রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ৪ অক্টোবর ২০২০

বান্দরবানের ‘বিস্ময় বালক’, শরীর বাঁকানোর ওস্তাদ

বান্দরবানের ‘বিস্ময় বালক’, শরীর বাঁকানোর ওস্তাদ

ছবি: উসাইসিং মারমা বাবু


ছেলেটির বয়স উর্ধ্বে হলো ১৪ বছর। এই বয়সেই তার নাম দেশজোড়া। সবাই বিস্ময় বালক বলেই চেনে তাকে। তার শরীর এতটাই নমনীয় যে, ইচ্ছেমতো সে বাঁকাতে পারে। কখনো মাটিতে দুই হাতে ভর দিয়ে পা দুটো উঠিয়ে নেয় মাথায় তো আবার কখনো লাফ দিয়ে দুই পা দুই দিয়ে সন্তর্পনে ছুঁড়ে দেন।

অসামান্য প্রতিভাবান এই কিশোরের নাম উসাইসিং মারমা বাবু। বান্দরবান সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাঘমারা বাজারপাড়ায় তার বাস। তিন ভাই-বোনের একটি দরিদ্র পরিবারে সন্তান উসাইসিং। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়নি। বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে।

 

বিস্ময় বালক

 

ভাবতে পারেন তার মতো অনেকেই এই বিরল প্রতিভায় নজির সৃষ্টি করেছেন, তার বিশেষত্ব কী? তার কোনো প্রশিক্ষণ নেই। ছিল না কোনো খেলাধুলা চর্চাও। 

একটি ইংরেজি মুভিতে শরীর বাঁকানোর অভিনয়ে আকৃষ্ট হয়েছিল কেবল। ছোট্ট বালকের মনে তখন প্রশ্ন জেগেছিল, মানুষ কি নিজের শরীর এভাবে বাঁকাতে পারে? 

 

বিরল প্রতিভা তার

 

এরপর নিজে নিজে শরীর বাঁকানোর অনুশীলন করতে থাকে বাবু মারমা। ধারাবাহিক কঠোর প্রচেষ্টায় পরবর্তী সময়ে এই বালকটি হয়ে ওঠে অসাধারণ ফ্লেক্সিবল বয়। 

প্রতিভাবান এই বালকের নাম উসাইসিং মারমা বাবু। বয়স এখনও ১৪ বছর। তার বাড়ি বান্দরবান সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাঘমারা বাজারপাড়ায়। তিন ভাই-বোনের একটি দরিদ্র পরিবারে সন্তান উসাইসিং। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়নি। এখনও বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

 

ইউটিউব দেখেই তিনি স্ট্রেচিং শিখেছেন

 

উসাইসিং মারমা বাবু জানায়, ২০১৮ সালে একদিন টিভিতে ইংরেজি মুভি দেখছিলাম। মুভিতে এক নারীর শরীর বাঁকানোর অভিনয় দেখে অবাক হয়ে যাই। এরপর আমিও শরীর বাঁকানোর অনুশীলন করা শুরু করি।

তারপর ফেসবুক এবং ইউটিউবে ‘এনামেক ইউটিব’ নামে এক কানাডিয়ান নারীকে পেয়ে যাই। আমি তার বড় ফ্যান এবং তাকে শিক্ষক হিসেবে মানি। কানাডিয়ান ওই নারীর শারীরিক কসরত অনুসরণ করে আমিও ছয় মাসের মধ্যে আয়ত্ত করে ফেলি।

 

লাফ দিয়ে পা ছুড়েছেন তিনি

 

তার শারীরিক নৈপুণ্য দেখে এখন অবাক হচ্ছেন সবাই। এরই মধ্যে তার অসাধারণ শারীরিক কসরতের প্রতিভা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বান্দরবান জেলায়। বাবু মারমাকে দেখতে ছুটে আসে দূর-দূরান্তের অনেক মানুষ। 

কোনো প্রশিক্ষণ না থাকার সত্ত্বেও স্ট্রেচিং আর্টের অংশ হিসেবে নানা রকম শারীরিক কসরতে পারদর্শীতে বার বার মুগ্ধ হন সবাই। ভবিষ্যতে একজন পেশাদার ‘ফ্লেক্সিবল বয়’ হওয়ার স্বপ্ন তার মনে। 

 

অসামান্য প্রতিভা তার

 

তিনি জানান, শারীরিক কসরতের প্রতিভা সবাইকে দেখাতে চাই। মানুষ যাতে জানতে পারে বাংলাদেশেও এরকম ফ্লেক্সিবল বয় আছে। বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। ফ্লেক্সিবলের প্রতি যাদের আগ্রহ আছে একটা ক্লাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে চাই।

বাবু মারমার বড় বোন শৈ সাই ওয়ং মারমা জানান, সম্প্রতি তার শারীরিক কসরতে ছবি এবং ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করি। এতে খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তখন থেকে সবাই বাবুর খবর নেয়া শুরু করে।

 

শরীর বাঁকানোর ওস্তাদ তিনি

 

তার বাবা সাহ্লাপ্রু মারমা বলেন, ছোট থাকতেই বাবু স্বভাবে ব্যতিক্রমী চরিত্র নিয়ে বেড়ে উঠে। পরে তার শারীরিক কলাকৌশল দেখে আমরা নিজেরাই আশ্চর্য হয়ে যাই। তাকে পরিবারের সবাই উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।

উসাইসিং মারমা বাবুর ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বান্দরবান সদর পৌর মেয়র এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম বেবী জানান, তার অসাধারণ প্রতিভা রয়েছে। সঠিক দিক নির্দেশনা এবং আরও উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক অঙ্গনেও তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়