রাঙামাটি । বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ , ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইমতিয়াজ ইমন (সদর) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১১ এপ্রিল ২০২১

রাঙামাটিতে টিসিবি’র পণ্যের গোডাউন লুট, চোর শনাক্ত

রাঙামাটিতে টিসিবি’র পণ্যের গোডাউন লুট, চোর শনাক্ত
ছবি:- আলোকিত রাঙ্গামাটি 

রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ- রাঙামাটি শহরের একমাত্র টিসিবি পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের গোডাউন চুরি হয়েছে। গত শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) মধ্য রাতে রাঙামাটি শহরের শক্তিশালী একটি চোরের দল টিসিবি পণ্যের গোডাউন লুট করে কিছু মালামাল ফেলে দিয়ে বাকী পণ্য গুলো নিয়ে সটকে পড়ে। পরে গতকাল শনিবার (১০ এপ্রিল) রাঙামাটি জেলা পুলিশের সাহসী তৎপরতা ও অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চুরির আসল রহস্য। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার চৌকস বুদ্ধিতে রাঙামাটি হাসপাতাল এলাকায় বিভিন্ন বাড়ী তল্লাশি করে বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করে। এ সময় চোর সিন্ডিকেট শনাক্ত করতে সক্ষম হয় রাঙামাটি কতোয়ালী পুলিশ।

রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন জানান, গত শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে রাঙামাটি শহরের স্টেডিয়ামের সিঁড়ির নীচে পরিত্যক্ত অবস্থায় মিলেছে টিসিবি’র খাদ্যপণ্য। জানতে পেরে পুলিশ সদস্যরা শনিবার দুপুরের দিকে ২ লিটার পরিমাণের ১৯০ বোতল সয়াবিন তেল, ৬ বস্তা ডাল, ৫ বস্তা চিনি, ২ বস্তা ছোলা ও ৪ বস্তা পেয়াঁজ উদ্ধার করে। 

তিনি জানান, পরে টিসিবি’র রাঙামাটি ডিলার ঝিল্লোল মজুমদার তার গোডাউন লুট হয়েছে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুসন্ধান শুরু করি। বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে রাঙামাটি শহরের বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরার সহযোগিতা নেয়া হয়। শহরের একটি সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় স্টেডিয়াম এলাকায় টিসিবি’র গোডাউনে রাত ২টা ২১ মিনিটের সময় কলেজ গেইটের দিক থেকে একটি খালী ট্রাক প্রবেশ করে। গোডাউনের তালা ভেঙ্গে প্রায় আধ ঘন্টা পর ট্রাকটি মাল বোঝাই করে ট্রাকটি বের হয়। পরে অপর একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পরে এবং হাসপাতাল রোডের দিকে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে আরেকটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পরে ও রাঙামাটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের সামনে ট্রাকটি এসে দাঁড়ায়। হাসপাতাল এলাকার দুলাল ড্রাইভারের ভাড়াটিয়া মোঃ আফজারের ছেলে মোঃ ইলিয়াস, মোঃ সোলায়মানের ছেলে মোঃ মিজান, মোঃ জসিম এর ছেলে মোঃ শহীদ, মঘাছড়ির মোঃ ওসমান, হাসপাতাল এলাকার মোঃ মঞ্জিল এর ছেলে রায়হান মালামাল গুলো নামিয়ে তাদের বাড়ীতে রাখার দৃশ্য ধরা পরে। পরে এলাকা তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করা হলেও বাকী মালগুলো উদ্ধার হয়নি।

তিনি আরো অনুসন্ধান চালানোর পর মোঃ ইলিয়াস এর নাম্বার উদ্ধার করে তাকে ফোন করে রাঙামাটি কোতযালী থানায় আসতে বলা হয়। সে পুলিশের তল্লাশির কথা জানতে পেরে আসামীরা সটকে পড়ে। পরবর্তীতে মোঃ ইলিয়াস এর দেয়া তথ্য মতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাঙামাটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের ভিতরে দেয়ালের পাশে ৩৯ বোতল সয়াবিন তৈল, ২ বস্তা ছোলা উদ্ধার করা হয়।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে টিসিবি লেখা বস্তায় পেয়াজ, চিনি, ডাল, ছোলা ও সয়াবিন তেল পড়ে থাকতে দেখে অনেকেই সেখান থেকে কিছু কিছু জিনিষ নিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে খেটে খাওয়া লোকজন সেখানে ভিড় জমাতে থাকে। পরে খবর পেয়ে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে টিসিবি’র পণ্যগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

রাঙামাটি টিসিবি’র ডিলার ঝিল্লোল মজুমদার জানান, শনিবার (১০ এপ্রিল) শহরে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে গোডাউনে গেলে গোডাউনে তালা দেখতে পায়নি। পরবর্তীতে গোডাউন খুলে দেখি গোডাউনে একটি মালামালও নেই। পরবর্তীতে বিষয়টি খোঁজ নিলে জানতে পারি স্টেডিয়াম এলাকায় আমার মালামালের কিছু পড়ে আছে এবং লোকজন সেখান থেকে নিয়ে যেতে থাকে। লোকজনকে বললেও তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরবর্তীতে রাঙামাটির একজন সিনিয়র সাংবাদিকের পরামর্শে কোতয়ালী পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। পুলিশ এসে মালামাল গুলো উদ্ধার করে।

পরবর্তীতে রাঙামাটি কোতয়ালী পুলিশের আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টায় রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন সিসিটিবি’র ফুটেজের তথ্য মতে মালামাল গুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং চোরদের অনুসন্ধান করতে সক্ষম হয়। পুলিশের অনুসন্ধানে চোর সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। তিনি রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন, এস আই ওসমান ও এস আই অপূর্ণ এবং রাঙামাটির কয়েকজন সাংবাদিককে ধন্যবাদ জানান। 
 

আলোকিত রাঙামাটি