে ১ বিলিয়ন ডলারের কম। বাংলাদেশের মোট আমদানির এক-তৃতীয়াংশ চীন থেকে আসে।

বাংলাদেশকে গত আট বছরে ভারত ৮০০ কোটি ডলার ঋণ (এলওসি) দিয়েছে সড়ক, রেলপথ, নৌপরিবহন ও বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য। ভারতীয় রেয়াতি ঋণের সবচেয়ে বড় গ্রহীতা বাংলাদেশ। আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন, অভ্যন্তরীণ নৌপথের জন্য ড্রেজিং এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন নির্মাণে সহযোগিতা করছে। তবে এসব প্রকল্পের অনেকগুলোরই বড় সুবিধাভোগী ভারত। ভারতীয় ঋণের কড়া শর্ত নিয়েও বাংলাদেশে সমালোচনা আছে।

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকাকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পগুলো (এসডিপিএস)। ছাত্রদের আবাসিক হল, শিক্ষাভবন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও এতিমখানাসহ বাংলাদেশে ৫৫টি এসডিপিএস প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ভারত। এ ছাড়া আরও ২৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

আলোকিত রাঙামাটি