রাঙামাটি । শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ৭ জুলাই ২০২০

বাঘাইছড়িতে সরকারি খাস জমি দখলের অপচেষ্টা, স্থানীয়দের ক্ষোভ

বাঘাইছড়িতে সরকারি খাস জমি দখলের অপচেষ্টা, স্থানীয়দের ক্ষোভ

|| মোঃ ওমর ফারুক সুমন বাঘাইছড়ি || রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে ৩৭নং আমতলী ইউনিয়ন ও ৩৮৫নং মৌজার সরকারি সম্পত্তি খাস জমি দখলের অপচেষ্টায় স্থানীয়দের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা যায়, ৩৭নং আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীর ভগ্নিপতি মোঃ রেজাউল করিম সম্প্রতি স্থানীয় শহীদ মিনারের পাশের খালি জায়গায় রাতের আধাঁরে বাঁশ খুটি নিয়ে খাস জমি দখলে গেলে স্থানিয় জনগণ ও আনসার ভিডিপির সদস্যদের বাঁধার মুখে পড়ে দখল প্রক্রিয়া। ফলে সৃষ্ট ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠে উভয় পক্ষের। 

সূত্রমতে জানা যায়, শহীদ মিনারের পাশের খালী জায়গাটি ১৯৮৩ সাল হতে আনসার ভিডিপির ইউপি ক্লাবের স্থাপনা ছিল, নষ্ট হওয়ার পর এখনো ঘর পুনঃস্থাপন না হওয়ায় উক্ত খালী জায়গাটি সম্প্রতি দখলে নিতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হন রেজাউল করিম। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য বলে জানা যায়।

ঘটনায় স্থানিী জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাঘাইছড়ি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আমাতলী ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করণ ও প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন।

এ ঘটানাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল ৯টায় বাঘাইছড়ি অফিসার্স ইনর্চাজ এম এ মনজুর আলম, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আমতলি পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আনিছুর, আমতলি ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী ও ৩৮৫নং মৌজা প্রধান হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমার সমন্বয়ে বাদী ও বিবাদী সহ স্থানিয় জনগণ উপস্থিত থেকে প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপী আলোচনায় জানা যায় বিরোধ পূর্ণ খাস জমির শহীদ মিনারের পাশের খালি জায়গাটিকে সর্বপ্রথম (১৫ শতক) ১৯৯৩ সালে আনসার ভিডিপি ক্লাব, যুব জাগরনী ক্লাব  (১৫ শতক) ২০০৭ সালে, শহীদ মিনার (১৫ শতক) ২০১৫ সালে ও সর্বশেষ মোঃ রেজাউল করিম (১৫ শতক) ২০১৮ দেখিয়ে প্রায় (৬০ শতক) জমি হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা কতৃক সুপারিশ করেন একই জায়গা নগদ অর্থের বিনিময়ে। উক্ত বৈঠকের সিদ্ধান্ত ক্রমে খালী জায়গায় আপাতত কেউ দখলে যাবেনা মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হেডম্যানের সুপারিশ কৃত জায়গা (. ৬০ শতক) থাকলে ও সমতল খালী জায়গা ততটুকু নেই। শহীদ মিনারের পাশের সমতলের পরে বিশাল আকারে এক নদীর ঝিল রয়েছে। এ ব্যাপারে হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এ দিকে ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী ঘটনার বিবরণে বলেন, স্থানীয়দের সাথে তিনিও জমি দখলে নিষেধ করেছিলেন ভগ্নিপতি রেজাউল করিমকে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জায়গায় ঘর তৈরি করতে নিষেধ করিলে তাকে মারধরের চেষ্টা চালায় ভগ্নিপতি রেজাউল করিম। এছাড়াও রেজাউলের বসত ভিটার পাশে স্থানীয় বন বিভাগের কিছু জায়গা ঘেরা বেড়া দিয়ে দখলে নেওয়ার কথা ও অভিযোগ উঠে। 

সেনা সদস্য সার্জেন্ট রেজাউল করিম এ এস এম আর্মি স্কুল অফ মিউজিক ইবিআরসি চট্টগ্রাম কর্মস্থল থেকে ৪৫ দিনের ছুটিঁতে এসে জমি দখল উৎসবে মেতে উঠার অভিযোগ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী। 

বন বিভাগের জায়গা দখলের অভিযোগে সত্যতা নিশ্চিত করেন, পাবলাখালী বন বিভাগ রেন্জ কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকার কারনে স্থানীয় বন বিভাগ কর্মী মোঃ ফজলুর রহমান  অভিযোগের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এ ব্যপারে ঘটনার ভীকটিম রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় মৌজা হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা থেকে ১ লক্ষ সত্তর হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি শহীদ মিনারের পাশের খালী জায়গাটি ক্রয় করেন। দখলে গেলে বাঁধার সম্মুখীন হন। তিনি জানতেন না জায়গাটি বিরোধ পূর্ণ হবে।

হেডম্যান জায়গার সুপারিশে বা টাকার বিনিময়ে জায়গা প্রধান করতে পারে কিনা প্রশ্নের জবাবে রেজাউল বলেন, আরো অনেকের কাছে তিনি এভাবে জমি বিক্রি করেছেন বলে  তিনি জমি ক্রয় করেন। 

উল্লেখ্য যে, বাঘাইছড়ি অফিসার্স ইনচার্জ জমিতে কারো দখল না নিতে নির্দেশ দেওয়ার পর ও স্থানীয়রা এক সমঝোতা বৈঠকে উক্ত জায়গায় খুটি দিয়ে সিমানা নির্ধারনের চেষ্টা করলে খবর পেয়ে আমতলী পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যগণ তা পন্ড করে দেয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু বলেন, খাস জমি সরকারের এখানে কেউ দখলে গেলে তার বিরুদ্ধে আইন আনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আলোকিত রাঙামাটি